বড়খেরী গণহত্যা (রামগতি, লক্ষ্মীপুর)
বড়খেরী গণহত্যা (রামগতি, লক্ষ্মীপুর) সংঘটিত হয় ৫ই জুলাই থেকে ১২ই জুলাই পর্যন্ত। লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলাধীন বড়খেরী ইউনিয়নের নাথ ও রঘুনাথপুর গ্রামে এ গণহত্যা সংঘটিত হলেও এটি বড়খেরী গণহত্যা হিসেবেই সমধিক পরিচিতি। পাকিস্তানি হানাদাবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনী এ গণহত্যা ঘটায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় রামগতি ছিল নোয়াখালী জেলার একটি থানা। এর অবস্থান মেঘনা নদীর কোলঘেঁষা উপকূলীয় অঞ্চলে। নদীর পাশেই হিন্দু অধ্যুষিত বড়খেরী ইউনিয়ন অবস্থিত। এ ইউনিয়নের দুটি গ্রামের নাম নাথ ও রঘুনাথপুর। জুন মাসের শেষার্ধে পাকবাহিনী স্টিমারযোগে রামগতিতে আসে এবং রামগতি থানার সন্নিকটস্থ বড়খেরী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ধর্ষণ ও গণহত্যা চালায়। ৫ই জুলাই থেকে ১২ই জুলাই পর্যন্ত তারা নাথ ও রঘুনাথপুর গ্রামে অর্ধশতাধিক নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। শহীদদের মধ্যে ২২ জনের নাম- পরিচয় জানা গেছে। তাঁরা হলেন- হরি কমল নাথ (পিতা রায়মোহন নাথ), পরেশ চন্দ্র নাথ (পিতা শচীন্দ্র নাথ), গিরীন্দ্র কুমার নাথ, সুখেন্দু কুমার (পিতা ভারত চন্দ্র দেবনাথ), হীরালাল নাথ, বেনু শীল (পিতা সুরেন্দ্র কুমার শীল), শচীন্দ্র কুমার নাথ, গৌরাঙ্গ চন্দ্র শীল (পিতা সুরেন্দ্র কুমার শীল), রাজমোহন নাথ (পিতা ভারত চন্দ্র দেবনাথ), মোয়াজ্জেম হোসেন (পিতা গোলাপ রহমান), সামছুল হক মাশু (পিতা আবদুল কাদের), পূর্ণ চন্দ্ৰ নাথ (পিতা সত্যনারায়ণ দেবনাথ), মুকুন্দ কর্মকার, শংকর চন্দ্র দাস (পিতা মনোরঞ্জন দাস), জিতেন্দ্র চন্দ্র দাস (পিতা রজনী কান্ত দাস), যোগেশ (পিতা বগলা চরণ), সুধামণি দত্ত (স্বামী অখিল দত্ত), চিন্তা হরণ দাস, সুরেশ চন্দ্ৰ দাস, উদয় তারা শীল, কানন বালা দাস (স্বামী প্রহ্লাদ চন্দ্র দাস) ও মেরী বালা দাস (স্বামী পরেশ চন্দ্র দাস)। এঁদের মধ্যে প্রথম ১৬ জন নাথ গ্রামের এবং শেষের ৬ জন রঘুনাথপুর গ্রামের। [শাহ আবদুল মাজেদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড