You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাবুনগর মাদ্রাসা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম)

বাবুনগর মাদ্রাসা রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন (ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় ১৪ই আগস্ট। এতে বেশ কয়েকজন আলবদর ও আলশামস সদস্য নিহত হয়।
বাবুনগর মাদ্রাসা ছিল আলবদরআলশামসদের ঘাঁটি। আলবদর কমান্ডার মওলানা হারুনের নেতৃত্বে এ মাদ্রাসার প্রায় দুহাজার ছাত্র আলবদর ও আলশামস বাহিনীতে যোগ দিয়ে ট্রেনিং নিচ্ছিল। তাদের সহযোগিতা দিচ্ছিল এক মাইল পশ্চিমে নাজিরহাট কলেজে স্থাপিত পাকবাহিনীর ক্যাম্প। মাদ্রাসার এই আলবদরআলসামস বাহিনীর অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। এ খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা এই ঘাঁটি আক্রমণ করার প্রস্তুতি নেন। ১৪ই আগস্ট রাতে অপারেশনের পরিকল্পনা নেয়া হয়। অপারেশনে অংশগ্রহণের কথা ছিল আহমদ ছফা গ্রুপ, কেদার দাশ গ্রুপ (রাউজান) ও হারুন গ্রুপ (হাটহাজারী)- এর সদস্যদের। রাত ১২টার মধ্যে এই তিন গ্রুপের সদস্যদের রোসাংগিরি স্কুলে পৌছানোর কথা। আহমদ ছফা ও গৌরীশঙ্কর চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁদের গ্রুপের মাত্র ১২ জন যোদ্ধা যথাসময়ে পৌঁছলেও, অন্য দুই গ্রুপ পৌঁছতে পারেনি। কারণ সেদিন প্রবল ঝড়-বাদলে এলাকার রাস্তাঘাট সব ডুবে গিয়েছিল। অবশেষে এই ১২ জন যোদ্ধাই অপারেশন পরিচালনা করার সিদ্দান্ত নেন। তাঁরা মাদ্রাসার পেছন দিক থেকে অপারেশন শুরু করেন। গুলির শব্দ শুনে নিকটস্থ পাকিস্তানি ক্যাম্প থেকেও ব্যাপক গুলিবর্ষণ শুরু হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে মাদ্রাসা ভবনের সামনের দিকে চলে যান। তখন তাঁরা দেখতে পান শতশত মাদ্রাসা ছাত্র (আলবদরআলশামস সদস্য) মাদ্রাসার সামনের দিঘিতে দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে সাঁতরাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা দিঘি লক্ষ করে অবিরাম গুলি ছুঁড়তে থাকেন। ভোর নাগাদ মুক্তিযোদ্ধারা মাদ্রাসা ত্যাগ করে অক্ষত অবস্থায় প্রায় ৬ মাইল দূরে জাফতনগরের শহর ছাত্রলীগ নেতা আইয়ুব বাঙালির বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। এ-যুদ্ধে বেশ কয়েকজন আলবদরআলশামস সদস্য নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা মাদ্রাসা ত্যাগ করার পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী মাদ্রাসাটি ঘিরে ফেলে এবং নিহতদের লাশ নিয়ে ক্যাম্পের দিকে চলে যায়। [জামাল উদ্দিন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!