বাড়িয়া-কামারিয়া গণহত্যা (গাজীপুর সদর)
বাড়িয়া-কামারিয়া গণহত্যা (গাজীপুর সদর) সংঘটিত হয় ১৪ই মে। এতে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ দুশতাধিক মানুষ নির্মম হত্যার শিকার হন।
গাজীপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত বাড়িয়া-কামারিয়া হিন্দু অধ্যুষিত পাশাপাশি দুটি গ্রাম। গাজীপুর জেলা শহর থেকে এদুটি গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৮ কিমি। কুখ্যাত রাজাকার আউয়াল (জয়দেবপুর) ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের সহযোগিতায় গাজীপুর শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ি সেনানিবাস থেকে দুশতাধিক পাকিস্তানি সেনা বাড়িয়া-কামারিয়া গ্রামে প্রবেশ করে ভয়াবহ গণহত্যা চালায়। শুধু হত্যাই নয়, তারা নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং ব্যাপক লুটপাট করে। পাকবাহিনীর ভয়াবহ তাণ্ডবে দিশেহারা হয়ে কিছু মানুষ গ্রাম ছেড়ে বেলাই বিল পার হয়ে আশপাশের গ্রামে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেখানেও তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। ১৪ই মে বাড়িয়া-কামারিয়া গ্রামের দুশতাধিক মানুষকে পাকবাহিনী হত্যা করে। এসব শহীদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন- হরিন্দ্র চন্দ্র শীল (পিতা দীনবন্ধু শীল), মানদা রাণী শীল (স্বামী হরিন্দ্র চন্দ্র শীল), রেনুচন্দ্র শীল (পিতা ভানুচন্দ্র শীল), তরুবালা শীল (স্বামী ভানুচন্দ্র শীল), গীতারাণী শীল (পিতা ভানুচন্দ্র শীল), ভানুচন্দ্র শীল (পিতা হরিন্দ্র চন্দ্র শীল), অবনী দে (পিতা চন্দ্ৰকালি দে), ভুলুচন্দ্র দে (পিতা আনী দে), ফুলু রাণী দে (পিতা অবনী দে), সুধামনি দাস (স্বামী যজ্ঞেশ্বর দাস), মালিকা রাণী দাস (পিতা যজ্ঞেশ্বর দাস), পবিত্রা দাস (স্বামী সূর্যমোহন দাস), বিলাসী রাণী দাস (স্বামী উদ্ধবচন্দ্র দাস), হাসুনী রাণী দাস (স্বামী হরিবাসী দাস), পার্বতী রাণী দাস (স্বামী সচিন্দ্র চন্দ্র দাস), বিনোদা রাণী দাস (স্বামী নবদ্বীপ চন্দ্র দাস), নারায়ণ চন্দ্র দাস (পিতা নবদ্বীপ চন্দ্ৰ দাস), সুন্দরী রাণী দাস (পিতা নবদ্বীপ চন্দ্ৰ দাস), অন্নকুমারী দাস (স্বামী নগরবাসী দাস), নলিত সরকার (পিতা নরেন্দ্র সরকার), কালীতারা সরকার (স্বামী রজনী সরকার), নীপা সরকার (পিতা রজনী সরকার), শুভ্রদা সরকার (পিতা রজনী সরকার), যামিনী রাণী দাস (স্বামী হৃদয় চন্দ্ৰ দাস), চাঁনমোহন দাস (পিতা হরেন্দ্র চন্দ্র দাস), জয়দেব দাস (পিতা সনাতন দাস), জয়ধ্বনী দাস, সহদেবচন্দ্র দাস, হরিচরণ দাস, অক্ষয় কুমার দাস, নগেন্দ্র চক্রবর্তী, ছায়া রাণী দে, করপুরা রাণী দাস, সচীন্দ্র চন্দ্র দাস, বিজয়চ ন্দ্ৰ দাস, মো. সাহাবুদ্দিন ভূঁইয়া, ছাহেরা বেগম, আবদুল অদুদ ভূঁইয়া, বাকির ভূঁইয়া, মমতাজ ভূঁইয়া, দিপালী রাণী শীল, মণীন্দ্ৰ চন্দ্ৰ শীল, মালতী রাণী শীল, প্রেমবালা শীল, সত্যরঞ্জন মালী, চারুবালা শীল, বেনুবালা শীল, সাধনা রাণী শীল, জ্ঞানদা রাণী শীল, সন্ধ্যা রানী দাস, কোকারাম দাস, বিপুলা রাণী দাস, শরৎচন্দ্র দাস, হিরণী রাণী দাস, চাঁনমোহন দাস, সুকমোহন দাস, মিনারাণী দাস, দেবেন্দ্র চন্দ্র দাস, ইন্দ্রমোহন দাস, যোগেশচন্দ্র দাস, সারদা রাণী মণ্ডল, রজনীকান্ত দাস, সবিতা রাণী দাস, বিনদা রাণী দাস, ধীরেন্দ্র চন্দ্র দে, রেখা রাণী, বিনদা রাণী দাস, সুচিত্রা সেন, পঞ্চানন্দ সেন, দীপ্তি রাণী রায়, অনিল চন্দ্র রায়, শেফালী রাণী রায়, মো. কফিল উদ্দিন, মো. রমিজ উদ্দিন ও মো. চান মিয়া। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড