ফেনী খাল যুদ্ধ (মাটিরাঙ্গা, খাগড়াছড়ি)
ফেনী খাল যুদ্ধ (মাটিরাঙ্গা, খাগড়াছড়ি) সংঘটিত হয় ১৭/১৮ই জুলাই। কয়েক ঘণ্টা ধরে এ-যুদ্ধ চলে। মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসেনা কোনো পক্ষের কেউ হতাহত হয়নি। এক পর্যায়ে পাকবাহিনী পিছু হটে।
ভারতের ত্রিপুরায় ট্রেনিং শেষে বিভিন্ন গ্রুপের এক দল মুক্তিযোদ্ধা ১নং সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলামের নির্দেশে সম্মিলিতভাবে দেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানি শত্রুঘাঁটিতে আক্রমণের জন্য নিজেদের এলাকা তবলছড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রুপে নেতৃত্বে ছিলেন- ২০৯নং প্লাটুন কমান্ডার কাবিল মিয়া, ৯৩নং প্লাটুন কমান্ডার আলী আশরাফ, ২১০নং প্লাটুন কমান্ডার সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরা ও ইপিআর-এর নায়েক সুবেদার খায়রুজ্জামান। তাঁদের প্রত্যেকের গ্রুপে গড়ে ২৫-৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এসব মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে খলিলুর রহমান, ইউনুস মিয়া, রফিক, নজরুল ইসলাম, কালা মিয়া, আবদুল মান্নান, হাবিল মিয়া, আবদুল কাদের, মো. আলী, আবুল মিয়া, কঠিন কুমার ত্রিপুরা, শান্তি রঞ্জন প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।
জুলাইয়ের ১৭/১৮ তারিখ বিকেলের দিকে মুক্তিযোদ্ধারা বর্ডার দিয়ে ফেনী খাল পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে গেলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা পাকিস্তানি বাহিনী তবলছড়ি হাসপাতাল, কুমিল্লা টিলা ও সিংহপাড়া নামক তিনটি স্থান থেকে তাঁদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। পাকিস্তানি বাহিনীর মূল গ্রুপ তখন অবস্থান করছিল ডাকবাংলো এলাকায়। মুক্তিযোদ্ধারা ফেনী খালের মধ্যে ছিলেন বলে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ করে তেমন সুবিধা করতে পারেনি। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা গুলি চালান। সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত থেমে-থেমে আক্রমণ-পাল্টাআক্রমণ চলে। যুদ্ধে কেউ হতাহত হয়নি। এক পর্যায়ে পাকিস্তানিরা পিছু হটে। [ইয়াসিন রানা সোহেল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড