You dont have javascript enabled! Please enable it! বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবী ফুলরেণু গুহ - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবী ফুলরেণু গুহ

ফুলরেণু গুহ, পদ্মভূষণ (১৯১১-২০০৬) ভারতের শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবী। তিনি ১৯১১ সালের ১৩ই আগস্ট পূর্ব বাংলার বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সুরেন্দ্রনাথ দত্ত ও মাতার নাম অবলাবালা দত্ত।
১৯৩৪ সালে স্নাতক পাশ করার পর তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৩৫ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়
পরবর্তীতে প্যারিস এবং থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯২৬ সালে তিনি প্রথমে যুগান্তর পার্টিতে এবং পরবর্তীকালে কংগ্রেসে যোগ দেন। ১৯৩৮ সালে ভারতে ফিরে তিনি ব্রিটিশবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। বাংলায় দুর্ভিক্ষের সময় (১৯৪১- ৪৩) তিনি দুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। ১৯৪৬ সালে তিনি মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে নোয়াখালী ও দেশের বিভিন্ন স্থান সফর করে জনসচেতনা সৃষ্টি করেন। দেশবিভাগের পর তিনি দুর্গত নারী ও শিশুদের পুনর্বাসনের কাজে নিয়োজিত হন। ১৯৪৫ সালে তিনি বিজ্ঞানী ড. বীরেশ চন্দ্র গুহর সঙ্গে পরিণয়ে আবদ্ধ হন।
ড. ফুলরেণ ১৯৬৪-৭০ সময়ে লোকসভার সদস্য, ১৯৬৭- ৬৯ সময়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সরকারের আইন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ২০০৬ সালের ২৮শে জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে ড. ফুলরেণু গুহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। ভারতীয় কংগ্রেস কর্তৃক গঠিত কমিটির সভাপতি হিসেবে তিনি সীমান্তবর্তী এলাকার শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী-র কাছে প্রতিবেদন পেশ করেন। তিনি ঢাকুরিয়া জঙ্গলে স্থাপিত কর্মকুঠি-তে বাংলাদেশ থেকে আগত নারী শরণার্থীদের যুদ্ধ-প্রশিক্ষণের পাশাপাশি হাতের কাজ ও সেলাই শেখার ব্যবস্থা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালের ২০শে অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ড. ফুলরেণু গুহ, পদ্মভূষণ-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড