বক্সনগর জেলেপাড়া গণহত্যা (নবাবগঞ্জ, ঢাকা)
বক্সনগর জেলেপাড়া গণহত্যা (নবাবগঞ্জ, ঢাকা) ১০ই মে সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় মাঝিপাড়ার হিন্দু জেলে সম্প্রদায়ের ১২ জন সাধারণ মানুষ শহীদ এবং কয়েকজন আহত হন।
নবাবগঞ্জ উপজেলার বক্সনগর জেলেপাড়ার (মাঝিপাড়া) গণহত্যার দিন সকালে বাগমারা বাজারে পাকসেনারা জ্বালাও-পোড়াও শেষে ডা. মঙ্গল চন্দ্র সাহাকে গুলি করে হত্যা করে। অতঃপর তারা নবাবগঞ্জের স্কুলে ফিরে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে বিকেলে তাদের স্থানীয় দোসর ও রাজাকার বাহিনীর সদস্য বক্সনগরের মহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে সোনা মিয়া (পিতা খয়ের উদ্দিন আহমেদ), জালাল চরের আদম আলী, মতি মিয়া (পিতা ইস্যু দারোগা, বক্সনগর), সালাউদ্দিন ভূঁইয়া (পিতা সামছুউদ্দিন, বক্সনগর), আবদুস সোবাহান (পিতা শহর আলী, বর্ধনপাড়া), খলিল আহমেদ (পিতা হুসেন ড্রাইভার, বক্সনগর), জানে আলম ভূঁইয়া (পিতা আমজাদ ভূঁইয়া, বক্সনগর) প্রমুখের পরামর্শে এবং আগলার কাকাতোয়া ও অপর এক ব্যক্তির সহযোগে পাকসেনারা রাইফেল ও স্টেনগান দ্বারা ছোট বক্সনগর হিন্দু মাঝি পাড়া মন্দিরের আশপাশের গ্রামবাসীদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। পাকসেনাদের গুলিতে ১২ জন লোক শহীদ হন। তারা হলেন— গণেশ চন্দ্র রাজবংশী (পিতা হরেন্দ্র রাজবংশী, ছোট বক্সনগর, মাঝিপাড়া), লক্ষ্মণ চন্দ্ৰ রাজবংশী (পিতা ফটিক রাজবংশী, ছোট বক্সনগর, মাঝিপাড়া), প্রাণবল্লভ রাজবংশী (পিতা দুর্যোধন রাজবংশী, বক্সনগর, মাঝিপাড়া), বীরেন্দ্র রাজবংশী (পিতা নবদ্বীপ রাজবংশী), কালাচান রাজবংশী (পিতা লালমোহন রাজবংশী), রাজু ফকির (পিতা ঈশ্বর রাজবংশী), সতীশ রাজবংশী (পিতা জলধর রাজবংশী), ক্ষেত্রমোহন রাজবংশী (পিতা জলধর রাজবংশী), ননীগোপাল রাজবংশী (পিতা যামিনী রাজবংশী, কোমরগঞ্জ), সূর্যমোহন রাজবংশী (পিতা মরণচান রাজবংশী, কোমরগঞ্জ), কানাই (পিতা গদাধর রাজবংশী) ও ১ জন অজ্ঞাতনামা। গণহত্যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেকে আহত হন। তাদের মধ্যে দুজন হলেন- সীতানাথ রাজবংশী ও চৈতন্য রাজবংশী। গণহত্যার পর গ্রামবাসী শহীদদের মৃতদেহ মন্দিরের পাশে গণকবরে সমাহিত করে। [মো. আনোয়ার হোসেন ও আব্দুল মালেক সিকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড