You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুক্তিযুদ্ধে বালিয়াকান্দি উপজেলা (রাজবাড়ী)

বালিয়াকান্দি উপজেলা (রাজবাড়ী) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর আহ্বানে ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ থেকে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো বালিয়াকান্দি উপজেলায়ও শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। এদিন উপজেলা শহরের অফিস-আদালত, দোকান-পাট সব বন্ধ হয়ে যায়। পার্শ্ববর্তী ছোট-বড় হাট-বাজারগুলোতেও স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত হয়। ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আকমল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ-এর নেতৃত্বে গঠিত হয় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ। এ ব্যাপারে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেন আব্দুল ওয়াজেদ চৌধুরী (আওয়ামী লীগ সভাপতি), ডা. এস এ মালেক, ডা. এ কে এম আজাদ, কাজী হেদায়েত হোসেন এমপিএ প্রমুখ নেতা। পুরাতন ডাকবাংলোয় সংগ্রাম পরিষদের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। ২৪শে মার্চ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত এমএনএ ব্যারিস্টার সৈয়দ কামরুল ইসলাম (সালাউদ্দিন) বালিয়াকান্দি আসেন। স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে তিনি পুরাতন ডাকবাংলোয় বৈঠক করেন এবং বালিয়াকান্দি পুরান বাজারে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে উপজেলার ছাত্র- যুবকরা ডামি রাইফেল ও তীরধনু নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু করে। বালিয়াকান্দি খেলার মাঠ ও কুঠির মাঠে প্রশিক্ষণ চলে। প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন ইপিআর সদস্য আব্দুল খালেক। বালিয়াকান্দি থানার সার্কেল অফিসার মমিনুল ইসলাম এবং ফিল্ড কানুনগো আব্দুল লতিফ তায়েনী স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। বালিয়াকান্দি বাজারের অদূরে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে মুক্তিবাহিনীর প্রথম ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে আনসার সদস্য শাহাদত আলী, সুধীর কুমার (হরিন্দী), মুকুল (শ্রীপুর), আলাউদ্দিন (জোকা), আবুবকর (গোয়ালপাড়া), আবুল হোসেন মিয়া (টুপিপাড়া), খোন্দকার আবু হাসান নাছির, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখের নেতৃত্বে থানার বিভিন্ন স্থানে আরো ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এসব ক্যাম্পে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন পুলিশের হাবিলদার শাহজাহান, হারেছার রশীদ ও আব্দুল মান্নান। সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন আকবর হোসেন মিয়া (অধিনায়ক আকবর বাহিনী, মাগুরা)।
উপজেলায় মুক্তযুদ্ধের সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল ওয়াজেদ চৌধুরী, ডা. এস এ মালেক, ডা. এ কে এম আসজাদ, কাজী হেদায়েত হোসেন, ডা. আব্দুল ওয়াহেদ সিকদার, সিরাজুল ইসলাম মৃধা (জামালপুর), নিতাই চন্দ্র সরকার (ইসলামপুর), আকবর আলী ফকির (গাজনা), সুরেন্দ্রনাথ সরকার, ওমর আলী (মেকচামী), ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস (জঙ্গল), ডাবলু মোল্লা (ডুমাইন), হারান চন্দ্র দাস (বহরপুর), ডা. আফজাল হোসেন (বালিয়াকান্দি), মোশাররফ হোসেন (নারুয়া), ইকরামুল হক (সাংবাদিক), অমল কৃষ্ণ বিশ্বাস (পারুলিয়া), কাতলী বিবি (বনগ্রাম), রোকেয়া বেগম (বালিয়াকান্দি), সুধীর কুমার বিশ্বাস (শিক্ষক), দেলোয়ার আলী খাঁ, প্রিয়নাথ সরকার (তারালিয়া), শাহাদত হোসেন (বাবুলতলা), সতীশ চন্দ্ৰ বিশ্বাস (জঙ্গল), আব্দুল জলিল (অলংকারপুর), শেখ শাহাবুদ্দিন (কুরশি), সৈয়দ মঞ্জুরুল হক (পদমদী), কমরউদ্দিন আহম্মদ (দক্ষিণবাড়ি বলদাখাল) প্রমুখ। বালিয়াকান্দি উপজেলায় পাকসেনারা প্রথম প্রবেশ করে ৯ই মে। রাজবাড়ীর কালু বিহারি, সৈয়দ খামার ও বাচ্চু মাস্টারের সহায়তায় রামদিয়া ও কাউননাইর গ্রামে তারা গণহত্যা চালায়। এরপর ১৭ই সেপ্টেম্বর ডা. বাহাউদ্দিন ও ডা. কাবিল উদ্দিন আহম্মদের সহায়তায় পুনর্বার এসে তারা মথুরাপুর স্কুলে ক্যাম্প স্থাপন করে।
বালিয়াকান্দি উপজেলায় শান্তি কমিটি মুজাহিদ, রাজাকার, আলবদর ও আলশামস এই পাঁচটি বাহিনী মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। ১০ই এপ্রিল এম এ গফুর মোল্লার সভাপতিত্বে শান্তি কমিটি গঠিত হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বাহিনী গঠিত হয়। এসব বাহিনীর সদস্যরা হলো- ডা. কাবিল উদ্দিন আহম্মদ (রেলওয়ে হাসপাতালের ডাক্তার), ডা. বাহাউদ্দিন (রেলওয়ে হাসপাতালের ডাক্তার), আক্কেল আলী (বালিয়াকান্দি), মোতাহার হোসেন (বালিয়াকান্দি), আবুল বাসার খাঁ (মেকচামী), আবদুর রাজ্জাক মণ্ডল (খোৰ্দ্দমেকচামী), কেসমত আলী (জাবরকোল), মো. আকবর আলী খাঁ (শ্রীরামকান্দি, রাজাকার কমান্ডার), মাজেদ আলী মোল্লা (করমচাঁদপুর), শের আলী শেখ (খালকুলা), আক্তার মল্লিক (খালিয়াপাড়া), আব্বাছ আলী (পারকুল), কাসেম মণ্ডল (করচাডাঙ্গী), আক্তারুজ্জামান (বিলধামু, থানা কমান্ডার), ইসমাইল মণ্ডল (সোনাইডাঙ্গা), তোফাজ্জেল হোসেন মোল্লা (বিলপাকুরিয়া), খোন্দকার সামসুল আলম (পদমদী), বদর উদ্দিন খাঁ (ঘোড়ামারা), এনায়েতুল্লা মণ্ডল (হোগলাডাঙ্গী), কেসমত আলী মন্ডল (তেকাটি), মফিজ উদ্দিন (করচাডাঙ্গী), ইউনুস আলী
জোয়ারদার (বনগ্রাম), শাহাদাত হোসেন (বিলধামু), হাতেম আলী মোল্লা (বাকসাডাঙ্গী), কাজী নিয়ামত আলী (কোনাগ্রাম), গোলাম মকদুম বিশ্বাস (মরাবিলা), হাজী কোমর উদ্দিন (ঘিকমলা), ডা. ইয়াকুব আলী (পাটকিয়াবাড়ী), জয়েন উদ্দিন (খালিয়া), মোজাহার আলী (বালিয়াকান্দি), আক্তারুল ইসলাম (পাইককান্দি), হাজী সবদাল হোসেন (বালিয়াকান্দি), শেখ নজির আহম্মদ (তেতুলিয়া), আবদুল আজিজ শেখ (নতুনচর), আব্দুল গফুর (চরগুয়াদহ), সুলতান শেখ (বহরপুর), হাতেম আলী সরদার (খালকুলা), মাস্টার কেরামত আলী (সোনাইডাঙ্গা), আব্দুল লতিফ মিয়া (ছাউনীপাড়া), মঞ্জুর কালাম বাবু (সাঙ্গুরা), হামেদ আলী বিশ্বাস (নটাপাড়া), হাবিবুর রহমান মোল্লা (বাওনাড়া), ছবেদ আলী মোল্লা (গোবিন্দপুর), নিজাম উদ্দিন মণ্ডল (বারমল্লিকা), হোসেন আলী সেখ (নওপাড়া), আছির উদ্দিন মন্ডল (বারমল্লিকা), গফুর আলী মোল্লা (সারুটিয়া), সাদেক আলী মোল্লা (রাজধরপুর), মো. ফজলুর রহমান (দিয়ারা), ঘুরন শেখ (কাউননাইর), চাঁদ খাঁ (রামদিয়া), রোকন উদ্দিন (রামদিয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার), হাতেম উদ্দিন পিএলএ (নিশ্চিন্তপুর), আক্তার হোসেন মোল্লা (বিলধামু), আকাই সরদার (হিজলী), আব্দুল হামিদ (ইলিশকোল), তমিজ উদ্দিন (অলংকারপুর), তাছের আলী খাঁ (গাড়াকোলা) প্রমুখ। মুক্তিযুদ্ধের সময় সারা বাংলাদেশে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা অসংখ্য গণহত্যা সংঘটিত হয়। তারই একটি কাউননাইর গণহত্যা। ২৯শে এপ্রিল এখানে ৩৬ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয়। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে এবং ৯ই মে সংঘটিত হয় যথাক্রমে রতনদিয়া গণহত্যা ও রামদিয়া গণহত্যা। রতনদিয়া গণহত্যায় ১০ জন গ্রামবাসী শহীদ হন। ৯ই মে ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি সার্বজনীন উৎসব। এ উপলক্ষে পার্শ্ববর্তী গ্রামসমূহ থেকে হাজার-হাজার লোকের সমাগম ঘটে রামদিয়ায়। এ-সময় স্থানীয় রাজাকার রোকন উদ্দিনের পরামর্শে পাকসেনারা উৎসবস্থলে হামলা করে। আগুন দিয়ে এবং গুলি করে তারা শতাধিক মানুষকে হত্যা করে। এছাড়া নওপাড়া, সোনাপুর, “বহরপুর, বেড়াডাঙ্গা, পদমদী প্রভৃতি গ্রামে বহু লোককে হত্যা করা হয়। এ উপজেলায় অনেক নারীও নির্যাতনের শিকার হন। আলোকদিয়া, নলিয়া, ডাঙ্গাহাতিমোহন, সোনাপুর প্রভৃতি গ্রামের বেশ কয়েকজন নারীকে রামদিয়া রাজাকার ক্যাম্পে ধরে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়।
বলিয়াকান্দি উপজেলার রামদিয়া গ্রামটি হিন্দুপ্রধান। এ গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে হানা দিয়ে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা প্রায় অর্ধশত মানুষকে হত্যা করে এবং বাড়িগুলোর উঠানে তাদের কবর দেয়। এটি রামদিয়া গণকবর নামে পরিচিত। নারায়ণপুর সার্বজনীন পূজা মন্দিরের পাশে ১১ জন হিন্দুকে হত্যা করে একই গর্তে কবর দেয়া হয়, যা নারায়ণপুর গণকবর নামে পরিচিত। এছাড়া জামালপুরে পাঁচজনের গণকবর রয়েছে, যা জামালপুর গণকবর নামে পরিচিত।
২১শে মে বহরপুর এলাকায় রাজবাড়ীর অবাঙালি রিফিউজি ও বিহারিদের সহযোগিতায় পাকসেনারা লুটপাট চালায়। বহরপুর বাজারের বিশিষ্ট স্বর্ণব্যবসায়ী কালীপদ কর্মকারকে হত্যা করে। পরের দিন ২২শে মে সমাধিনগর বাজারে প্রবেশ করে লুটপাট চালায় এবং আর্যসঙ্গ বিদ্যামন্দির ও দেবমন্দির ধ্বংস করে। এছাড়া আমলা, চাপড়ী, শিধলাজুরী, সাধুখালি, সমাধিনগর প্রভৃতি গ্রামের বহু ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়।
উপজেলায় আকবর বাহিনী নামে একটি স্থানীয় মুক্তিবাহিনী ছিল, যার প্রধান ছিলেন আকবর হোসেন। তিনি আনসার, ইপিআর ও ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কতিপয় সদস্য এবং স্থানীয় যুবকদের নিয়ে এ বাহিনী গড়ে তোলেন। মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনী স্থানীয়ভাবে বিশেষ অবদান রাখে। উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযান ও অপারেশন পরিচালনা করেন। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রামদিয়া অভিযান মাটিপাড়া ব্রিজ অপারেশন, আড়কান্দি ব্রিজ অপারেশন, বালিয়াকান্দি থানা অপারেশন ও কালিকাপুর রেলব্রিজ অপারেশন। ৫ই জুন রামদিয়ার ত্রাস বিহারি চাঁদ খাঁর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন শ্রীপুর বাহিনীর প্রধান আকবর হোসেন। তিনি মাটিপাড়া ব্রিজ অপারেশনেও নেতৃত্ব দেন। ২০শে জুলাই আড়কান্দি ব্রিজ অপারেশন পরিচালনা করেন কমান্ডার শেখ নজরুল ইসলাম। ২২শে সেপ্টেম্বর বালিয়াকান্দি থানা অপারেশন পরিচালিত হয় সুবেদার মো. জালাল উদ্দিন ঘিনের নেতৃত্বে। এদিন উভয় পক্ষে তুমুল যুদ্ধ হয়। অবশেষে ভোর ৫:৩০টার দিকে থানার পুলিশ ও রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করলে বালিয়াকান্দি থানা শত্রুমুক্ত হয়। ২৮শে অক্টোবর কালিকাপুর রেলব্রিজ অপারেশন পরিচালিত হয় মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে। এছাড়া আরো কয়েকটি ছোট-খাট যুদ্ধ হয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ (পিতা মুন্সী মেহেদী হাসান, কামারখালি; ইপিআর সদস্য, ২০শে এপ্রিল চট্টগ্রামের বুড়িঘাট যুদ্ধে শহীদ), আঙ্গুরুল ইসলাম (পিতা আমীরুল ইসলাম বজলু মিয়া, সোলাকুড়া; ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ১৯শে আগস্ট যশোর জেলার খাজুরিয়া যুদ্ধে শহীদ), মো. রফিকুল ইসলাম (পিতা হাবিবুল ইসলাম, সোলাকুড়া; ১৯শে আগস্ট খাজুরিয়া যুদ্ধে শহীদ), মোহাম্মদ আবুল হোসেন মোল্লা (পিতা সামছুর রহমান মোল্লা, আলোকদিয়া; ১৯শে আগস্ট খাজুরিয়া যুদ্ধে শহীদ), আব্দুল মমিন মোল্লা (পিতা মোবারক আলী, গোহাইলবাড়ি; ৬ই সেপ্টেম্বর কুস্টিয়ার দৌলতপুর থানার গোয়াল গ্রামের যুদ্ধে আহত হয়ে ১২ই সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন), জোনাব আলী শেখ (পিতা ছাকেন শেখ, বেতাঙ্গা; সেপ্টেম্বরে বেতেঙ্গা রেলব্রিজ অপারেশনে শহীদ), জমারত শেখ (পিতা কহিল উদ্দিন, সাঙ্গুরা; নভেম্বর মাসে বেলেস্বরে রাজাকারদের সঙ্গে যুদ্ধে শহীদ), সিদ্দিকুর রহমান ভূঁইয়া (পিতা আহম্মদ আলী ভূঁইয়া, কামারদহ; ১১ই ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার হাসপাতাল রোডে সশস্ত্র অবস্থায় পাকসেনা ও রাজাকারদের হাতে ধরা পড়েন, আর ফিরে আসেননি), মো. হাফিজুর রহমান (পিতা মোহাম্মদ জুলমত আলী মোল্লা, নিশ্চিন্তপুর; ১২ই ডিসেম্বর কামারখালি ঘাটের অদূরে ডুমাইন গ্রামের পূর্ব বটপাড়া যুদ্ধে শহীদ), খলিলুর রহমান (পিতা ইয়ার উদ্দিন, নিশ্চিন্তপুর; ১২ই ডিসেম্বর কামারখালির আড়পাড়া যুদ্ধে শহীদ), আজমল হোসেন (পিতা এনায়েতউল্লা, সাঙ্গুরা; পুলিশ সদস্য, যশোর পুলিশ লাইন যুদ্ধে শহীদ), আব্দুল মোতালেব (পিতা মোবারেক হোসেন, পাইককান্দি; গোপালগঞ্জের মুকসেদপুর থানাযুদ্ধে শহীদ), রোকন উদ্দিন (পিতা- আয়েন উদ্দিন সরদার, স্বর্পবেতেঙ্গা), রফিকউদ্দীন আহমেদ বুলবুল (পিতা অধ্যক্ষ কেতাবউদ্দিন আহমেদ, নিশ্চিন্তপুর), এম সামছুল আলম (পিতা আজগর আলী মোল্লা, খালকুলা; বালিয়াকান্দি মুজিব বাহিনীর কমান্ডার, রাজবাড়ীতে এক অধিবেশনে যোগ দিয়ে ফেরার পথে মাটিপাড়া থেকে নিখোঁজ) এবং সিরাজুল ইসলাম (পিতা হারেজ উদ্দিন, পাইককান্দি; ১৯৭২ সালের ৬ই জানুয়ারি দিনাজপুর বালুবাড়ীর ট্রানজিট ক্যাম্প মহারাজা গিরিজানাথ হাইস্কুলে মাইন বিস্ফোরণে শহীদ)।
বালিয়াকান্দি উপজেলার রামদিয়া গ্রামে শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে ১৯৭৪ সালে নওপাড়া খালের দক্ষিণে শালবরাট নামক স্থানে এলাকার জনগণের উদ্যোগে শহীদদের সমাধি পাকা করা হয়। কামারখালিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ কলেজ’। এছাড়া বালিয়াকান্দিতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি কমপ্লেক্স, খালকুলা বাওরের পূর্বপাশে ‘শহীদনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়’, ‘শহীদনগর মাদ্রাসা’ ও ‘শহীদনগর মসজিদ’ নির্মিত হয়েছে। [এম ইকরামুল হক]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!