বলাইখা গ্রাম গণহত্যা (রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ)
বলাইখা গ্রাম গণহত্যা (রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ) সংঘটিত হয় নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এবং এতে ২০ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন।
ঘটনার দিন পাকসেনারা স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের বড় বলাইখাঁ ও টেক বলাইখা গ্রামে প্রবেশ করে। গ্রামে ঢুকেই তারা কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়। এরপর তারা একেকটি বাড়িতে ঢুকে ঘর থেকে নারী-পুরুষদের টেনে বের করে গুলি করে হত্যা করে। এভাবে হত্যা করতে-করতে তারা বড় বলাইখার দক্ষিণ দিকে চলে আসে। পাকসেনাদের ভয়ে তাঁতি চামরউদ্দিনের দুই ছেলে সোনা মিঞা ও নুরু মিঞা বড় রাস্তার পাশের দুটি তেঁতুল গাছের আড়ালে লুকায়। কিন্তু পাকসেনারা তাদের দেখামাত্রই গুলি করে এবং সেখানেই তারা দুভাই শহীদ হন। বৃদ্ধ চামরউদ্দিন পাকসেনাদের গোলাগুলির আওয়াজ শুনে তার গর্জন কাঠের লাঠিটি নিয়ে পালানোর সময় পাকসেনাদের সামনে পড়ে যান।
পাকসেনারা তার হাতে লাঠি দেখে তাকে মুক্তিযোদ্ধা মনে করে সেখানেই তাকে হত্যা করে। এদিন পাকসেনারা বড় বলাইখাঁ ও টেক বলাইখাঁ গ্রামের ২০ জন নারী-পুরুষকে হত্যা করে। তাদের মধ্যে পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রী এবং ভাইও ছিল। শহীদরা হলেন— টেক বলাইখার ওয়াজেদের ছেলে আলতাফ, হারুণ আলী, ওয়াজউদ্দীনের ছেলে নওয়াজ আলী, শাহাজউদ্দীন, শাহাজউদ্দীনের স্ত্রী মরিয়ম, অজরউদ্দীনের ছেলে আলী বখস, করিম বখস, আলালির ছেলে কমরউদ্দীন, আব্দুল করিম, ইম্মত আলীর ছেলে জাহেদ আলী, নৈমুদ্দিন, আব্দুল কাদির, বড় বলাইখাঁর চামরউদ্দিন, চামরউদ্দিনের ছেলে সোনা মিঞা, নুরু মিঞা, তামুরউদ্দীনের ছেলে শুকুর মাহমুদ, কেরামত আলীর মেয়ে লতিফা দেওয়ানি, কাদির বখসের ছেলে আব্দুল মালেক, বদরউদ্দীনের ছেলে মালেক মালু এবং ধনুর ছেলে হাসান আলী। [রীতা ভৌমিক]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড