You dont have javascript enabled! Please enable it!

বামুন্দি ক্যাম্প যুদ্ধ (গাংনী, মেহেরপুর)

বামুন্দি ক্যাম্প যুদ্ধ (গাংনী, মেহেরপুর) সংঘটিত হয় ৬ই ডিসেম্বর। এ-যুদ্ধে কয়েকজন পাকসেনা হতাহত হয়। একই দিন বাংলাদেশের প্রতি ভারতের স্বীকৃতি ঘোষণা মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল শতগুণে বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে পাকসেনাদের মনোবল মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। যুদ্ধের পর বামুন্দি ক্যাম্পের পাকসেনারা পালিয়ে গেলে এদিনই বামুন্দি হানাদারমুক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বামুন্দি ক্যাম্পের পাকিস্তানি সৈন্যরা প্রায় প্রতিদিন বামুন্দি ক্যাম্প থেকে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে হামলা চালিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তোলে। সীমান্তের ওপারের একশন ক্যাম্পসমূহ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা মাঝে-মধ্যে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে এসে পাকসেনাদের আক্রমণ মোকাবিলা করার চেষ্টা করেন। অনেক সময় সফলকাম হন, আবার কখনো আত্মরক্ষার্থে পিছু হটেন। বামুন্দি ক্যাম্পের পাকসেনাদের নির্যাতন-নিপীড়ন-অত্যাচার যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছে, তখন ভারতের শিকারপুর একশন ক্যাম্পে বসে এতদঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধারা নিয়মিত বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে ৬ই ডিসেম্বর বামুন্দি ক্যাম্প আক্রমণের পরিকল্পনা নিয়ে দেশে প্রবেশ করেন। নিয়মিত বাহিনীর সদস্য নায়েব সুবেদার আবুল কাশেমের নেতৃত্বে মামুনুর রশীদ, মোফাজ্জেল হোসেন এবং আব্দুল বাকির নেতৃত্বে প্রায় ৭০-৮০ জন মুক্তিযোদ্ধা এ-যুদ্ধে অংশ নেন। বামুন্দি ক্যাম্পের যুদ্ধ সংঘটিত হয় বামুন্দি নিশিপুর মাঠের উত্তর প্রান্তে। মুক্তিযোদ্ধারা কাজীপুর-সাহেবনগর-হাড়াভাঙ্গা হয়ে এগিয়ে এসে বামুন্দি ক্যাম্পে পাকসেনাদের ওপরে আক্রমণ চালান এবং দূর থেকে ৩ ইঞ্চি মর্টার থেকে শেল নিক্ষেপ করেন। এতে কয়েকজন পাকসেনা হতাহত হয়। এদিনই সন্ধ্যার পর পাকসেনারা বামুন্দি ক্যাম্প থেকে গোপনে কুষ্টিয়ার পথে পালিয়ে যায়। এর ফলে বামুন্দি হানাদারমুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ের এ-যুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ছিল খুবই গৌরবের। [রফিকুর রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!