You dont have javascript enabled! Please enable it!

ফুটকিবাড়ি হত্যাকাণ্ড (বোচাগঞ্জ, দিনাজপুর)

ফুটকিবাড়ি হত্যাকাণ্ড (বোচাগঞ্জ, দিনাজপুর) সংঘটিত হয় মে মাসের বিভিন্ন সময়ে। এতে ১৪ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়।
বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগর ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত একটি গ্রাম ফুটকিবাড়ি। উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে টাঙ্গন নদীর পশ্চিম পাড়ে গ্রামটি অবস্থিত। গ্রামটিতে রয়েছে বড় একটি শালবন, যার দক্ষিণ ও পূর্বে লোক বসতি গড়ে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ গ্রামের তিনটি পাড়ার ১৪ জন নিরীহ মানুষ পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের হাতে নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বী। নিহতরা হলেন- বনরাম রায় ওরফে পানিয়া রায় (৪২) (পিতা মনসা রায়), পবেন চন্দ্র রায় (৪০) (পিতা মনসা রায়), ফুলমোহন রায় (৪২) (পিতা পয়া রায়), খর্গমোহন রায় (৩৫) (পিতা হেদল রায়), নগেন্দ্রনাথ সরকার (৩৪) (পিতা দগদু সাহা), নেভুয়া রাম রায় (২৬) (পিতা দিনরাম রায়), নরেন রায় (২৫) (পিতা নাথুরাম রায়), বুধমোহন রায় (২৮) (পিতা ভেদুয়া রায়), বিসারু রায় (২৬) (পিতা চান্দা রায়), গণেশ রায় (২২) (পিতা নেভু রায়), অদি মোহন রায় (১৮) (পিতা ভুটিরাম রায়), সরিপ চন্দ্র রায় (২৬), আব্দুস সাত্তার (২৩) (পিতা আহম্মেদ হোসেন মেম্বার, কংশরা) এবং আজিজুর রহমান ওরফে টুনিয়া মাস্টার (৪১) (পিতা শুকুরু প্রধান, টেনা)। এলাকার কুখ্যাত রাজাকার আক্কেল আলী (জাবারিপুর), হাকিম (টেনা), শহিদুল (কংশরা) ও শামসুদ্দিন বিহারি (সেতাবগঞ্জ)-র প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী কাউকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে, কাউকে এখান থেকে ধরে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে, কাউকে কাঁসার থালা গরম করার পর শরীরে ছেঁকা দিয়ে, কাউকে বুক পর্যন্ত জীবন্ত মাটিতে পুঁতে মাথায় গরম পানি ও ভাতের গরম মাড় ঢেলে পৈশাচিকভাবে হত্যা করে। টেনার আজিজুর রহমান ওরফে টুনিয়া মাস্টারকে হত্যা করা হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম কাঁসার থালার ছেঁকা দিয়ে। কংশরার আব্দুস সাত্তারকে হত্যা করা হয় বুক পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে মাথায় গরম পানি ও ভাতের গরম মাঢ় ঢেলে। সেতাবগঞ্জ সুগার মিলের প্রাক্তন ক্লার্ক ফুটকিবাড়ির নগেন্দ্রনাথ রায় ও তার কাকাত ভাই খৰ্গমোহন রায়কে হত্যা করা হয় সেতাবগঞ্জ-পীরগঞ্জ সড়কের টাঙ্গন নদীর সেতুর নিচে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে। এভাবে হত্যা করার পর হানাদাররা নিহতদের বাড়িঘর লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!