বালিয়াদিঘি গণকবর (শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ)
বালিয়াদিঘি গণকবর (শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ) শিবগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, বীরশ্রেষ্ঠ- মেহেদিপুর সাব-সেক্টরের দায়িত্ব গ্রহণের পর বালিয়াদিঘির পাড়ে যে দফতর গড়ে তোলেন, তার পশ্চিম পাশেই এর অবস্থান। বর্ষাকালে যখন ঐ এলাকা জলমগ্ন ছিল, তখন যুদ্ধে শহীদ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার লাশ এই দিঘির পাড়ে উঁচু জায়গায় কবর দেয়া হয়। পরবর্তীকালে নির্মিত একটি স্মৃতিফলকে এরূপ ১২ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম আছে। তাঁরা হলেন- আব্দুল মান্নান, আব্দুস সালাম, মতিউর রহমান, আব্দুস সাত্তার, ইয়াসিন আলী, আব্দুল করিম, মো. মোজাম্মেল হক, আইনাল হক, আব্দুল মান্নান, মো. আব্দুল লতিফ, মো. নেফারুল হক এবং নূরুজ্জামান।
উল্লেখ্য যে, ২৬শে সেপ্টেম্বর ৭ নম্বর সেক্টর কমান্ডার নাজমুল হক ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩৩ নং কোরের অধিনায়ক লে. জেনারেল মোহন লাল থাপন ও অন্যান্য অফিসারের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে এক আলোচনা সভায় যোগ দিতে ভারতের শিলিগুঁড়ি যান। সেখান থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন। তাঁর লাশ এনে নবাবগঞ্জের সোনাসমজিদ প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়। ১৪ই ডিসেম্বর মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর রেহাইচরের যুদ্ধে শহীদ হলে তাঁর লাশও নাজমুল হকের পাশে দাফন করা হয়। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন বিডিআর-এর ২৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শহীদ মাহমুদের উদ্যোগে রাজশাহী সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ দুজনের কবর এবং বালিয়াদিঘি গণকবর সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়। পরের বছর স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত অর্থে নাজমুল হক ও মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের কবর বাঁধাই, স্মৃতিফলক নির্মাণ এবং বালিয়াদিঘি গণকবরের প্রাচীর, সেখানে একটি শহীদ মিনার ও স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়। ২০১২ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদ বালিয়াদিঘি গণকবরের প্রাচীর ও স্মৃতিফলক সংস্কার করে। [তামিজ উদ্দীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড