বয়ড়াপাড়া গণহত্যা (বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ)
বয়ড়াপাড়া গণহত্যা (বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১৩ই মে। এতে ১৭ জন নিরীহ গ্রামবাসী প্রাণ হারায়। এই ১৭ জনকে বয়ড়াপাড়া গ্রাম থেকে ধরে নিয়ে সিরাজগঞ্জ ফেরিঘাটে হত্যা করলেও হত্যার ঘটনাটি বয়ড়াপাড়া গণহত্যা নামে পরিচিত।
১৩ই মে পাকসেনারা বয়ড়াপাড়া গ্রামে হানা দেয়। এ গ্রামে হানাদারদের পথ দেখিয়ে আনে শান্তি কমিটির নেতা হাফেস ওসমান গণি (রান্ধুনীবাড়ি), রাজাকার জহুরুল ইসলাম (বাওগান) ও আবদুল গফুর (নাকফাটার চর)। ভোর ৫টার দিকে হানাদাররা বয়ড়াপাড়ার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী জোতিন্দ্র মোহন সাহার বাড়ি ঘেরাও করে। এ বাড়িতে পূর্বে আশ্রয় নিয়েছিলেন সিরাজগঞ্জ শহর থেকে আসা তার কয়েকজন আত্মীয়। হানাদাররা জোতিন্দ্র সাহার বাড়ি থেকে তার পরিবারের সদস্য, কর্মচারী ও আত্মীয়-স্বজন মিলে মোট ১৭ জনকে ধরে সিরাজগঞ্জ নিয়ে যায়। বিকেলে ফেরিঘাটের জেটির ওপর দাঁড় করিয়ে গুলি করে সবাইকে হত্যা করে। এরপর সব লাশ যমুনা নদীতে ফেলে দেয়। এ গণহত্যায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন- কানাই লাল সাহা (পিতা জোতিন্দ্র মোহন সাহা, বয়ড়াপাড়া), জয় গোপাল সাহা (পিতা জ্যোতিন্দ্র মোহন সাহা, বয়ড়াপাড়া), প্রাণ গোপাল সাহা (পিতা জ্যোতিন্দ্র গোপাল সাহা, বয়ড়াপাড়া), বলাই চন্দ্র সাহা (পিতা রাধিকা লাল সাহা, বয়ড়াপাড়া), মতিলাল দে (পিতা বনবাসী দে, বয়ড়াপাড়া), যতীন্দ্রনাথ সাহা (পিতা মধু সাহা, বয়ড়াপাড়া), কালী সাহা (বয়ড়াপাড়া), ক্ষেত্রনাথ চক্রবর্তী (পিতা তুফান চক্রবর্তী, বয়ড়াপাড়া), ভবেশ সাহা (পিতা ভজ গোবিন্দ সাহা, সিরাজগঞ্জ), ভজ গোবিন্দ সাহা (সিরাজগঞ্জ), নিরঞ্জন প্রামাণিক (পিতা মাধাই প্রামাণিক, সিরাজগঞ্জ), ড. নীলমণি প্রামাণিক (পিতা মাধাই প্রামাণিক, সিরাজগঞ্জ), সেন্টু প্রামাণিক (পিতা মাধাই প্রামাণিক, সিরাজগঞ্জ), গোড়া চাঁদ প্রামাণিক (পিতা ডা. নীলমণি প্রামাণিক, সিরাজগঞ্জ), উত্তম প্রামাণিক (পিতা ডা. নীলমণি প্রামাণিক, সিরাজগঞ্জ), রবি সাহা (চর রায়পুর) ও আবদুস সোবাহান (পাঙ্গাসী)। [মাহফুজা হিলালী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড