বল্লভপুর বটতলা যুদ্ধ (মুজিবনগর, মেহেরপুর)
বল্লভপুর বটতলা যুদ্ধ (মুজিবনগর, মেহেরপুর) সংঘটিত হয় ২৭শে মে। এতে একজন অফিসারসহ ৫ জন পাকসেনা হতাহত হয় এবং তাদের কিছু অস্ত্র ও একটি জিপ গাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়
মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে মুক্তিযোদ্ধারা মুজিবনগরের বিপরীতে হৃদয়পুর বিএসএফ ক্যাম্পের পাশেই নিয়মিত বাহিনীর একটি একশন ক্যাম্প স্থাপন করেন। মুজিবনগর এবং এর আশপাশের গ্রামগুলো রক্ষা করা ছিল এ ক্যাম্পের প্রধান দায়িত্ব। ২৭শে মে হাবিলদার আবু তৈয়ব, সুবেদার এম এ মতিন পাটোয়ারী, হাবিলদার শামসুর রহমান, সিপাহি মোহাম্মদ আলী, আনসার সদস্য বরকত আলী, শফি, মহিসহ ১৪-১৫ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল বল্লভপুর এলাকায় টহলে আসেন। তাঁরা রতনপুর গ্রামের ওপারের নাটুদা (গচিরপাড়া) ক্যাম্প থেকে পাকবাহিনীর একটি জিপ সামনের দিকে আসতে দেখে বেলা ৩ টার দিকে বল্লভপুর- বাগোয়ান সড়কের মাঝামাঝি জায়গায় তার ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালান। মাত্র ৫০ গজের ব্যবধানে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড গুলি বিনিময় হয়। এতে জিপের মধ্যে থাকা একজন অফিসারসহ ৫ জন সৈন্য হতাহত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে নাটুদা ক্যাম্প থেকে হানাদার বাহিনীর একটি ডজ ও একটি ট্রাক ঘটনাস্থলে এসে নিহত ও আহতের তুলে নিয়ে ক্যাম্পে ফিরে যায়। শত্রুপক্ষের ভারী অস্ত্রের প্রচণ্ড গোলাবর্ষণে মুক্তিযোদ্ধারা কিছুটা পিছু হটতে বাধ্য হন। পাকবাহিনী চলে যাওয়ার পরপরই তাঁরা ফিরে এসে জিপ গাড়িটি নিয়ে যান। এ-সময় দুটি ম্যাগাজিনসহ একটি গুলিভর্তি সাব-মেশিনগান, একটি বাইনোকুলার এবং একটি মার্ক ফোর রাইফেল তাঁদের হস্তগত হয়। দখলকৃত জিপ গাড়িটি তাঁরা বেতাই লালবাজার সাব-সেক্টরে জমা দেন। [মো. জামালউদ্দিন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড