You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুক্তিযুদ্ধে বারহাট্টা উপজেলা (নেত্রকোনা)

বারহাট্টা উপজেলা (নেত্রকোনা) ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বারহাট্টা থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এডভোকেট আবদুল মোমিন এমএনএ এবং আব্বাস আলী খান এমপিএ নির্বাচিত হন। সারাদেশে আওয়ামী লীগ এককভাবে বিজয়ী হলেও পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিতে থাকে। এর ফলে জনমনে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- তাঁর সাতই মার্চের ভাষণ-এ মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ববর্তী প্রস্তুতি ও প্রতিরোধের জন্য জাতিকে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। ৭ই মার্চের পর বারহাট্টায় শাহ্ মো. আবদুল কাদেরকে সভাপতি করে সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়। ২৩শে মার্চ পাকিস্তান দিবসে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের ঈদগাহ মাঠে ছাত্রলীগ সভাপতি মোতালেব খান পাঠান পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলেন। পতাকাটি উপস্থিত ছাত্র-জনতার সামনে স্থানীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমদ নূরী পুড়িয়ে দেন। এরপর বাংলাদেশের মানচিত্র অঙ্কিত লাল- সবুজ পতাকা উত্তোলন করেন শাহ্ মো. আবদুল কাদের। এটি বারহাট্টায় প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের ঘটনা। এ ঘটনা উপস্থিত জনতার মধ্যে এক নবচেতনা জাগিয়ে তোলে। ২৬শে মার্চের পর স্থানীয় নেতারা পাকবাহিনী কর্তৃক নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যার খবর তুলে ধরে ছাত্র-যুবক ও সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
উপজেলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক তালুকদার, আওয়ামী লীগ কর্মী ইনসান উদ্দিন, আসাবউদ্দিন খান, আলী ওসমান, দারোগা আলী, ছাত্রলীগের সভাপতি মোতালেব খান পাঠান, সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমদ নূরী, ছাত্রলীগ কর্মী জালালউদ্দিন তালুকদার, আনোয়ার আহমেদ খান, আবুল হাসিম, এরশাদ উদ্দিন, গোলাম রসুল তালুকদার, নুরনবী তালুকদার, কাজী আবদুল ওয়াহেদ ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি আবদুল হেকিম খান ও সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদ আলী, ছাত্র ইউনিয়নর কর্মী আলকাসউদ্দিন আহমেদ, আবদুর রহিম, মতিউর রহমান, রহমত আলী, মোস্তফা ওয়াদুদ, প্রানেশ পাল মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন। এছাড়া সংগ্রাম কমিটির সভাপতি শাহ্ মো. আবদুল কাদের, প্রিন্সিপাল নূরুজ্জামান চিশতী, সাহিত্যিক নূরুল হোসেন খন্দকার, কাজী আবদুল ওয়াহেদ, আলী ওসমান, কোম্পানি কমান্ডার শামসুর রহমান আকন্দ, ইসলাম উদ্দিন কালা মিয়া, কবি নির্মলেন্দু গুণ, আজিজুল ইসলাম খান, মনির উদ্দিন, মাহবুব মোর্শেদ কাঞ্চন প্রমুখ মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
২৩শে মার্চের পর বারহাট্টা থানার পুলিশ কনস্টেবল আশরাফ স্থানীয় যুবকদের প্রশিক্ষণ দিতে এগিয়ে আসেন। তিনি সংগ্রাম কমিটির নেতা-কর্মীদের থানার পাশে কাঠের ডামি রাইফেল ও পুরনো কয়েকটি বন্দুক নিয়ে গেরিলা প্রশিক্ষণ দেন। একই সময়ে ছাত্র-সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ নেত্রকোনা সদরে এক দিনের একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করেন। এছাড়া আনসার বাহিনীর সদস্য আলী ওসমান কয়েকদিন ধরে ছাত্র-যুবকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছাত্র ও যুব নেতারা সাধারণ মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বিশেষভাবে উৎসাহিত করেন।
সংগ্রাম কমিটির সভাপতি শাহ্ মো. আবদুল কাদের বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন। তিনি জানতেন কী করে বোমা তৈরি করতে হয়। তিনি এবং তাঁর সঙ্গীরা সি কে পি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানাগারের তালা ভেঙ্গে রাসায়নিক দ্রব্যাদি সংগ্রহ করে বোমা তৈরি করেন। তাঁরা বোমায় স্প্লিন্টার হিসেবে ইটের টুকরো ব্যবহার করেন। ২৯শে মার্চ থেকে কয়েকটি ব্যাচে বারহাট্টার ছাত্র ও যুব নেতারা ভারতে যান। তাঁদের অনেকে ভারতের তুরা, দেরাদুন ইত্যাদি ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নেন।
নেত্রকোনা জেলা সদরের সঙ্গে মোহনগঞ্জ উপজেলায় অবস্থানরত পাকবাহিনীর সরাসরি যোগাযোগ থাকায় বারহাট্টায় তারা কোনো স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেনি। তবে বারহাট্টার পুরাতন ডাকবাংলোকে তারা অস্থায়ী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করত। পাকিস্তানি সেনারা থানাতেও মাঝে- মাঝে অবস্থান করত।
উপজেলার মুসলিম লীগ নেতারা প্রধানত রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠন করে। তারা এসব বাহিনীর মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের ওপর নানারকম অত্যাচার ও নির্যাতন চালাত। এ ক্ষেত্রে মুসলিম লীগের সক্রিয় নেতাদের মধ্যে ছিল আবদুল মালেক, আফতাব উদ্দিন মুন্সী, সফর উদ্দিন মিয়া প্রমুখ। এরা পাকিস্তানি বাহিনীকে সব ধরনের সহযোগিতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অপারেশন চালাতে সাহায্য করত। এদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল মুসলিম লীগ সভাপতি মির্জা হোসেন চৌধুরী এবং পরবর্তী সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন ও সেক্রেটারি মওলানা আবদুল খালেক, আব্বাস আলী মিয়া, হাজী আফতাব উদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন, মতি মিয়া, মুখশেদ মিয়া, মজিদ মিয়া, আ. আজিজ খান, আবদুল মালেক তালুকদার, আবদুল কুদ্দুস ঠাকুর, লাচ্চু মিয়া ঠাকুর,শহিদউদ্দিন খান, ভুট্টো খান, জাহেদ ইমাম, আবুল হাসিম-সহ শীর্ষ নেতারা। এছাড়া মেন্দা মিয়া, তোতা মিয়া, বাদশা মিয়া, তাহের উদ্দিন, নূর উদ্দিন, নূর ইসলাম, ফুটকা, চৌধুরী দারোগা, মোসলেম, আবদুর রাজ্জাক, দুদু মিয়া, আব্বাস আলী খান, আবদুল মালেক, তালুকদার, দুলাল, মুসলিম লীগের সক্রিয় নেতা আবদুল মালেক, আফতাবউদ্দিন মুন্সী, সফরউদ্দিন মিয়া প্রমুখ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সংগঠক হিসেবে কাজ করে।
বারহাট্টা শান্তি কমিটি-র প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ২৮শে এপ্রিল। এ সভায় ৮ জন সদস্য উপস্থিত ছিল। সভায় সভাপতিত্ব করে মৌ. শামছুদ্দিন ভূঞা। অন্য যে ৭ জন উপস্থিত ছিল, তারা হলো- মৌ. আ. খালেক, মিসবাহউদ্দিন মজুমদার, মফিজুল ইসলাম, মতিয়র রহমান মোল্লা, রহমতুল্লাহ, আ. মজিদ ও মির্জ্জা হোসেন চৌধুরী। এ সভায় মৌলবী আ. খালেককে আহ্বায়ক করে থানা শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে ছিল মৌ. শামছুদ্দিন ভূঞা, আব্বাস আলী, সিদ্দা হোসেন চৌধুরী ও রহমতুল্লাহ। শান্তি কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয় ১লা মে। এ সভায় আরো ২০ জনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এভাবে বারহাট্টা থানা শান্তি কমিটির মোট সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫-এ। এসব সদস্য হলো- মৌ. আ. খালেক (বারহাট্টা), শামসুদ্দিন ভূঞা (গোপালপুর), আব্বাস আলী (বারহাট্টা), মির্জ্জা হোসেন চৌধুরী (বারহাট্টা), রহমতুল্লাহ (গোপালপুর), আ. জাহেদ (বিক্রমশ্রী), আ. হাকিম (বামনগাঁও), আ. ওয়াহেদ (হরিতলা), মোফাজ্জল হোসেন (বড়ী), আপ্তাবউদ্দিন হাজী (গোপালপুর), আ. ওয়ায়েদ ফকির (ছলিডুরা), আ. মালেক (বারহাট্টা), মিসবাহউদ্দিন মজুমদার (বারহাট্টা), আলী আহমদ (গোপালপুর), আজিজুর রহমান (কামালপুর), মফিজুল ইসলাম (বারহাট্টা), আব্দুর রাজ্জাক (বারহাট্টা), আবদুর রহমান ভূঞা (বারহাট্টা), আ. ওয়াব (বৃশলিকা), মিসবাহউদ্দিন (বৃশলিকা), আ. মজিদ (বারহাট্টা), আ. আজিজ মিয়া (গোপালপুর বাজার), আ. ওয়ারেছ (গোসিরিয়া), খোরশেদ আলী (বিক্রমশ্রী) ও সাহিদুর রহমান খান (কামালপুর)।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে শাহ্ মো. আ. কাদেরের নেতৃত্বে তরুণ মুক্তিযোদ্ধারা বোমা তৈরির সময় একটি বোমা প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এর ফলে আগুন ধরে যায় ও বড় গর্ত হয়। এ ঘটনায় বারহাট্টার মুসলিম লীগ নেতারা সাংঘাতিক ক্ষিপ্ত হয়। তাদের নির্দেশে গভীর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে পুলিশ হানা দেয়। মুক্তিযোদ্ধারা পূর্বেই আত্মগোপন করায় কেউ ধরা পড়েননি। তবে পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মীয়- স্বজন ও স্বাধীনতার পক্ষের মানুষদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে।
রাজাকার, আলবদর ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন করত। অনেক সাধারণ মানুষও তাদের দ্বারা অত্যাচারিত এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। তারা উপজেলার লাউফা গ্রামে একই দিনে ৭ জন মানুষকে হত্যা করে। -লাউফা গণহত্যার পর তারা গ্রামের ৮-৯ জন নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। আসমা ইউনিয়নের আসমা গ্রামে একই পরিবারের আলী খান, আবদুল ওয়াজেদ খান, রুস্তম খান এবং কাদির খান নামে ৪ জনকে হত্যা করে।
বারহাট্টা সদরের ডা. সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে পাকিস্তানি বাহিনী ১২টি ঘর পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় বারহাট্টার হিন্দু-প্রধান গ্রামগুলো পাকবাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। অনেক হিন্দু-অধ্যুষিত গ্রামে তারা অগ্নিসংযোগ করে।
২১শে সেপ্টেম্বর একজন পাকিস্তানি সৈন্য আলোকদিয়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আটক হলে ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন পাকহানাদার বাহিনী আলোকদিয়া গ্রামে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে সমস্ত গ্রাম পুড়ে যায়।
পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বাধীনতার পক্ষের মানুষদের ধরে এনে বারহাট্টা থানার পাশের খালের তীরে গুলি করে হত্যা করে পানিতে ভাসিয়ে দিত। নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ রেলপথের ঠাকুরকোনা রেল স্টেশনের পাশে রেলসেতুতে বারহাট্টা থেকে ধরে এনে অনেককে নির্যাতনের পর তারা হত্যা করে।
বারহাট্টা উপজেলা নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ উপজেলার ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহৃত হতো। পাকবাহিনী ও রাজাকাররা স্থানীয় ডাকবাংলো ও থানা ব্যারাককে নির্যাতনকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করত।
বারহাট্টা থানার পাশের খাল একটি বধ্যভূমি ছিল। এখানে অনেককে গুলি করে হত্যা করে পানিতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। ঠাকুরকোনা রেল স্টেশনের পাশে রেলসেতুতেও অনেককে হত্যা করা হয়।
বারহাট্টায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের কয়েকটি বড় যুদ্ধ হয়। বারহাট্টা ও নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী ঠাকুরকোনায় সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পাকবাহিনীর সঙ্গে শামসুর রহমানের নেতৃত্বে ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধ চলে। এ-যুদ্ধে চাঁন মিয়া নামে একজন রাজাকার ও ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ রেলপথের শতরশ্রী কালভার্টটি মাইন দিয়ে ধ্বংস করে রেল যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেন।
একজন পাকিস্তানি সেনা কয়েকজন রাজাকারসহ ২১শে সেপ্টেম্বর আলোকদিয়া গ্রামে প্রবেশ করলে গ্রামবাসীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা তাকে আটক করেন। পরে তাকে মহেষখলা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
নভেম্বর মাসে পাকসেনারা আসমা গ্রাম মর্টার হামলা- চালায়। এতে একজন নারীসহ ৫ জন গ্রামবাসী প্রাণ হারায়। মুক্তিযোদ্ধারা বারহাট্টা থানার জমাদার তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে থানা আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। এ আক্রমণের মূল উদ্যোগ নেন আবদুল মোতালিব খান পাঠান ও শাহ্ মো. আবদুল কাদের। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারদের পোশাক পরিধান করে থানায় যান। রাজাকারদের ডিউটি পরিবর্তনের সময় অর্থাৎ রাত ১২টা ১ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধারা থানার প্রথম বাংকারে প্রবেশ করেন। রাজাকাররা জানত এ সময় তাদের অন্য একটি দল ডিউটি করতে আসবে। তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারদের অস্ত্র নিজেদের দখলে নিয়ে নেন। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর তাঁরা কয়েকজন রাজাকারকে ধরে ফেলেন। ধৃত রাজাকারদের দ্বারা বাকি রাজাকার ও পুলিশদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। ফলে অন্যান্য রাজাকার ও পুলিশ আত্মসমর্পণ করে। এভাবে বারহাট্টা থানা মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। থানা থেকে তাঁরা ১২৫টি অস্ত্র হস্তগত করেন। থানার ওসি আব্দুর রউফ ও রাজাকার মোকশেদ আলী এ অপারেশনের সময় নিহত হয়। থানার অন্যত্র থাকা রাজাকাররা বারহাট্টা থেকে দরুণসাহতা হয়ে নেত্রকোনায় পালিয়ে গেলে ৮ই ডিসেম্বর বারহাট্টা উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
বারহাট্টার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- সিপাহি সদরুজ্জামান (পিতা আবুল হোসেন, ব্রাহ্মণগাঁও), মোকশেদ আলী (পিতা ওয়াহেদ আলী, চন্দ্রপুর) ও ওসমান গণী (পিতা মনফর আলী, বারহাট্টা)। [মোহাম্মদ আলী জুয়েল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!