You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.04 | বিনোদপুর যুদ্ধ (মহম্মদপুর, মাগুরা) - সংগ্রামের নোটবুক

বিনোদপুর যুদ্ধ (মহম্মদপুর, মাগুরা)

বিনোদপুর যুদ্ধ (মহম্মদপুর, মাগুরা) ৪ঠা অক্টোবর সংঘটিত হয়। এ-যুদ্ধে ৬ জন রাজাকার নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল আলম মুকুল শহীদ এবং হাবিলদার মোস্তফা আহত হন।
নহাটার ইয়াকুব বাহিনী ও শ্রীপুরের আকবর বাহিনী মহম্মদপুর উপজেলার পশ্চিম দিকে অবস্থিত বিনোদপুর রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী ক্যাম্পের উত্তর দিকে বদরুল আলমের নেতৃত্বে ৬৫ জন মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান নেন। পূর্বদিকে ইয়াকুব বাহিনীর প্রধান গোলাম ইয়াকুব মিয়া তাঁর বাহিনীর একটি অংশ মহম্মদপুর মুখী রাস্তায় মোতায়েন করেন। তিনি নিজে মুল বাহিনী নিয়ে ক্যাম্পের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থান নেন। মুক্তিযোদ্ধাদের আগমনের সংবাদ পেয়ে রাজাকাররাও তাদের ক্যাম্পের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং আক্রমণের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। উভয় পক্ষে প্রচণ্ড গোলাগুলি হয়। এক পর্যায়ে রাজাকাররা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর গুলি করতে থাকেন। রাজাকারদের শক্ত অবস্থানটি ছিল ক্যাম্পের ছাদের ওপর। পার্শ্ববর্তী বাঙ্কারগুলো ধ্বংস হলে তারা আত্মসমপর্ণের জন্য চিৎকার শুরু করে। আক্রমণের কয়েক মিনিটের মধ্যেই সতের বছরের কলেজ ছাত্র অসীম সাহসী কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল আলম মুকুল শহীদ হন। রাজাকারদের আতসমর্পণের আকুতির প্রাক্কালে আলোকদিয়া বাজার থেকে ৫০-৬০ জন রাজাকার পেছন দিকে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ করে। ঠিক একই সময়ে মাগুরা থেকে পাকিস্তানি সৈন্যদের একটি দল বিনোদপুরের পার্শ্ববর্তী চাউলিয়া গ্রামে এসে পৌঁছায় এবং মর্টার ও এলএমজি দ্বারা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এমতাবস্থায় কমান্ডার বদরুল আলম সবাইকে শত্রুদের ওপর চূড়ান্ত আঘাত হানতে এবং সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দেন। এরূপ ত্রিমুখী আক্রমণের মুখেও মুক্তিযোদ্ধারা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে কৌশল অবলম্বন করে ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। এ-যুদ্ধে ৬ জন রাজাকার নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধা হাবিলদার মোস্তফা ও গোলেবর রহমান শত্রুর গুলিতে আহত হন। আহতদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের ঘাঁটিতে ফিরে যান। [সৈয়দ হাদিউজ্জামান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড