বনপাড়া মিশন গণহত্যা (বড়াইগ্রাম, নাটোর)
বনপাড়া মিশন গণহত্যা (বড়াইগ্রাম, নাটোর) সংঘটিত হয় ৩রা মে। এতে অর্ধশতাধিক মানুষ নৃশংস হত্যার শিকার হন।
১৪ই এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নাটোর শহর দখল করেই বড়াইগ্রাম, লালপুর ও সিংড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম- গঞ্জে সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন ও গণহত্যা শুরু করে। হানাদারদের নির্যাতন ও গণহত্যা থেকে জীবন বাঁচানোর জন্য এ অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক লোক বড়াইগ্রামের বনপাড়া খ্রিস্টান ক্যাথলিক মিশনে আশ্রয় নেয়। এ সংবাদ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এদেশীয় দালাল রকিবুল্লাহ মৃধা (মাঝপাড়া ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান), আখতারুজ্জামান রেকাত, আক্কাস পাটোয়ারী, আহমেদপুরের আবদুল মজিদ ও নঈম উদ্দিন তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতা নাটোরের কুখ্যাত দালাল হাফেজ আবদুর রহমান, কাঁচু উদ্দিন মোক্তার ও আঁকি চৌধুরীকে জানায়। এ তিন দালাল এ সংবাদ নাটোর হানাদার ক্যাম্পে পৌঁছায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩রা মে দুপুরে মেজর শেরওয়ানির নেতৃত্বে হানাদার বাহিনীর একটি গ্রুপ কয়েকটি জিপ ও তিনটি ট্রাকযোগে বৈদ্যনাথ প্রামাণিক (শেখচিলান, লালপুর), মোনা সরকার (পিতা রজনীকান্ত সরকার, শেখচিলান, লালপুর), অনিল চন্দ্র ঘোষ (ওয়ালিয়া, লালপুর), ভাদু ঘোষ ওরফে বাবু (ওয়ালিয়া, লালপুর), অজিত কুমার ঘোষ (ওয়ালিয়া, লালপুর), কালিপদ সরকার (কদমচিলান, লালপুর), তারাপদ সরকার (পিতা কালিপদ সরকার, কদমচিলান, লালপুর), সুকুমার সরকার (পিতা কালিপদ সরকার, কদমচিলান, লালপুর), শংকর সরকার (ওয়ালিয়া, লালপুর), চুনু সরকার (দিয়ারপাড়া, বড়াইগ্রাম), গোপাল চন্দ্ৰ দাস (পিতা গেদুচরণ দাস, দিয়ারপাড়া, বড়াইগ্রাম), গৌরচন্দ্র দাস (পিতা গেদুচরণ দাস, দিয়ারপাড়া, বড়াইগ্রাম), ঠাকুর চরণ দাস (শেলচিলান, লালপুর), নিতাই চন্দ্র দাস (শেলচিলান, লালপুর), হরিপদ দাস (পারখোলাবাড়িয়া, নাটোর), নিরাপদ দাস (পিতা হরিপদ দাস, পারখোলাবাড়িয়া, নাটোর), নিতাই চন্দ্র সরকার (পিতা হরিচরণ সরকার, পারহালসা, নাটোর), গুরুপদ সরকার (পিতা ঘেতন চন্দ্র সরকার, পারহালসা, নাটোর), রেণুপদ সরকার (পিতা ঘেতন চন্দ্র সরকা, পারহালসা, নাটোর), উপেন্দ্রনাথ সরকার (পিতা ঘেতন চন্দ্ৰ সরকার, পারহালসা, নাটোর), প্রিয়নাথ সরকার (দিয়ারপাড়া, বড়াইগ্রাম), ধীরেন্দ্রনাথ দাস (দিয়ারপাড়া, বড়াইগ্রাম), নিতাই চরণ দাস (দিয়ারপাড়া, বড়াইগ্রাম), রবীন্দ্রনাথ প্রামাণিক (পিতা হারান চন্দ্ৰ প্রামাণিক, শেখচিলান, লালপুর), ধীরেন্দ্রনাথ দাস (পিতা প্রাণনাথ দাস ওরফে পানু, শেখচিলান, লালপুর), নিখিল চন্দ্র দাস (পিতা সীতানাথ দাস, শেখচিলান, লালপুর), মানিকচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (হারোয়া, বড়াইগ্রাম), মদনকুমার পাল (হারোয়া, বড়াইগ্রাম), অক্ষয় কুমার পাল (হারোয়া, বড়াইগ্রাম), দুলাল চন্দ্র প্রামাণিক, হরিশ চন্দ্র প্রামাণিক, ভূপেশ্বর প্রামাণিক ও ননীগোপাল প্রামাণিক। সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঁচে আছেন সন্তোষ কুমার সাহা (দিয়ারপাড়া, বড়াইগ্রাম) ও অনিল চন্দ্র সরকার (কদমচিলান)। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড