মুক্তিযুদ্ধে বদরগঞ্জ উপজেলা (রংপুর)
বদরগঞ্জ উপজেলা (রংপুর) রংপুর সদর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে রংপুর ক্যান্টনমেন্টের পশ্চিম দিকে এবং সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টের পূর্ব সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে এখানকার জনগণ আওয়ামী লীগ প্রার্থী এলাহী বকস সরকারকে এমপিএ নির্বাচিত করার পর থেকেই মূলত তাদের মধ্যে স্বাধীনতার চেতনার উন্মেষ ঘটে। পরবর্তী পরিস্থিতিতে রংপুর সদর উপজেলাকে কেন্দ্র করে এখানে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি রচিত হয়।
১লা মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করলে রংপুর শহরের ন্যায় বদরগঞ্জেও সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। ৩রা মার্চ স্থানীয় শ্যামপুর হাইস্কুল মাঠে এক সমাবেশে শ্যামপুর সুগার মিলের ম্যানেজার মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ঐতিহাসিক ভাষণ বদরগঞ্জের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশেষভাবে আন্দোলিত করে। এলাকার নেতৃবৃন্দ বদরগঞ্জকে শত্রুমুক্ত রাখার প্রত্যয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এলাহী বকস সরকার এমপিএ-কে আহ্বায়ক এবং মজিবর রহমান মাস্টার ও আব্দুল জব্বার সরকারকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে একটি সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যদের মধ্যে আফতাব উদ্দিন আহমেদ, খোরশেদ লোহানী, কাজী আফসার উদ্দিন, মমিন চৌধুরী, সুধীর চন্দ্র সেন, জয়নাল আবেদীন, কমরেড জিতেন্দ্র দত্ত, ডা. আব্দুর রউফ শাহ, শরীফ খান, হাজী ধলু মিয়া, আতোশ খান, ডা. আব্দুল খালেক, হিরা শাহ, হাজী মহসীন আলী, হাজী মোসলেম উদ্দিন, মাহতাব আলী সরকার, আবুবকর প্রামাণিক, খালেক শাহ, আবুল মনসুর আলী প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। এঁদের নেতৃত্বে পরিচালিত বিভিন্ন আন্দোলন- সংগ্রামে অর্থায়ন করতেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জগন্নাথ আগরওয়াল। রাজনীতিবিদ মোহাম্মাদ আলী সরকারের বাসভবন থেকে সংগ্রাম কমিটির কার্যক্রম পরিচালিত হতো। বদরগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেও সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়েছিল। সেগুলোর সদস্যরা ছিলেন- মো. হাজী মোসলেম উদ্দীন সরকার, মো. মেসের উদ্দীন সরকার, মো. জাফর আলী সরকার, আমজাদ হোসেন প্রমুখ (রাধানগর), মো. ফজলার চৌধুরী, মো. আ. খালেক, শাহ্ মোহাম্মদ, মো. আবুল হোসেন প্রমুখ (গোপীনাথপুর), মো. আব্দুর সরকার, মো. রউফ প্ৰামাণিক, মো. আজিতুল্লাহ মাস্টার, মো. আব্দুর রশিদ প্রমুখ (রামনাথপুর), মো. নজরুল ইসলাম, হাজী মো. মনসুর আলী, আব্দলি বাকী প্রামাণিক, আবু বক্কর প্ৰামাণিক প্রমুখ (দামোদরপুর), মো. সুজা উদ্দীন চৌধুরী, মো. আবুল হোসেন, কাজী আবসার উদ্দীন, মো. মকবুল হক প্রামাণিক প্রমুখ (মধুপুর), সহিদার রহমান মেম্বার, শাহ্ মো. তৈয়ব উদ্দীন, কমরেড ছয়ের উদ্দীন, মো. আবদউস সাত্তার প্রমুখ (গোপালপুর), আবুল হোসেন, হাজী মো. মজিবুর রহমান, রামপ্রসাদ, লাড্ডু সিং প্রমুখ (কুতুবপুর), মো. মজিবর রহমান, মো. ফরাজ উদ্দীন গাছুয়া, ডা. ইদ্রিস আলী প্রমুখ (বিষ্ণুপুর), ডা. ক্ষিতীশ চন্দ্র রায়, করিম উদ্দীন, হাফিজার রহমান, অমল চন্দ্র প্রমুখ (লোহনীপাড়া)।
বদরগঞ্জ উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের কোনো কেন্দ্র ছিল না। তাই এ এলাকার ছাত্র- যুবকরা ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে এসে ৬ নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
বদরগঞ্জে প্রধান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ছিলেন আফজাল হোসেন (পার্বতীপুর, বদরগঞ্জ কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক)। এছাড়া ছিলেন আব্দুল জব্বার সরকার (বদরগঞ্জ, পাঁচবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান), সুধির কৃষ্ণ সেন ওরফে মোন্তা সেন (বদরগঞ্জ), আবু বকর প্রামাণিক (বদরগঞ্জ) এবং আফসার উদ্দিন।
রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও কর্মসূচিতে বদরগঞ্জ উপজেলার সংগ্রামী সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। ২৬শে মার্চ সংগ্রাম কমিটির নেতা মজিবর রহমান মাস্টারের সভাপতিত্বে সকালে শ্যামপুর চিনিকল মাঠে এবং বিকেলে শ্যামপুর হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানানো হয়। এজন্য ব্যাপক প্রচারকার্যও চালানো হয়। লোহানীপাড়া, কুতুবপুর ও গোপালপুর এলাকার কমরেড ছয়ের উদ্দিন, সহিদার রহমান, আবুল হোসেন, বরকা সরেন, সরদার মার্ডি, হাফিজার রহমান, রামপ্রসাদ, আব্দুল মজিদ মাস্টার, ইয়াছিন মেম্বর প্রমুখ ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও কর্মসূচির জন্য জনমত গঠন ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত দল গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
২৮শে মার্চ বাঙালি জনগণের সঙ্গে সাঁওতাল নেতা বরকা সরেন ও সর্দার মার্ডির নেতৃত্বে দুই শতাধিক সাঁওতাল আদিবাসী তীর-ধনুকসহ ঢোল বাজিয়ে ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাওয়ে অংশ নেয়। কিন্তু পাকবাহিনীর আধুনিক অস্ত্রের সামনে তারা অসহায় হয়ে পড়ে। পাকসেনাদের গুলিতে আব্দুল কাদের খরিয়া (পিতা জমির উদ্দিন, গোপালপুর) ও আলাউদ্দিন মিয়া (পিতা ছোবহান উদ্দিন, পূর্ব শিবপুর)-সহ অনেক সাধারণ মানুষ শহীদ এবং আমিরুল ইসলাম (পিতা নফল উদ্দিন, পূর্ব শিবপুর) ও শাহ আলম ওরফে বানু (পিতা শাহানতুল্লাহ, নন্দনপুর)-সহ শতশত মানুষ আহত হয়।
৮ই এপ্রিল পাকবাহিনী বদরগঞ্জে অনুপ্রবেশ করে বদরগঞ্জ থানায় ক্যাম্প স্থাপন করে। পরবর্তীতে রাজাকাররা বদরগঞ্জ বন্দরে জগদীশ প্রসাদের বাড়িটি দখলে করে সেখানে একটি ক্যাম্প স্থাপন করে।
বদরগঞ্জে কিছু অবাঙালির বসবাস ছিল। মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই তারা পাকবাহিনীর সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছিল। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বদরগঞ্জে শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়। এ দু-বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বাচ্চা মিয়া পাইকার (বদরগঞ্জ থানা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান), ওহিদুল হক চৌধুরী (বদরগঞ্জ থানা শান্তি কমিটির সহ-সভাপতি ও মুসলিম লীগ- নেতা), মীর আফজাল হোসেন (বদরগঞ্জ থানা শান্তি কমিটির সেক্রেটারি ও জামায়াতে ইসলামী- নেতা), সদস্য ডা. আব্দুল বারী (বদরগঞ্জ), আবুল হোসেন (কুতুবপুর), সোলায়মান দাড়িয়া ওরফে সোলায়মান পাইকার (সাহেবগঞ্জ)-এর নাম উল্লেখযোগ্য।
রাজাকারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল হারুন (লালদীঘি), শমসের আলী (রাজারামপুর), কসির আলী চাঁদ (শাহপুর), মোহাম্মদ আলী (মধুপুর), রহিম বখস মণ্ডল (মধুপুর), জহুরুল হক (আমরুলবাড়ি), নজরুল হক মাস্টার (শেখের হাট), মফিউদ্দিন ঘাটিয়াল (গোপালপুর), জামাল লোহানী (লোহানীপাড়া), মোফাজ্জল হোসেন (বদরগঞ্জ), রহিম উদ্দিন (শ্যামপুর সুগার মিলের কর্মকর্তা), সাদেক আলী (কাটাবাড়ি), আব্দুল হোসেন (জগদীশপুর), আজদার আলী (জগদীশপুর), আব্দুস সালাম (কাটাবাড়ি), দবির উদ্দিন, আব্দুল মজিদ, নাজির হোসেন প্রমুখ।
বদরগঞ্জ উপজেলায় স্বাধীনতাবিরোধীদের সকল তৎপরতার মূলে ছিল এ টি এম আজহারুল ইসলাম (বর্তমানে যুদ্ধাপরাধের দায়ে গ্রেপ্তার হয়ে বিচারের সম্মুখীন)। সে ছিল ইসলামী ছাত্র সংঘ- রংপুর শাখার নেতৃস্থানীয় এবং -আলবদর বাহিনীর নেতা। সে মুক্তিযোদ্ধা, তাঁদের আত্মীয়-স্বজন, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও সংখ্যালঘুদের তথ্যাদি সংগ্রহ করে পাকসেনাদের নিকট পৌঁছে দিত এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করত। এ-সময় সে ১৫০ সিসি-র একটি মটর সাইকেলে পাকিস্তানি পতাকা উড়িয়ে বিভিন্ন এলাকায় রাজাকার ও অন্য সহযোগীদের কর্মতৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করত। অপর নেতা আবুল কাসেমের সহায়তায় টেডি মাওলানা নুরুল ইসলাম বদরগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তি জগদীশ প্রসাদের বাড়িটি দখল করে এবং রাজাকাররা সেটি ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করত। অবাঙালি বাচ্চু খান (পার্বতীপুর)-এর নেতৃত্বে বহিরাগাত অনেক রাজাকার বদরগঞ্জে আসত। অপর অবাঙালি কামরুজ্জামান (পার্বতীপুর) ছিল তার অন্যতম সহযোগী। এদের সহায়তায় অল্প সময়ের মধ্যে বদরগঞ্জে সহস্রাধিক প্রশিক্ষিত পাকদোসরদের একটি বাহিনী গড়ে ওঠে।
৮ই এপ্রিল বাচ্চু খান ও কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে স্থানীয় অবাঙালি রাজাকার বাহিনী ভবানীপুর, রমানাথপুর, লালদীঘি ও রামনাথপুর এলাকায় ব্যাপক লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ১৫ই এপ্রিল পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা রামনাথপুর ইউনিয়নে অগ্নিসংযোগ করে এবং জুম্মুন, বাউরা, কাইলটা ও কান্দু নামে চারজন গ্রামবাসীকে হত্যা করে। ১৬ই এপ্রিল পাকবাহিনী ও ইসলামী ছাত্র সংঘের নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা রংপুর থেকে ট্রেনযোগে বদরগঞ্জে আসে এবং মকছেদপুর এলাকার দিকে যাওয়ার সময় দু-পাশের ঘরবাড়িতে লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করে। বদরগঞ্জ থানা সংগ্রাম কমিকটির সদস্য মাহতাব আলী সরকার ও খোরশেদ লোহানীকে স্থানীয় দালালরা বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে।
বদরগঞ্জ উপজেলায় দুটি গণহত্যা সংঘটিত হয় ধাপপাড়া গণহত্যা ও ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর গণহত্যা। ধাপপাড়া গণহত্যা সংঘটিত হয় ১৬ই এপ্রিল। এদিন পাকবাহিনী হঠাৎ রামনাথপুর ইউনিয়নের ধাপপাড়া গ্রামে গাড়ি থামিয়ে নিরীহ জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে ১১ জন গ্রামবাসী শহীদ হন। ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর গণহত্যা সংঘটিত হয় ১৭ই এপ্রিল। এদিন পাকবাহিনী রামনাথপুর ইউনিয়নের ১৫-১৬টি গ্রামে একত্রে আক্রমণ চালায়। আত্মরক্ষার্থে দেড় সহস্রাধিক মানুষ ঝাড়ুয়ার বিল ও পদ্মপুকুর নামক স্থানে এসে জড়ো হলে পাকবাহিনী তাদের ওপর গুলি চালায় এবং তাঁরা শহীদ হন।
বদরগঞ্জ বন্দরে স্থাপিত রাজাকার ক্যাম্পে বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মীয়-স্বজন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের ধরে এনে নির্যাতন চালানো হতো।
৯ই এপ্রিল ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার একটি গ্রুপের সঙ্গে পাকবাহিনীর এক ভয়াবহ যুদ্ধ হয়, যা বদরগঞ্জ যুদ্ধ- নামে পরিচিত। এ-যুদ্ধে ৩ জন ইবিআর-সহ ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ক্যাপ্টেন আনোয়ার হানাদারদের গুলিতে আহত হন। ১৬ই ডিসেম্বর বদরগঞ্জ উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- বাতেন সরকার, বীর প্রতীক (পিতা আবদুল কুদ্দুস সরকার, ছিটলক্ষ্মণপুর), ও মো. হারিছ মিয়া, বীর প্রতীক (পিতা আহম্মদ হোসেন, বসন্তপুর)।
বদরগঞ্জ উপজেলায় তিনজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম পাওয়া গেছে, তাঁরা হলেন- গোলাম মোস্তফা (পিতা মোফাজ্জল হোসেন, মানসিংহপুর), ওয়াহিদুল হক (পিতা রহিমউদ্দিন শাহ, খোদবাগবাড়) ও শাহজাহান আলী (পিতা আব্দুল গফুর, রামনাথপুর)
১৭ই এপ্রিল ঝাড়ুয়ারবিল-পদ্মপুকুর গণহত্যায় শহীদ বদরগঞ্জ হাইস্কুলের শিক্ষক মেনহাজ উদ্দিন ও প্রাণকৃষ্ণ রায়ের নামে বদরগঞ্জে শহীদ মিনহাজ সংঘ ও শহীদ প্রাণকৃষ্ণ রায় পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া রামনাথপুর ইউনিয়নের ঘাটাবিলে শহীদ স্মৃতি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠত হয়েছে। [মো. মেছের উদ্দিন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড