You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাংড়া ব্রিজ যুদ্ধ (কালিহাতী, টাঙ্গাইল)

বাংড়া ব্রিজ যুদ্ধ (কালিহাতী, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় আগস্ট মাসের শেষদিকে। টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলা সদরের দক্ষিণে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কে বাংড়া ব্রিজের অবস্থান। ব্রিজের দুপাশে বাংকার করে -রাজাকাররা নিয়মিত পাহারায় থাকত, কারণ পাকবাহিনীর যানবাহনগুলো এ ব্রিজ দিয়ে চলাচল করত। আগস্ট মাসের শেষদিকে হাবিবুল হক খান বেনু কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধারা ব্রিজটি রেকি করেন। উদ্দেশ্য, ব্রিজ পার হওয়ার সময় পাকবাহিনী ও রাজাকারদের আক্রমণ করা। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন কাদেরিয়া বাহিনীর বেনু কোম্পানির টু-আই-সি অলোক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরো ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। সবার কাছেই অস্ত্র। ব্রিজের কাছাকাছি গিয়ে অলোক সহযোদ্ধাদের দুটি গ্রুপে ভাগ করে অপারেশনের পরিকল্পনা করেন। প্রথম গ্রুপে ছিলেন অলোক, কায়েস চৌধুরী, শামীম ও নূরু এবং দ্বিতীয় গ্রুপে ছিলেন আসলাম খাঁ, হায়দার, গফুর ও খোকন। সিদ্ধান্ত হয়, পাকবাহিনীর গাড়িগুলো ব্রিজের মাঝামাঝি এলে প্রথমে অলোক ফায়ার ওপেন করবেন, সঙ্গে-সঙ্গে সহযোদ্ধারাও ফায়ার করবেন। এরূপ পরিকল্পনা করে আসলাম খাঁর গ্রুপ ব্রিজের ডানদিকে এবং অলোকের গ্রুপ ব্রিজের বামদিকে অবস্থান নেন।
ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে পাকবাহিনীর ৭টি গাড়ি ব্রিজের কাছে এসে থামে। এক-এক করে তিনটি গাড়ি ব্রিজ পার হয়ে যায়। ৪র্থ গাড়িটি ব্রিজের মাঝামাঝি আসতেই অলোকের এলএমজি গর্জে ওঠে। সঙ্গে-সঙ্গে সহযোদ্ধাদের অস্ত্রও গর্জে ওঠে। পাকবাহিনীও গুলি চালায়। এভাবে ঘণ্টাখানেক গুলি বিনিময় হওয়ার পর পাকসেনাদের একটি গাড়িতে আগুন লেগে যায়। তারা তখন আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এদিকে খোকন হামাগুড়ি দিয়ে ডানদিকের বাংকারের কাছে পৌঁছে যান এবং বাংকারের জানালা দিয়ে গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। কিন্তু ফেরার পথে তাঁর ডান হাতে গুলি লাগে। তিনি মাটিতে পড়ে যান। হায়দার ও গফুর তাঁকে উদ্ধার করেন। পাকবাহিনীর আক্রমণের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। এমতাবস্থায় কমান্ডার অলোকের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধারা পিছিয়ে আসেন এবং আত্মরক্ষার্থে ঘাটাইলের দিঘলকান্দি ইউনিয়নের উকিলদা গ্রামের সোবহান মাস্টারের বাড়িতে চলে যান। [শফিউদ্দিন তালুকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!