বলাহার গণকবর (ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর)
বলাহার গণকবর (ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর) দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে দুই শতাধিক সাধারণ মানুষকে হত্যা কিরে কবর দেয়া হয়।
বাংলাদেশের অপরাপর অঞ্চলের মতো ঘোড়াঘাট উপজেলায়ও পাকবাহিনী সাধারণ মানুষের ওপর নানা অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের পরই এখানে স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে ওঠে৷ ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় ভারতের বিহার ও উত্তর প্রদেশ থেকে প্রচুর অবাঙালি এখানে এসে বসতি স্থাপন করে। তাদের অধিকাংশই বাঙালিদের স্বাধীনতার আন্দোলনকে মনে-প্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি। যে-সকল অবাঙালি আনসার ও মুজাহিদ বাহিনীতে কর্মরত ছিল, তারা মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে। পাকহানাদারদের নানাভাবে সহযোগিতা করে এবং নিজেরা নিরীহ স্বাধীনতাকামী ঘোড়াঘাটবাসীর ওপর হামলে পড়ে। তারা হত্যা, লুণ্ঠন ও নির্যাতনের মাধ্যমে ঘোড়াঘাটে এক সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা অসংখ্য সাধারণ মানুষকে হত্যা করে শহীদদের মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে রাখে। এমনি একটি স্থান হচ্ছে বলাহার গণকবর।
ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে বলাহার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। হাকিমপুর-ঘোড়াঘাট রাস্তা সংলগ্ন বলাহার আগাগোড়াই হানাদার বাহিনীর শ্যেন দৃষ্টিতে ছিল। এখানে তাদের একটি ক্যান্টনমেন্ট ছিল। তারা এপ্রিল-মে মাসে এখানে দুই শতাধিক লোককে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখে। এ হত্যাকাণ্ডে পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর -রাজাকার ও আলবদর বাহিনী অংশগ্রহণ করে। [মো. ওসমান গনী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড