বড় মহেশখালী হিন্দুপাড়া ও মুন্সির ডেইল গণহত্যা (মহেশখালী, কক্সবাজার)
বড় মহেশখালী হিন্দুপাড়া ও মুন্সির ডেইল গণহত্যা (মহেশখালী, কক্সবাজার) সংঘটিত হয় ৬ই ও ৭ই মে। এ হত্যাকাণ্ডে ২০-২৫ জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারায়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের স্থানীয় দোসরদের মাধ্যমে ৬ই মে বড় মহেশখালী ইউনিয়নে আক্রমণ চালায়। হানাদার বাহিনী হিন্দুপাড়ায় মনোহরী দে (পিতা উমাচরণ দে), যোগেন্দ্র শীল ও তার পিতা রাখাল শীল এবং রাজবংশী শীলের পুত্র অর্জুন শীলসহ অনেককে হত্যা করে। মনোহরী দে বাঁশঝাড়ে লুকিয়ে থেকেও রেহাই পায়নি। অর্জুন শীল গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসার অভাবে ৭-৮ দিন পর মৃত্যুবরণ করে। এ গণহত্যায় শহীদ সকলের পরিচয় জানা যায়নি।
পরদিন ৭ই মে পুনরায় হানাদার বাহিনী বড় মহেশখালীর হিন্দুপাড়ায় আক্রমণ করে এবং আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী, হিন্দু ব্যবসায়ীদের বাড়িঘর ও দোকান-পাট আগুনে পুড়িয়ে দেয়। বৃদ্ধ সনাতন দে-কে তার দোকানে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে। আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য আবুল খায়ের ও মোহাম্মদ জাফরকে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। মোজাহের মিয়ার ছোট ভাই শামসুল ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট সিরাজুল মোস্তাফার চাচা আব্দুস সাত্তারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া আরো কয়েকজন ঐদিন শহীদ হন।
বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মুন্সির ডেইল এলাকায় স্বাধীনতাকামী মোহাম্মাদুল হকের পুত্র আওয়ামী লীগের নেতা আবদুস ছাত্তার এবং কমল মিয়ার ভাই দিনু মিয়াকে পাকহানাদাররা গুলি করে হত্যা করে। হানাদার বাহিনীর স্থানীয় দোসররা সম্পত্তি দখলের লোভে এসব হত্যাকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ রয়েছে। দুদিনের গণহত্যায় ২০-২৫ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়। এ গণহত্যায় শহীদদের বড় মহেশখালী হিন্দুপাড়া শ্মশানে এবং মুন্সির ডেইল গণকবরে সমাহিত করা হয়। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড