বাজনী পুল অপারেশন (বড়লেখা, মৌলভীবাজার)
বাজনী পুল অপারেশন (বড়লেখা, মৌলভীবাজার) পরিচালিত হয় অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে। এতে ৩৬ জন রাজাকার ধরা পড়ে এবং তাদের ২৬ জন পরে নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পাহাড়ি অঞ্চলে গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে হানাদারদের পর্যায়ক্রমে কাবু করেন। বাজনীর পুল অপারেশন গেরিলাদের জন্য একটি বড় সফল অপারেশন ছিল।
হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার লক্ষে মুক্তিযোদ্ধারা বাজনীর পুল বিধ্বস্ত করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের তিন সদস্যের একটি দল পুলটি রেকি করতে যায়। এ দলের সদস্য ছিলেন আবুল কাশেম, আসাব আলী ও ইসমাইল আলী এবং তাঁদের গাইড ছিলেন মস্তকিন আলী। কিন্তু রেকি করতে এসে মুক্তিযোদ্ধারা পুলে পাহারারত রাজাকারদের দ্বারা আক্রান্ত হন। অন্যরা রক্ষা পেলেও আবুল কাশেম রাজাকারদের হাতে ধরা পড়েন। রাজাকাররা বড়লেখা সদর ক্যাম্পে নিয়ে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
এই সংবাদ কুকিরতল সাব-সেক্টরে পৌঁছলে ভারতীয় বাহিনীর তিলক রায় মল্লিক এবং মুক্তিযোদ্ধারা বাজনীর পুল গুঁড়িয়ে দেয়ার জন্য যৌথ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি মুক্তিযোদ্ধা দল বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এ সময়ও গাইড হিসেবে মস্তকিন আলী মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেন। রাতে মুক্তিযোদ্ধা দল বাজনীর পুলের কাছে এলে সেখানে পাহারারত রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের গ্রেফতার করেন। তারপর পুলের ওপর ডিনামাইট চার্জ করা হয়। চতুর্দিক প্রকম্পিত করে পুলটি গুঁড়িয়ে যায়। বাজীনর পুল অপারেশনে গ্রেফতারকৃত ৩৬ জনের মধ্যে ২৬ জনকে পরে মাধবকুণ্ড পাহাড়ে নিয়ে হত্যা করা হয়। [মোস্তফা সেলিম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড