You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.08 | প্রসন্নপুর-আহম্মদনগর গণহত্যা (শাহরাস্তি, চাঁদপুর) - সংগ্রামের নোটবুক

প্রসন্নপুর-আহম্মদনগর গণহত্যা (শাহরাস্তি, চাঁদপুর)

প্রসন্নপুর-আহম্মদনগর গণহত্যা (শাহরাস্তি, চাঁদপুর) সংঘটিত হয় ৮ই ডিসেম্বর। এতে ৩৩ জন গ্রামবাসী শহীদ এবং শতাধিক আহত হন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকসেনারা শেষবারের মতো শাহরাস্তি থানাধীন রায়শ্রী (দক্ষিণ) ইউনিয়নের অন্তর্গত প্রসন্নপুর গ্রাম এবং এর খিলাবাজার ও কাইথড়া (যার বর্তমান নাম আহম্মদনগর) এসেছিল ৮ ও ৯ই ডিসেম্বর। ৮ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা ভারতীয় বিমান বাহিনীর আক্রমণে লাকসাম থেকে বিতাড়িত হয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা অতর্কিতে আক্রান্ত হয়। এতে ১ জন পাকসেনা নিহত ও কয়েকজন আহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রসন্নপুর এবং আহম্মদনগর গ্রামদুটিতে বীভৎস হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয়। তারা গ্রামদুটিকে পুড়িয়ে দেয়। পাকবাহিনী এছাড়াও অন্যান্য গ্রামের নিরীহ লোকজনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং জানমালের প্রভূত ক্ষতিসাধন করে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডে স্বাধীনতা প্রাপ্তির উষালগ্নে ৩৩ জন শহীদ এবং শতাধিক আহত হন (প্রসন্নপুর হত্যাকাণ্ডে শহীদদের জন্য দ্রষ্টব্য প্রসন্নপুর গণকবর। তাদের নির্মমতার হাত থেকে বাঁচার জন্য এলাকাটি হয়ে পড়েছিল জনমানবশূন্য। ডাকাতিয়া নদীর ধারে এম্বুশ করে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে শেষ পর্যন্ত পর্যুদস্ত হয়ে পাকবাহিনী পালিয়ে যায় এবং পথিমধ্যে ৩ জন ধরা পড়ে। তাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা একজনকে হত্যা করেন আর অপর দুজনকে ভারতীয় বাহিনীর হাতে তুলে দেন।
আহম্মদনগর (কাইথড়া)-এর শহীদগণ হলেন- টুকু গাজী (পিতা হামিদ আলী), হাছান আহমেদ, আবদুস সাত্তার, রমজান আলী (এ ৩ জনের পিতা আবদুল আজিজ), ওসমান আলী (পিতা ছিয়া গাজী), মোহাম্মদ আলী (পিতা ওসমান আলী), খুরশিদা বেগম, কুলছুম বেগম, রাবিয়া বেগম (এ ৩ জনের পিতা মো. আলী), মোশারেফ হোসেন, আছমাতের নেছা (এ ২ জনের পিতা আয়ুব আলী), আবু তাহের, হাছান মিয়া, রৌশনারা বেগম (এ ৩ জনের পিতা রমজান আলী), রঞ্জন বানু, শাফিয়া বেগম (এ ২ জনের পিতা জয়নাল আবেদিন), নুরুল ইসলাম, রাবিয়া বেগম (এ ২ জনের পিতা আলী আকবর), জাকির হোসেন (পিতা আবদুল মালেক), আবদুল মজিদ (পিতা ইয়াছিন), কালা মিয়া (পিতা আবদুল মজিদ), রফিকুল ইসলাম, আবুল বাশার, ফাতেমা ও আছিয়া বেগম। এছাড়া প্রসন্নপুর গ্রামের আরো ৩ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোককে পাকিস্তানি হানাদাররা হত্যা করে। [মো. মিজানুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড