You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.24 | বসুনিয়াপাড়া-বাড়াইপাড়া গণহত্যা (কিশোরগঞ্জ) - সংগ্রামের নোটবুক

বসুনিয়াপাড়া-বাড়াইপাড়া গণহত্যা (কিশোরগঞ্জ)

বসুনিয়াপাড়া-বাড়াইপাড়া গণহত্যা (কিশোরগঞ্জ) সংঘটিত হয় ২৪শে জুন। কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদ থেকে প্রায় ৮ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ থেকে প্রায় ৫ কিমি উত্তর-পশ্চিমে অঞ্চলদুটি পাশাপাশি অবস্থিত। গণহত্যায় পাকসেনা ক্যাপ্টেন জাবেদকে সহায়তা করে স্থানীয় রাজাকার – আবেদ হাজী, তসলিম দফাদার, শমসের সর্দারসহ অন্য রাজাকাররা। আবেদ হাজীর নেতৃত্বে একদল রাজাকার এলাকার হিন্দুপাড়া লুণ্ঠন করতে এলে স্থানীয়রা দেশী অস্ত্র নিয়ে তাদের প্রতিরোধ করে। প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে তারা পালিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে তাদের উস্কানিতে পাকসেনারা ২৪শে জুন বসুনিয়াপাড়া, নলকুড়িপাড়া ও বাড়াইপাড়ায় গণহত্যা চালায়। এ গণহত্যায় শহীদদের কয়েকজন হলেন— বসুনিয়াপাড়ার সেলিম উদ্দিন, মাত, শুকারু, হাছিনা (পিতা শুকারু), বাড়াইপাড়ার আতাহার, আতিয়ার রহমান, আছিম উদ্দিন, মহিউদ্দিন এবং তার স্ত্রী। এছাড়াও বসুনিয়াপাড়া থেকে কাজের সন্ধানে বাহগীলিতে এসে গণহত্যার শিকার হন সালেম উদ্দিন (বড়ভিটা), রমিজ উদ্দিন (বড়ভিটা), ইরফান আলী (বেতগাড়ি) এবং ঢোডা (চওড়াবাড়ি)। গণহত্যার পর স্থানীয় জনগণ শহীদদের লাশগুলো বসুনিয়াপাড়ার আফসার আলীর বাড়ির একটি গর্তে পুঁতে রাখে। পরবর্তীকালে লাশগুলো গর্ত থেকে উত্তোলন করে তাদের পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়৷
বাহাগীলি ইউনিয়নের শমসের সর্দার পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে যুদ্ধের সময় চাচা টোরা সর্দার ও চাচী রোকেয়া বেগমকে বসুনিয়াপাড়ার রাজাকার আবেদ হাজীর মাধ্যমে নলকুড়িপাড়ার চ্যাতনা বর্মণের বাড়ি থেকে পাকসেনাদের হাতে তুলে দেয়। পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হন উত্তর বাহাগীলির বাড়াইপাড়ার এক গৃহবধূ, দক্ষিণ বাহাগীলির মালুতি রাণী (গণধর্ষণে মৃত্যুবরণ) এবং রোকেয়া বেগম। [আহম্মেদ শরীফ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড