বড়বামনদহ গ্রাম অপারেশন (কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ)
বড়বামনদহ গ্রাম অপারেশন (কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ) পরিচালিত হয় ১৭ই অক্টোবর থেকে ২৩শে অক্টেবর পর্যন্ত। এতে দুটি টেলিফোন পোল ধ্বংস এবং একাধিক স্থানে রেললাইন তুলে ফেলা হয়৷
বড়বামনদহ কোটচাঁদপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত একটি গ্রাম। কোটচাঁদপুর শহর থেকে ১ কিলোমিটার পূর্বে সরকারি কে এম এইচ ডিগ্রি কলেজের উত্তর দিকে এর অবস্থান। এ গ্রামের দক্ষিণ দিক দিয়ে পূর্ব- পশ্চিম বরাবর খুলনা-রাজশাহী রেললাইন চলে গেছে। এখানে কালীগঞ্জ-কোটচাঁদপুর-জীবননগর-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়ক অবস্থিত।
জুলাই মাসের দিকে সেক্টরভিত্তিক গেরিলা আক্রমণ শুরু হয়। অক্টোবর মাসে তা আরো তীব্রতর হতে থাকে। এ অবস্থায় পাকিস্থানি বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন স্থানে ক্যাম্প স্থাপন এবং টহলের ব্যবস্থা করে। সে-সময় রাজাকাররা বড়বামনদহ গ্রামে ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধাদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারদের অবাধ চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। অতঃপর পাকিস্তানি বাহিনীর যোগাযোগ বিঘ্নিত করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তাঁরা ১৭ই অক্টোবর মহেশপুর উপজেলাধীন সুন্দরপুর গ্রামে দুটি টেলিফোন পোল ধ্বংস করেন। ২০শে অক্টোবর রাত আড়াইটার দিকে বড়বামনদহ সংলগ্ন রাঙিয়ারপোতা এলাকায় ২০০ গজ রেললাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। ২১শে অক্টোবর দুপুরের দিকে মন্টু বিশ্বাসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বড়বামনদহ গ্রামের বিশ্বাস বাড়িতে উপস্থিত হয়ে রাজাকারদের ওপর আক্রমণের প্রস্তুতি নিলে তারা টের পেয়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়। এরপর রেলপথে পাকিস্তানি বাহিনীর যাতাযাত বিঘ্নিত করার উদ্দেশ্যে ২৩শে অক্টোবর রাত ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা বড়বামনদহ সংলগ্ন ২০০ গজ রেললাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। [দেব নারায়ণ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড