পোমরা গণহত্যা (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম)
পোমরা গণহত্যা (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম) সংঘটিত হয় ২১শে জুলাই সন্ধ্যা ৭টায়। এতে পোমরার শান্তিরহাটের মধুরাম তালুকদার পাড়ার ১৫ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন। রাঙ্গুনিয়ার সবচেয়ে আলোচিত গণহত্যা পোমরা গণহত্যা। পোমরা গ্রাম সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকারআলবদররা পোমরা গ্রামের শান্তিরহাটের হিন্দু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে। রাজাকাররা পাকসেনাদের সেখানে নিয়ে যায় এবং নিরীহ সাধারণ মানুষদের নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করে। পোমরা ইউনিয়নের গোছরা নামক স্থানে কর্ণফুলী নদীর উত্তর পাড়ে পোমরা বনবিট অফিস থেকে ৫০ গজ দক্ষিণ-পশ্চিমে টিলার ঢালু ভূমি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকারদের সহযোগিতায় ২১শে জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় পোমরা গিয়ে ব্যাপক নির্যাতন, লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এ-সময় তারা পোমরার মধুরাম তালুকদার পাড়া থেকে বহু মানুষকে ধরে নিয়ে আসে এবং পোমরা উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশে ১৫ জনকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনপূর্বক গুলি করে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা দেয়। এখানে শহীদ ১৫ জনের মধ্যে ১৩ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- মন্টু আইচ (পিতা যতীন্দ্র আইচ, শান্তিরহাট; ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী), গান্ধী দাশ (পিতা যুগেন্দ্র দাশ, শান্তিরহাট, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী), রমণী মোহন দাশ (পিতা নগেন্দ্ৰ দাশ; ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী), হরিপদ দাশ (পিতা নগেন্দ্র দাশ, শান্তিরহাট; ছাত্র), জগৎচন্দ্র দাশ (পতা অনু দাশ, শান্তিরহাট; ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী), বাবুল দাশ (পিতা অখিল চন্দ্ৰ দাশ, শান্তিরহাট; ছাত্র), বিরাজ মোহন দাশ (পিতা অশ্বিনী দাশ, শান্তিরহাট; শিক্ষক), বোছা দাশ (পিতা মণীন্দ্র দাশ, শান্তিরহাট), ফকির চান দাশ (পিতা রামকৃষ্ণ দাশ, শান্তিরহাট; ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী), খোকা দাশ (পিতা ধীরেন্দ্র দাশ, শান্তিরহাট; চাকরিজীবী), দুলাল দাশ (পিতা হরিকৃষ্ণ দাশ, শান্তিরহাট; ছাত্র), শচীন্দ্র দাশ (পিতা বিপিন দাশ, শান্তিরহাট; চাকরিজীবী) ও বাবুল দাশ (পিতা হরেকৃষ্ণ দাশ, শান্তিরহাট; চাকরিজীবী)। শহীদদের স্মরণে এখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড