বাবুরহাট যুদ্ধ (চাঁদপুর সদর)
বাবুরহাট যুদ্ধ (চাঁদপুর সদর) ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে সংঘটিত হয়। এ-যুদ্ধে কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও পাকিস্তানি বাহিনীর মনোবলে চিড় ধরে।
বাবুরহাটের আশেপাশে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকার রা ডিসেম্বর মাসের গোড়ার দিকে বড় রাস্তার পাশে পরিখা খনন করে পজিশন নেয়। সংগ্রাম কমিটির লোক মারফত এ খবর শুনে এফএফ বাহিনীর কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা একটি এলএমজি, ৪টি স্টেনগান ও কিছু হ্যান্ড গ্রেনেড নিয়ে তাদের আক্রমণ করতে বাবুরহাটে আসেন। মুক্তিযোদ্ধারা নিকটবর্তী একটি পুকুরপাড়ে বসে যখন আক্রমণের পরিকল্পনা করছিলেন, তখনই এলএমজি-ম্যান খোরশেদ নিকট দূরত্বে ১০-১২ জন পাকিস্তানি সৈন্যকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। তিনি সহযোদ্ধাদের কোনো কিছু না বলেই পাকিস্তানি সৈন্যদের ওপর আক্রমণ করেন। পাকিস্তানি বাহিনীও পাল্টা আক্রমণ চালায়। গোলাগুলির শব্দ শুনে বিষ্ণুপুরে অবস্থিত এফএফ ক্যাম্প থেকে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে দৌড়ে এসে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ-সময় আরো ২ ট্রাক পাকিস্তানি সৈন্য এসে এ- যুদ্ধে যোগ দেয়। তারা আশপাশের সব বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং ব্যাপক গোলা নিক্ষেপ করে। এ পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা ধীরে-ধীরে নিরাপদে পশ্চাদপসরণ করতে সক্ষম হন। বাবুরহাট যুদ্ধে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা মান্নান, মুজিবুর, রতন, কামরুল, হাসান, মনজু প্রমুখ। [মনিরুজ্জামান শাহীন ও মোহেববুল্লাহ খান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড