You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযুদ্ধে বন্দর উপজেলা (নারায়ণগঞ্জ) - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযুদ্ধে বন্দর উপজেলা (নারায়ণগঞ্জ)

বন্দর উপজেলা (নারায়ণগঞ্জ) মুক্তিযুদ্ধের সময় নারায়ণগঞ্জ সদর থানার অন্তর্ভুক্ত ছিল। কাজেই এ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি সদর থানার সঙ্গে সম্পৃক্ত। রাজনীতি-সচেতন বন্দরের ছাত্র-জনতা ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়। বন্দরের নবীগঞ্জে ৪ঠা মার্চ আওয়ামী লীগ-এর উদ্যোগে এক বিরাট সভা অনুষ্ঠিত হয়। এলাকাবাসী লাঠি, লোহার রড ও বাঁশ নিয়ে মিছিল করে এ সভায় অংশ নেয়৷ ১৬ই মার্চ কুড়িপাড়ার মো. আব্দুস সাত্তার, মো. ফখরুদ্দিন খান এবং খতিব সৈয়দ মাহমুদ এলাকাবাসীকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে ১০ টাকা করে আর্থিক সহযোগিতার আহ্বান জানান।
মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে এম এ মতিনকে আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্যের নবীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এ ইউনিয়নের ১নং ইউনিটে আব্দুল হামিদ, ২নং ইউনিটে জয়নাল আবেদীন, ৩নং ইউনিটে আব্দুল মান্নান, ৪নং ইউনিটে সেকান্দার আলী, ৫নং ইউনিটে দীন মোহাম্মদ, ৬নং ইউনিটে অনীল চন্দ্ৰ দাস, ৭নং ইউনিটে নূরুন্নবী এবং ৮নং ইউনিটে আব্দুর রশীদকে আহ্বায়ক করে ইউনিট সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়।
নবীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদক কানন বালা বিশ্বাসের নেতৃত্বে ২২শে মার্চ শীতলক্ষ্যায় নারীরা বাঁশের লাঠি, ঝাড়ু, বটি, ছিয়া, তলোয়ার ও বল্লম হাতে এক মৌন মিছিলে অংশ নিয়ে ১নং ঢাকেশ্বরী মিলসের আওয়ামী লীগ অফিস থেকে নবীগঞ্জ পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করেন।
২৫শে মার্চ রাতে ঢাকায় পাকবাহিনীর আক্রমণের পর এখানকার ছাত্র-যুবক এবং ১নং ঢাকেশ্বরী কটন মিলসের শ্রমিকরা মিলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে। আব্দুল মতিন, কামাল ও মলয়ের নেতৃত্বে ২৬শে মার্চ ঢাকেশ্বরী মন্দিরের মাঠে ছাত্র- ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে লাঠি দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। এ প্রশিক্ষণে লক্ষ্মী চক্রবর্তী, নূপুর, জয়শ্রী বড়ুয়া, স্মৃতিকণা (উমা), মিনু দাস, রুহুল আমিন, জিয়াউল, নারায়ণ, বাবলু, সেলিম, রামপদ, সমীর প্রমুখ অংশ নেন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কর্মীরা ঢাকেশ্বরী কটন মিলসের কন্ট্রোলার আকরামের কাছ থেকে প্রশিক্ষণের জন্য কয়েকটি রাইফেল নিয়ে আসেন।
মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বে বন্দর উপজেলার যুবসমাজ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। পাকবাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করতে এলাকা থেকে বন্দুক সংগ্রহ করে সাহাবুদ্দিন, টুক্কু, দুলাল, ইদ্রিস, আক্তার, খুশু, গিয়াস ও মো. নুরুজ্জামান রাত জেগে পাহারা দিতেন। এফএফ গ্রুপ কমান্ডার মো. গিয়াসউদ্দীন কাইক্কার টেক প্রশিক্ষণ শিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেন। এ ক্যাম্পে আবুল হাশেম (পিতা আব্দুল বাসির সরদার, মনার বাড়ি), খোরশেদ আলম (পিতা আব্দুর রাজ্জাক, এইচ এম সেন রোড), দুলাল (পিতা মন্নান মুন্সি, বন্দর), গিয়াসউদ্দীন (একরামপুর) ও হাতেম (পিতা খাজা হোসেন, এইচ এম সেন রোড) প্রশিক্ষণ নেন।
বন্দরের বিএলএফ (গেরিলা কমান্ড) গ্রুপনেতা ছিলেন আব্দুর রশীদ এবং এফএফ (গণবাহিনী কমান্ড) গ্রুপনেতা ছিলেন মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া, মো. সেলিম ও মো. নজরুল ইসলাম।
৪ঠা এপ্রিল ভোরে শীতলক্ষ্যা নদী পার হয়ে -রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী বন্দরে অনুপ্রবেশ করে এবং কুড়িপাড়া স্টার পার্টিক্যাল বোর্ড মিলে ক্যাম্প স্থাপন করে। এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে মিলিশিয়া বাহিনী (রানা বাহিনী) বার্ড কোম্পানির ভেতরে ক্যাম্প করে। ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত তারা এখানেই অবস্থান করে।
এ উপজেলার রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা হলো- রফিক (কুড়িপাড়া, ধামগড়), কাশেম (মাহমুদনগর, সোনাকান্দা), সাহেব আলী (সোনাকান্দা), তাসকিন তামান্না (সোনাকান্দা), আইউব খান (সোনাকান্দা), মোহাম্মদ আলী (কদম রসুল পৌরসভার এস এস শাহ রোড), আইউব আলী (বন্দর বাজার), ফয়েজ (ত্রিবেনী পুলের পাড়), গোলাম মোস্তফা (কুড়িপাড়া, ধামগড়), আব্দুল মালেক (কুড়িপাড়া, ধামগড়), আব্দুস সামাদ (কুড়িপাড়া, ধামগড়), লতিফ সর্দার (নবীগঞ্জ), আব্দুল আজিজ সর্দার ও তার ছেলে আব্দুর রব (নবীগঞ্জ), আব্দুল হালিম (কল্যান্দী, কলাগাছিয়া), এম এ ওহাব (কল্যান্দী, কলাগাছিয়া), শুনু মিয়া (কামহারটা, কুশুরা), মুক্তা বেগম (বন্দর), মুক্তার হোসেন, খলিল প্ৰমুখ। শান্তি কমিটির সদস্য ছিল সুলতান (সোনাকান্দা)।
৪ঠা এপ্রিল ভোরে পাকসেনারা বন্দরে অনুপ্রবেশ করেই রাজাকারদের সহায়তায় বন্দর, নবীগঞ্জ ও একরামপুর গ্রামের ৫৪ জন লোককে ধরে এনে সিরাজদৌল্লা ক্লাব সংলগ্ন মাঠে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এরপর লাশের ওপর প্যাক-০৮ পাউডার ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এটি সিরাজদৌল্লা ক্লাব সংলগ্ন মাঠ গণহত্যা নামে পরিচিত। এপ্রিল মাসের এক রাতে পাকসেনাদের একটি দল মদনগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির কাছে চিত্তবাবুর বাড়িতে হানা দিয়ে তার স্ত্রী ও মেয়েকে পাশবিক নির্যাতন করে তিনজনকেই হত্যা করে। সোনাছড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ কমান্ডার আব্দুর রশীদের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে না পেয়ে (তিনি তখন ভারতে মুজিব বাহিনী-র ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন) হানাদাররা তাঁর পিতা আব্দুল খলিল, নানা ও মামাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
কদম রসুল পৌরসভার এস এস শাহ রোডের রাজাকার মোহাম্মদ আলীর সহায়তায় পাকসেনারা আওয়ামী লীগ কর্মী ছালাম মুন্সী, নবীগঞ্জের শফি চেয়ারম্যান, সোনাকান্দা ডকইয়ার্ডের ফজল ও ফকরুলকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা কমল (ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান-এ যার গান সবাইকে উজ্জীবিত করত)-কে টিএন্ডটি-র ক্যাম্পে ধরে এনে দিনের পর দিন অত্যাচার শেষে হত্যা করে। পাকবাহিনী নবীগঞ্জ বাজারে অগ্নিসংযোগ করে এবং প্রাক্তন পৌর কমিশনার দুলাল সর্দার ও তার দুই ছেলেকে হত্যা করে। তারা ঘোড়মোড়া ও মদনগঞ্জের ১৫ জন লোককে ধরে এনে গুলি করে হত্যা করে, যা মদনগঞ্জ গণহত্যা – হিসেবে পরিচিত। মিলিশিয়া কমান্ডার রানার মনোরঞ্জনের জন্য রাজাকাররা বার্ড কোম্পানির বাগানে শ্রমিক কোয়ার্টার্স থেকে জনৈক শ্রমিকের স্ত্রী কুলসুমকে ধরে আনে। দীর্ঘ আটমাস কুলসুমকে রানার সঙ্গে থাকতে বাধ্য করা হয়। রাজাকাররা অন্যান্য জায়গা থেকেও যুবতী মেয়েদের ধরে এনে পাকহানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে দিত। বন্দরের কুড়িপাড়া স্টার পার্টিক্যাল বোর্ড মিল এবং বার্ড কোম্পানি ছিল পাকবাহিনীর নির্যাতনকেন্দ্র।
১৩ই এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টায় মো. গিয়াসউদ্দিনের (নারায়ণগঞ্জ সদর) নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বন্দরের লক্ষণখোলায় পাকক্যাম্পে অপারেশন করেন। ১১ই জুন সহকারী গ্রুপ কমান্ডার মো. নুরুজ্জামান সকাল ১১টায় নবীগঞ্জ বাজার অপারেশন করেন। এতে রাজাকার দাউদ নিহত হয়। নবীগঞ্জ লোহিয়া পাট অফিস মিলিশিয়া ও রাজাকার বাহিনী পালাক্রমে পাহারা দিত। মো. গিয়াসউদ্দিনের নেতৃত্বে মো. নুরুজ্জামান, জামাল, সাহাবুদ্দীন খান, দুলাল ও আজিজ রাজাকারদের আক্রমণ করলে রাজাকার তাসকীন নিহত হয়। বন্দর থানার বিএলএফ গ্রুপ কমান্ডার আব্দুর রশীদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা নবীগঞ্জ বাজারে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার ও রাজাকার ঘাঁটিতে অপারেশন করেন। আগস্ট মাসের শেষদিকে নৌ-কমান্ডো আবিদুর রহমান আবীদের নেতৃত্বে সহ-কমান্ডো হাবিবুল হক খোকন, মেজর এমদাদ, জসীমউদ্দীন, রহিম প্রমুখ নারায়ণগঞ্জ সাইলো খাদ্যগুদাম ধ্বংসের পরিকল্পনা করেন। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে সোনারগাঁ থানা কমান্ডার আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে মদনপুর বৈদ্যুতিক তারের খুঁটি এবং বন্দর বাজারে তিন রাস্তার মোড়ে অবাঙালিদের ক্লাবে অপারেশন করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সোনারগাঁ থানার কমান্ডার আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে বন্দরের মুক্তিযোদ্ধারা মদনপুর ব্রিজে অপারেশন করেন। আগস্ট মাসে তাঁরা লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ ধ্বংস করতে ব্যর্থ হলে আবার তা ধ্বংসের পরিকল্পনা করেন। সোনারগাঁ থানার গ্রুপ কমান্ডার রতন ভূঁইয়ার গ্রুপের বিশ্বনাথ চন্দ্র শীল, শম্ভু কর্মকার, মঞ্জু মিয়া ও এয়াকুবসহ মোট ১১জন মুক্তিযোদ্ধা এবং ফুলুর গ্রুপ যৌথভাবে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ অপারেশন- পরিচালনা করে। নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বন্দরের বিএলএফ গ্রুপ কমান্ডার আব্দুর রশীদ ও সেলিম গ্রুপের মো. নুরুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন খান, আজাদ খান, আনোয়ার, কাজী নাসির, মো. নুরুল হক, মইনুদ্দীন ও মো. শফি কুড়িপাড়া স্টার পার্টিক্যাল বোর্ড মিলে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের ক্যাম্প অপারেশন করেন। এ মাসেই গ্রুপ কমান্ডার আব্দুর রশীদের নেতৃত্বে ধামগড় ইউনিয়নে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অপারেশন- পরিচালনা করা হয়। এতে ১৫ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং তাদের অস্ত্রশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। এরপর বন্দর থানার ধামগড় ইউনিয়নের কো- অপারেটিভ টেক্সটাইল মিলসের টায়ার তৈরির কারখানা ধ্বংস করা হয়।
নভেম্বর মাসে পাকবাহিনী কলাগাছিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের সংবাদ পেয়ে গ্রামবাসীদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা আক্রমণ করেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এ-যুদ্ধ চলে। কলাগাছিয়ার যুদ্ধ-এ কেউ হতাহত হয়নি। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে নৌ-কমান্ডো আবিদুর রহমান আবীদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা কলাগাছিয়ায় মিনিকিন ও মিনিলেডি নামে দুটি জাহাজ ধংস করেন। এটি কলাগাছিয়া জাহাজ অপারেশন নামে পরিচিত। ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে বুধবার সকাল ১০টায় কলাগাছিয়ায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। ৩ ঘণ্টাব্যাপী এ-যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মো. সেলিম। এ-যুদ্ধে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ডিসেম্বর মাসে রাজাকারদের প্রতিরোধ করতে মো. গিয়াসউদ্দিন, মো. সেলিম এবং মোশারফের গ্রুপসহ মোট ৫৫ জন মুক্তিযোদ্ধা কল্যান্দী নয়ানগর রেললাইনে অপারেশন করেন। ১৫ই ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী –যৌথভাবে পাকবাহিনীর ঘাঁটিতে অপারেশন করে, যা নারায়ণগঞ্জ বন্দর পাকক্যাম্প অপারেশন নামে পরিচিত। এতে মিত্রবাহিনীর ১২ জন সৈন্য শহীদ এবং ২৫ জন আহত হন। ১৬ই ডিসেম্বর বন্দর উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হলেন- আব্দুল কুদ্দুস, বীর প্রতীক (পিতা ইয়াদ আলী বেপারী, লক্ষ্মণখোলা)। বন্দর উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- আওলাদ হোসেন (লক্ষ্মণখোলা, মুছাপুর), আবু বকর সিদ্দিক (পিতা আ. করিম বেপারী, আলীনগর, কলাগাছিয়া), মো. আব্দুল আজিজ (পিতা মো. সলিমউদ্দিন, হরিপুর, মদনপুর), মো. আওলাদ হোসেন (পিতা মো. আলমাছ উদ্দিন খান, সোনাচোড়া, ধামগড়) ও আব্দুল হাই। [রীতা ভৌমিক]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড