বাদামতল রাজাকার অপারেশন (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম)
বাদামতল রাজাকার অপারেশন (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম) সেপ্টেম্বর মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা সংঘটিত। এ অপারেশনে রাজাকাররা পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায় এবং সেখান থেকে অনেক অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
আরাকান সড়কের চন্দনাইশের বাদামতল ব্রিজ সব সময় রাজাকাররা পাহারা দিত। মুক্তিযোদ্ধারা যাতে ব্রিজটি ধ্বংস করতে না পারে সেজন্য এ পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এসব রাজাকারের মধ্যে বেশির ভাগ ছিল চন্দনাইশের মোহাম্মদপুর এলাকার অধিবাসী। সেপ্টেম্বর মাসের এক রাতে কমান্ডার মীর আহমদ চৌধুরী গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধারা ব্রিজে পাহারারত রাজাকারদের ওপর অপারেশন পরিচালনা করেন। মুক্তিযোদ্ধারা রাত ১টার দিকে ব্রিজের কাছে যান। তখন রাজাকাররা ব্রিজের উত্তর-পশ্চিম দিকের একটি চায়ের দোকানের ভেতরে চা পান করছিল। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধারা ফায়ার ওপেন করলে দোকানের ভেতর থেকে রাজাকাররা বেরিয়ে এসে পাল্টা ফায়ার শুরু করে। ফলে দুপক্ষের মধ্যে সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা যুদ্ধ চলার পর রাজাকাররা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা এখান থেকে ৯টি থ্রি- নট-থ্রি রাইফেল ও ৪৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেন।
এ-অপারেশনে অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- আবদুল আলিম (পিতা ওবাইদুর রহমান, চন্দনাইশ), আবুল বশর (পিতা মাওলানা মো. ইছহাক, উত্তর হাশিমপুরস্থ ভাইখলিফা পাড়া; ডেপুটি কমান্ডার), ফোরক আহমদ (পিতা আবদুর রশিদ, দক্ষিণ জোয়ারা), ল্যান্স নায়েক আবুল কালাম আজাদ (পিতা আহমদ হোসেন, হারলা), মোহাম্মদ সোলাইমান (পিতা মো. ইছহাক, হারলা), জমির উদ্দিন (পিতা রাজা মিয়া, পূর্ব জোয়ারা), শিব্বির আহমদ (পিতা সিরাজুল ইসলাম, হারলা), মোহাম্মদ ইউছুপ ওরফে ইঞ্চিয়া (পিতা খুইল্যা মিয়া, পশ্চিম হারলা) ও হাবিলদার আছহাব মিয়া (পিতা মতিউর রহমান, মধ্যম চন্দনাইশ)। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড