বাড়ৈবাড়ি গণহত্যা (মঠবাড়ীয়া, পিরোজপুর)
বাড়ৈবাড়ি গণহত্যা (মঠবাড়ীয়া, পিরোজপুর) সংঘটিত হয় ২২শে মে। এতে ১৩ জন নিরীহ গ্রামবাসী শহীদ হন। বাড়ৈবাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। পাকবাহিনী ২২শে মে রাতে নলী বাড়ৈবাড়িতে আকস্মিক আক্রমণ করে লুটতরাজ, আগ্নিসংযোগ ও নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। হানাদার বাহিনীর দোসর আব্দুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের নেতৃতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন, চান মিয়া দর্জি, শাহাদাত হোসেন, তাফাল বাড়ির খলিল মাওলানা (হরিণ মাওলানা নামে পরিচিত) প্রমুখ বাড়ৈবাড়ির হত্যাকাণ্ড, লুটতরাজ ও নারীনির্যাতনে পাকবাহিনীকে সহায়তা করে হানাদার বাহিনীর সদস্যরা তাদের দোসরদের সহযোগিতায় ৩ সহোদরসহ ১৩ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। বাড়ৈবাড়ি গণহত্যায় শহীদ গ্রামবাসীরা হলেন নলী গোলবুনিয়ার প্রিয়নাথ হালদার (পিতা মুধুসুদন হালদার), নিশিকান্ত বিশ্বাস (পিতা অভয়চন্দ্র বিশ্বাস), সুরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস (পিতা বিশ্বময় বিশ্বাস), জিতেন্দ্রনাথ বিশ্বাস (পিতা বিশ্বময় বিশ্বাস), উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস (পিতা বিশ্বময় বিশ্বাস), সখানাথ খরাতী (পিতা সীতানাথ খরাতী), গণেশচন্দ্র মিস্ত্রী (পিতা বসন্ত কুমার মিস্ত্রী), নেপালচন্দ্র মিস্ত্রী (পিতা রাইচরণ মিস্ত্রী), বলরাম মিস্ত্রী (পিতা কৈলাশ মিস্ত্রী), বসন্ত কুমার হাওলাদার (পিতা দুর্গাচরণ হাওলাদার), জগদীশ চন্দ্র বিশ্বাস (পিতা অভয় চন্দ্ৰ বিশ্বাস), উপেন্দ্রনাথ মিস্ত্রী (পিতা নেপাল চন্দ্র মিস্ত্রী) ও চরকগাছিয়ার ষষ্ঠীভূষণ হাওলাদার (পিতা কালীচরণ হাওলাদার)। পিরোজপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সাপলেজার এ গণহত্যা একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়। তবে গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে এখন পর্যন্ত কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়নি। [মো. মাসুদুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড