বায়াহাট মসজিদ গণহত্যা (পবা, রাজশাহী)
বায়াহাট মসজিদ গণহত্যা (পবা, রাজশাহী) সংঘটিত হয় মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে। এতে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
ঘটনার দিন যখন মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন দুপুর ২টার দিকে রাজাকার বারী মুন্সী ও তার চার সন্তান আব্দুল আলীম, আব্দুল মান্নান, ডা. আব্দুল রোপ ও আব্দুল হক পাকিস্তানি বাহিনীকে খবর দেয়। প্রায় সঙ্গে-সঙ্গে তারা এসে সম্পূর্ণ এলাকা ঘেরাও করে এবং মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আজিজ (নামুপাড়া), জালালউদ্দিন ও আলাউদ্দিন (পিতা আবুল বাসার, কচুপাড়া, বনগ্রাম), মাওলা বক্স (ভোলা) প্রমুখকে ধরে বায়াহাট মসজিদে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁদের হাত-পা বেঁধে অকথ্য নির্যাতন চালানোর পর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে-খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনার পর রাজাকারদের আধিপত্য বেড়ে যায়। তারা লুটতরাজ ও হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে। এমতাবস্থায় বায়ার আজিজ গাইন, জেবার উদ্দিন, আবুল হোসেন (পিতা জেবার উদ্দিন), ইছাহাক সরকার, ঝড়ু (গ্রীবইস্থল), ইয়াদুব আলী (পালপাড়া), আতাউর মাস্টার (নামুপাড়া), অলিমুদ্দিন (পিতা আলেম উদ্দিন, ভূগরুইল), মাল বক্স (পিতা ইদ্রিস আলী), মহির উদ্দিন (পিতা তমেজউদ্দিন), আবুল কাসেম (পিতা দেলজাম, ভূগরুইল) প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা রাজাকারদের আস্তানায় হানা দেন। ফলে দুপক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এ-যুদ্ধে রাজাকার আব্দুল রোপ ও আজিজ গাইন নিহত হয়। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বায়া মসজিদ এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকাররা উপর্যুপরি হামলা চালায়। ফলে এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়ে। দেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পর তারা এলাকায় ফিরে আসে। [আখতারুজ্জাহান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড