You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুক্তিযুদ্ধে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ৫২-র ভাষা- আন্দোলন, ৬৬-র ছয়দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুথান প্রভৃতি অন্দোলনে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও তারা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। এর ফলে সারা দেশের মতো এ উপজেলায়ও আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। কিন্তু তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় দেশব্যাপী গণবিক্ষোভ দেখা দেয় এবং বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ১৯৭১ সালের মার্চের প্রথম থেকেই অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়। এ উপজেলার জনগণও আন্দোলনে যোগ দেয়। এমনই এক পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- ঐতিহাসিক সাতই মার্চের ভাষণ দেন। সেই ভাষণ শুনে জনগণ স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়। তারপর ২৫শে মার্চ পাকবাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট – এবং ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পর জনগণ মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ এমপিএ ১৯শে এপ্রিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং জনতাকে সঙ্গে নিয়ে থানা সদরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
প্রশিক্ষিত পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার মতো উপযুক্ত হাতিয়ার কিংবা প্রশিক্ষণ কোনোটাই তখন বাঙালিদের ছিল না। তাই নবীন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের জন্য থানা সদরের রূপসদী স্কুল মাঠে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলা হয়। হাবিলদার আবদুল আজিজের নেতৃত্বে এখানে ৩৫০ জন ছাত্র-যুবক ও কৃষক-শ্রমিক প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেয়। পরে এডভোকেট দেওয়ান আবুল আব্বাস এমএনএ এবং গোলাম মহিউদ্দিন এমপিএ উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য তাদের ভারতের আগরতলায় পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তাছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে ৭ সদস্যবিশিষ্ট বাঞ্ছারামপুর থানা সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ এমপিএ, থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নূরুল ইসলাম পণ্ডিত, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইউনুস বিএসসি, বিষ্ণুরামপুর গ্রামের ডা. মো. সামছুল হক, বাহেরচর গ্রামের আবদুল আউয়াল মাস্টার এবং দরিকান্দি গ্রামের মো. রওশন আলম (কালু মিয়া) ছিলেন এর সদস্য। এই কমিটির মাধ্যমে প্রথম দফায় প্রায় ৩০০ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য আগরতলায় পাঠানো হয়। তাছাড়া অনেকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং অন্যান্য মাধ্যমেও আগরতলায় গিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ৩১শে জুলাই আগরতলায় প্রশিক্ষণশেষে ২নং সেক্টরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব- কমান্ডার ক্যাপ্টেন আইনউদ্দিনের বাছাই করা ২৩ সদস্যের একটি দল থানা কমান্ডার মো. মোখলেছুর রহমান ও সহকারী কমান্ডার মকবুল হোসেনের নেতৃত্বে বাঞ্ছারামপুর আসে। দরিয়াদৌলত, সোনারামপুর, সলিমাবাদ, দরিয়ারচর বাজার, দশআনি বাজার, ফতেপুর, উজানচর প্রভৃতি এলাকায় মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। রূপসদীতে করা হয় থানা হেডকোয়ার্টার্স।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ৩৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন- সুরুজ মিয়া মাস্টার (দরিকান্দি, সভাপতি), নুরুল ইসলাম (কাঞ্চনপুর, সহ- সভাপতি), আলী আজম মাস্টার (খাল্লা, সহ-সভাপতি), আব্দুল কাদের চেয়ারম্যান (রূপসদী, সহ- সভাপতি), মো. ইউনুছ মিয়া মাস্টার (রূপসদী, সাধারণ
পূর্ব সাইফুল্লা কান্দি, সম্পাদক), মাজু মিয়া বেপারী (রূপসদী, সদস্য), দানা মিয়া (রূপসদী), আব্দুছ ছোবহান মাস্টার (দরিকান্দি), রওশন আলম (দরিকান্দি), ইসহাক মাস্টার (বাঁশগাড়ী), দেলোয়ার হোসেন মাস্টার (আছাদনগর), আউয়াল মাস্টার(বাহেরচর), খাদেম রসুল ওরফে কনু মিয়া, ছমির উদ্দিন মাস্টার (দশদোনা), ডা. আবদুল আওয়াল (আইয়ুবপুর), ফিরোজ মিয়া দারোগা (ভেলানগর), সুলতান আহমেদ (দুলারামপুর), আলহাজ্ব আবদুল লতিফ (ফরদাবাদ), ডা. মাফুজুল বারী মেম্বার (ফরদাবাদ), মাতু (ফতেপুর), মতিউর রহমান (ভিটি-ঝসড়ারচর), ডা. আলী আজগর (বাঁশগাড়ী), গোলাম মহিউদ্দিন (মরিচাকান্দি), হাবিব উল্লাহ চৌধুরী (পাড়াতলী), আমেনা সুলতানা বকুল (মধ্যনগর, ক্যাম্প সুপারভাইজার), মো. সিরাজুল ইসলাম (দশদোনা), মো. আনোয়ারুল ইসলাম (পাড়াতলী), আব্দুর রহমান (বাঞ্ছারামপুর, ক্যাম্প সুপারভাইজার), ডা. সামছুল হক (বিষ্ণুরামপুর), সামছুল হক (চরলহনিয়া, ক্যাম্প সুপারভাইজার), জয়নাল আবেদীন ডাক্তার (বাহাদুরপুর), ওবায়দুল্লাহ (রূপসদী, পলিটিক্যাল মটিভেটর), সরকার আব্দুস সোবহান (পাইকারচর, স্টুডেন্টস মটিভেটর), আব্দুল হাকিম মাক্কু (রূপরদী, শব্দসৈনিক), মো. মোকবল আহম্মদ (পাহাড়িয়াকান্দি) এবং মো. ইসহাক মিয়া (আইয়ুবপুর)।
বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি সোহরাফ হোসেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান নেয়ায় পাকবাহিনী পার্শ্ববর্তী উপজেলা হোমনা থেকে মাঝে-মধ্যে নদীপথে এখানে এসে আবার চলে যেত। এদের প্রতিহত করার জন্য গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ এমপিএ-র নেতৃত্বে ১লা আগস্ট মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনতা বাঞ্ছারামপুর থানা আক্রমণ করেন। তবে আধুনিক অস্ত্র না থাকায় তারা পিছু হটতে বাধ্য হন। এ-সময় বাঞ্ছারামপুর গ্রামের অধিবাসী হোসেন আলী শহীদ এবং আব্দুর রাজ্জাক আহত হন। এদিন জনতার হাতে মোতাহার আলী নামে একজন পুলিশ এবং জালাল উদ্দিন নামে একজন মুসলিম লীগ নেতা ও আবদুল হাকিম নামে একজন রাজাকার নিহত হয়।
পাকবাহিনী পরে আরো শক্তি সঞ্চয় করে স্থায়ীভাবে থানায় এবং অস্থায়ীভাবে বাঞ্ছারামপুর বালিকা বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে। তবে মাঝে-মধ্যে হোমনা থানা ক্যাম্প থেকেও পাকসেনারা এসে অপারেশনে যোগ দিত।
উপজেলায় স্বাধীনতাবিরোধীরা শান্তি কমিটি – ও রাজাকার বাহিনী গঠন করে পাকবাহিনীকে সহযোগিতা করে। শান্তি কমিটির সভাপতি ছিল আজহারুল হক নসু মিয়া চেয়ারম্যান (ভেলানগর), সহ-সভাপিত আক্তার হোসেন চেয়ারম্যান (দশদোনা) ও কালা মিয়া চেয়ারম্যান (রূপসদী) এবং সম্পাদক জালাল উদ্দিন (ভিটি ঝগড়ারচর)। কমিটির সদস্যদের মধ্যে ছিল মীর সুলতান আহম্মেদ (আছাদনগর), মোজাফ্ফর মোল্লা (শরীফপুর), মো. ছানাউল্লাহ (বাঞ্ছারামপুর), মুনছর আলী (জগন্নাথপুর), মমতাজ মিয়া (মনাইখালী), আতস মিয়া (বাঞ্ছারামপুর), কালু মিয়া (সলিমাবাদ), সোনা মিয়া মুন্সী (দুর্গারামপুর), মো. আতিক উল্লাহ (ডোমরাকান্দি), আব্দুল ওয়াসেক (রূপসদী, পুলিশ সদস্য), সুলতান আহমদ (রূপসদী), মো. ওয়ালী বেগ (পূর্বহাটি), মাওলানা ইসহাক (দুর্গাপুর), ফজলুল করিম (পাড়াতুলী), কেরামত আলী (জগন্নাথপুর), হাবিব উল্লাহ (কালিকাপুর) এবং সুন্দর আলী চেয়ারম্যান (দশআনি)। শান্তি কমিটির নির্দেশে রাজাকাররা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা পাকহানাদারদের ক্যাম্পে পৌঁছে দিত এবং বিভিন্ন গ্রামে যাতায়াতে তাদের পথ দেখানোসহ অন্যান্য সহযোগিতা করত।
পাকসেনারা হোমনা থেকে এসে ২৩শে মে ভেলানগর ও রূপসদী গ্রামে প্রথম হামলা চালায়। ২রা জুন পুনরায় রূপসদী গ্রামে হামলা চালিয়ে ৫ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে এবং ১৫টি বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। একই দিন মাছিমনগর ও ছয়ফুল্লাকান্দিতে ৫ জন গ্রামবাসীকে হত্যা করে। ৬ই সেপ্টেম্বর বাঞ্ছারামপুর গ্রামে ৩ জন এবং ৫ই অক্টোবর উজানচর গ্রামে ১৫ জনকে হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। উজানচর গণহত্যার দিন পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে চারজন মুক্তিযোদ্ধাও শহীদ হন। ১২ই ডিসেম্বর পাকহানাদাররা থানা সদরের দুর্গারামপুর গ্রামে ১২ জন এবং দশদোনা গ্রামে ১৫ জনকে হত্যা করে, যা দুর্গারামপুর গণহত্যা ও দশদোনা গণহত্যা নামে পরিচিত। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই পাকবাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় বিভিন্ন গ্রামে হানা দিয়ে হত্যা ও লুটতরাজ করার চেষ্টা করত। তবে অনেক ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা প্রতিহত হয়ে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
পাকবাহিনী বাঞ্ছারামপুর থানাকে প্রধান নির্যাতনকেন্দ্র ও বন্দিশিবির হিসেবে ব্যবহার করে। বন্দিশিবিরে নির্যাতিতরা মৃত্যুবরণ করলে তাদের লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিত। জুলাই মাসের মাঝামাঝি থানার ওসি সোহরাফের সহযোগিতায় পাকবাহিনী এখানে অর্ধশতাধিক হিন্দুকে হত্যা করে, যা বাঞ্ছারামপুর থানা গণহত্যা নামে পরিচিত। বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় একটি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে
উজানচর লঞ্চঘাট সংলগ্ন গণকবর।
ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে দরিকান্দি গ্রামের মনিরুল হকের নেতৃত্বে ২৫ জনের একটি দল ছাড়াও বেশ কয়েকটি স্থানীয় গ্রুপ মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ছিল।
১লা আগস্ট থেকে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে, মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি যুদ্ধ হয়। সেগুলোর ল্লেখযোগ্য হলো— আসাদনগর যুদ্ধ,মিরপুর যুদ্ধ, উজানচর যুদ্ধ ও দুর্গারামপুর যুদ্ধ। রূপসদী গ্রামে মুক্তিবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল। এটি উচ্ছেদের জন্য পাকবাহিনী ৮ই সেপ্টেম্বর হোমনা থেকে রওনা দেয়। এ খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রতিহত করার জন্য আসাদনগরের কাছে বাংকার খনন করে অবস্থান নেন। হাবিলদার আবদুল আজিজ ও নায়েক আবদুর রশীদসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা এতে অংশ নেন। পাকবাহিনী এখানে আসামাত্র তাঁরা আক্রমণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে না পেরে পাকবাহিনী পিছু হটে। এ-যুদ্ধে একজন পাক সিপাহি নিহত ও একজন সুবেদার আহত হয়।
১০ই সেপ্টেম্বর পাকসেনারা মিরপুর গ্রামে হানা দিয়ে অনেক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। এ খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ফতেপুর ও সলিমাবাদ ক্যাম্প থেকে এসে বাধা দিলে উভয় পক্ষে যুদ্ধ বাঁধে। যুদ্ধে পাকসেনারা পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায়। ৫ই অক্টোবর উজানচর যুদ্ধে চারজন মুক্তিযোদ্ধা এবং ১৫ জন গ্রামবাসী শহীদ হন। ১২ই ডিসেম্বর দুর্গারামপুর যুদ্ধে আব্দুল মতিন নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। একই দিন দশদোনায়ও একটি যুদ্ধ হয়।
১৪ই ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর বাঞ্ছারামপুর থানা ক্যাম্প আক্রমণ করেন। এতে দিশেহারা পাকসেনা ও রাজাকাররা স্পীডবোট ও লঞ্চযোগে এবং কিছু সংখ্যক স্থলপথে হোমনা থানার ঘাঘুটিয়ায় পালাতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধারা বাঞ্ছারামপুর থানা দখলে নিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করতে থাকেন। নায়েক আব্দুর রশীদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল পাইকারচর-কমলপুর থেকে পাকসেনাদের আক্রমণ করে এবং সহকারী থানা কমান্ডার মকবুল হোসেনের নেতৃত্বে আরেকটি দল উজানচর প্রাইমারি স্কুলে অবস্থান নেয়। এসময় পাকহানাদার ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তুমুল গুলি বিনিময় হলে মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমেদ গুলিতে আহত হন। এদিনই বাঞ্ছারামপুর থানা হানাদারমুক্ত হয়।
উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- দেলোয়ার হোসেন, বীর বিক্রম (পিতা মুন্সি জায়েদ আলী, দড়িভেলানগর), আবদুস সোবহান, বীর প্রতীক (পিতা কালু মিয়া বেপারী, চরলোহনিয়া), শহীদুল্লাহ, বীর প্রতীক (পিতা আব্দুল জলিল মিঞা, ফরদাবাদ) ও সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, বীর প্রতীক (পিতা নান্নু মিয়া সরকার, দশদোনা)। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- দেলোয়ার হোসেন, বীর বিক্রম (১৭ই জুলাই যুদ্ধে শহীদ), আব্দুল হাকিম (পিতা আবদুস সালাম, বিষ্ণুরামপুর), মো. হাবিবুল্লাহ (পিতা আবদুর রহমান, বাঞ্ছারামপুর; ৫ই অক্টোবর উজানচর যুদ্ধে শহীদ), মো. শাহজাহান মিয়া (পিতা কালু মিয়া, দেবিদ্বার; ঐ), মো. মজিবুর রহমান (আব্দুল মালেক, মুরাদনগর; ঐ), মো. ফকরুল ইসলাম (পিতা সিরাজ উদ্দিন, সুসন্ডা; ঐ), আবদুল কাদের (পিতা আব্দুল মান্নান নসু মিয়া, হাসন্নগর), শহিদুল্লাহ (পিতা সিকদার আলী, বিষ্ণুরামপুর), গোলাম মোস্তফা (পিতা মো. বজলুর রহমান, বাহেরচর), খলিল মিয়া (পিতা অলিউর রহমান, জয়কালীপুর), আবদুল মালেক (পিতা সবর আলী, সোনারামপুর), আবুল হাসান (পিতা লুৎফর রহমান, কাঞ্চনপুর), আবদুল ওয়াদুদ (পিতা ছন্দু মিয়া বেপারী, পাড়াতলী), আবুল কাসেম (পিতা মুন্সী -জারু মিয়া, মধ্যনগর), মো. আব্দুল মতিন (পিতা মো. জীবন মিয়া, দুর্গারামপুর), হাবিবুর রহমান (পিতা আবদুর রহমান, বাঞ্ছারামপুর), মোবারক হোসেন (পিতা সোনা মিয়া প্রধান, বুধাইরকান্দি), ইদ্রিছ আলী (পিতা সাহাজউদ্দিন প্রধান, উজানচর), গোলাম মোস্তফা (পিতা বজলুর রহমান, বাহেরচর), এম এ কাইয়ূম (পিতা এম এ গণী, মানিকপুর), হাবিবুর রহমান (পিতা আবু মিয়া, রূপসদী), আবদুর রহমান (পিতা আবদুস সোবহান, মানাইখালী), ফজলুর রহমান (পিতা মনু মুন্সী, আগানগর), কবির হোসেন (পিতা আবদুল বারেক সরকার, মধ্যনগর) এবং মদন মিয়া (পিতা সুরুজ মিয়া বেপারী, ছয়ফুল্লাকান্দি)।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে ২০১২ সালে বাঞ্ছারামপুর সদরের বাঞ্ছারামপুর কলেজ সংলগ্ন মাওলাগঞ্জ বাজারে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম এমপি-র উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ৫৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৭১ ফুট উঁচু একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। এতে উপজেলার তালিকাভুক্ত সকল মুক্তিযোদ্ধার নাম খোদাই করা রয়েছে। [মো. এমরানুল হক]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!