You dont have javascript enabled! Please enable it!

বান্দাইখাড়া গণহত্যা (আত্রাই, নওগাঁ)

বান্দাইখাড়া গণহত্যা (আত্রাই, নওগাঁ) সংঘটিত হয় ৭ই জুলাই ও ২০শে সেপ্টেম্বর দু-দফায়। এতে ৭৯ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
আত্রাই উপজেলা সদর থেকে পশ্চিম দিকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে আত্রাই নদীর তীরে বান্দাইখাড়া গ্রামটি অবস্থিত। গ্রামটি হিন্দু প্রধান এবং একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল। রাজাকার সর্দার জান বক্স শেখ ওরফে জানার সহযোগিতায় ৭ই জুলাই পাকবাহিনী নৌকাযোগে বান্দাইখাড়া গ্রামে প্রবেশ করে হিন্দুপাড়া ঘেরাও করে এবং এলোপাথারি ফাঁকা গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ-সময় আতঙ্কিত লোকজন পালানোর চেষ্টা করলে ৮ জন হিন্দু যুবককে গুলি করে হত্যা এবং হিন্দু ঘরবাড়ি লুটপাট করে। গীতা নামে এক তরুণীকে ধর্ষণে বাধা দিলে তার ভাই রাধা গোবিন্দকে পাকবাহিনী হত্যা করে এবং ইসমাইল হোসেনের বাড়ির বিভিন্ন বয়সের একাধিক নারীকে ধর্ষণ করে। ২০শে সেপ্টেম্বর এ গ্রামে দ্বিতীয়বার হামলা হয়। বান্দাইখাড়া বাজারের ব্যবসায়ীদের বড় নৌকাগুলো যাতে পাকবাহিনী ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য মুক্তিযোদ্ধারা নৌকার ধান-চাল গরিব-অসহায় মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে নৌকাগুলো ভেঙ্গে ফেলেন। এ প্রেক্ষাপটে রাজাকার কমান্ডার জান বক্স শেখ আত্রাই ক্যাম্প থেকে পাকবাহিনীকে নিয়ে এসে গ্রামটিতে আবার হামলা চালায়। প্রথমে পাকবাহিনী ফাঁকা গুলি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং পরে সমগ্র গ্রামে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং অসংখ্য তরুণীকে ধর্ষণ করে। তারা বৃদ্ধ, শিশু ও নারীদের বাদ দিয়ে ৭০ জনের মতো যুবককে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার পর লাশগুলো আত্রাই নদীতে ফেলে হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার দিয়ে সাহায্য করার জন্য এছাহাক আলী সরদারকে রাজাকার সর্দার জানার ইঙ্গিতে পাকসেনারা হত্যা করে। হত্যাকাণ্ড শেষে পাকহানাদার বাহিনী দুপুরের পর গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। গণহত্যায় শহীদ ও আহতদের একটি নামফলক ঘটনাস্থলে স্থাপন করা হয়েছে। [ফরিদুল আলম পিন্টু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!