You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.25 | বনগ্রাম গণহত্যা (নাগরপুর, টাঙ্গাইল) - সংগ্রামের নোটবুক

বনগ্রাম গণহত্যা (নাগরপুর, টাঙ্গাইল)

বনগ্রাম গণহত্যা (নাগরপুর, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় ২৫শে অক্টোবর। এতে ৫৩ জন সাধারণ মানুষ শহীদ হন। টাঙ্গাইল সদর থেকে নাগরপুরের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। নাগরপুর থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে গয়হাটা ইউনিয়নের একটি মৌজার নাম রসুলপুর বনগ্রাম। তবে মৌজাটি বনগ্রাম নামেই সমধিক পরিচিত। কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বনগ্রামে অবস্থান নেন। ২৫শে অক্টোবর এ সংবাদ জেনে হানাদার বাহিনীর একটি গ্রুপ নাগরপুর থেকে এবং অপর একটি গ্রুপ সিরাজগঞ্জ থেকে বনগ্রামে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ করে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে এক ভয়াবহ সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধে পাকবাহিনীর একজন মেজর, একজন সৈন্য ও একজন রাজাকার নিহত হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম নজু (গোহালিয়াবাড়ী, কালিহাতী, টাঙ্গাইল), জাহাঙ্গীর আলম (গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ), আখতারুজ্জামান (গজারিয়া, মুন্সিগঞ্জ), ওয়াহাব আলীসহ ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এক পর্যায়ে হানাদার বাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা টিকতে না পেরে পিছু হটলে হানাদাররা বনগ্রাম ও বৈন্যা গ্রামে গণহত্যা চালায়। তারা ১২৯টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। বর্বর হানাদাররা সেদিন গুলি করে, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে এবং আগুনে পুড়িয়ে ৫৩ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। সেদিনের গণহত্যায় যারা শহীদ হন, তারা হলেন- হাজী খোদা বখস (পিতা লবু শেখ), ঘুতু বেপারী (পিতা জব্বার আলী বেপারী), দাউদ আলী (পিতা জোমন মোল্লা), আবুল হোসেন (পিতা জোমন মোল্লা), দানেছ আলী (পিতা ছাবেদ মিস্ত্রী), করিম মিঞা (পিতা ছাবেদ আলী), আনতাব আলী (পিতা দুলাল মিঞা), ইমান আলী (পিতা হাফিজ উদ্দিন), বাইজ উদ্দিন (পিতা হাফিজ উদ্দিন), ছায়েদ আলী (পিতা কছের আলী), আলী হোসেন (পিতা নোতুব আলী), ইমান আলী (পিতা নোতুব আলী), জালাল শেখ (পিতা বাছের শেখ), আব্দুস ছাত্তার মাহমুদ (পিতা আব্দুর রহমান), শাহজাহান আলী (পিতা নূর মোহাম্মদ বাদশা), আব্দুল কাদের (পিতা গেন্দু প্রামাণিক), হোসেন আলী (পিতা রেফাজ উদ্দিন), আব্দুল কাদের (পিতা হাজী আফাজ উদ্দিন), হোসেন আলী (পিতা রেফাজ উদ্দিন), বানিজ শিকদার (পিতা শেরু শিকদার), করিম মিঞা (পিতা শুকুর আলী), হাবিবুর রহমান (পিতা শমসের আলী বেপারী), আব্দুল বারেক (পিতা বাবর আলী), ওয়াহেদ বখস (পিতা কুজু শিকদার), সোনা উল্লাহ র (পিতা মিঞা চান), রিজিয়া খাতুন (স্বামী আব্দুল বারেক), হামিদ ফকির (পিতা রহমান ফকির), হায়েদ আলী (পিতা নাড়ু শেখ), নকিব উদ্দিন (পিতা কুজু শিকদার), যোগেন্দ্র পাটুনি (পিতা মহেন্দ্ৰ পাটুনি), নেরু শেখ, শহর বানু, আব্দুল লতিফ, খন্দকার তাহেজ, হাবিবুর রহমান, আব্দুল লতিফ, আলিম উদ্দিন, মোহাম্মদ আলী, আব্দুছ সাত্তার, হারান আলী, মোফাজ্জল হোসেন, কালু শেখ, হায়দার আলী, মাকিম উদ্দিন, “রাহেজ উদ্দিন, আব্দুল করিম, বৈন্যা গ্রামের নিজাম উদ্দিন (পিতা আহাম্মদ মুনসী), হারুন-অর-রশিদ (পিতা ওসমান গণী), কজু শেখ (পিতা সোনাউলল্লাহ), আব্দুল লতিফ (পিতা জুরান আলী), বুদ্দু শেখ, ভায়েলা বিবি ও হাসেলা খাতুন। বনগ্রাম গণহত্যায় শহীদদের নামফলক স্থাপন করা ও গণকবর চিহ্নিত আছে। [শফিউদ্দিন তালুকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড