বাগজানা গ্রাম গণহত্যা (পাঁচবিবি, জয়পুরহাট)
বাগজানা গ্রাম গণহত্যা (পাঁচবিবি, জয়পুরহাট) ২০শে এপ্রিল, ২৭শে এপ্রিল ও মে মাসের প্রথম দিকে সংঘটিত হয়। এতে দুশতাধিক সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
পাঁচবিবি উপজেলার বালিঘাটা ইউনিয়নের বাগজানা গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনী একাধিকবার গণহত্যা চালায়। ২০শে এপ্রিল পাকিস্তানি সৈন্যরা পাঁচবিবি থানায় অনুপ্রবেশ করে। এদিন হিলি থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর অপর একটি দল পাঁচবিবি আসার পথে বাগজানা গ্রামে গণহত্যা শুরু করে। প্রথমেই তারা হিন্দুপাড়ার সাংবাদিক দুলাল অধিকারীকে হত্যা করে। এদিন গণহত্যায় আরো শহীদ হন— শিক্ষক নরেন মহন্ত, মনির উদ্দিন মণ্ডল, ভবেশচন্দ্র মহুরি প্রমুখ। এ- সময় হানাদাররা কতগুলো বাড়িঘরে লুণ্ঠন শেষে অগ্নিসংযোগ করে।
বাগজানা গ্রামে দ্বিতীয় গণহত্যাটি সংঘটিত হয় এক সপ্তাহের মধ্যে। হানাদার বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা বকুলতলা এলাকায় রেললাইনের কিছু অংশ তুলে ফেলেন। প্রতিশোধ নিতে হানাদার বাহিনী ২৭শে এপ্রিল খুলনা থেকে সৈয়দপুরগামী একটি ট্রেন থামিয়ে দেড় থেকে দুশ জন যাত্রীকে নামিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে হত্যা করে।
মে মাসের প্রথম দিকে একদিন সকালে শান্তি কমিটি-র চেয়ারম্যান আবদুল আলিম (বিএনপির সাবেক মন্ত্রী, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রাপ্ত ও দণ্ডভোগরত অবস্থায় মৃত্যু)-এর নেতৃত্বে পাকিস্তানি সৈন্য, শান্তি কমিটির সদস্য ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা বকুলতলার পার্শ্ববর্তী বাগজানাসহ কয়েকটি গ্রামে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ চালায়। এদিন বাগজানা গ্রাম গণহত্যায় ৭ জন মানুষ শহীদ হন। তাঁদের পরিচয় জানা যায়নি। [রেহানা পারভীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড