You dont have javascript enabled! Please enable it!

পোমরা পাওয়ার লাইন অপারেশন (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম)

পোমরা পাওয়ার লাইন অপারেশন (রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। এর ফলে চট্টগ্রাম শহর ১৭ দিন অন্ধকার অবস্থায় ছিল।
প্রশিক্ষণ শেষ করে জুলাই মাসের শেষদিকে রাঙ্গুনিয়ার নূরুল আলমের নেতৃত্বে বিএলএফ গ্রুপের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা রাঙ্গুনিয়ায় আগমন করেন। তাঁর গ্রুপের সদস্যরা ছিলেন- ডেপুটি কমান্ডার আমীন শরীফ (রাঙ্গুনিয়া), আবু বকর সিদ্দিক (মুন্সিগঞ্জ), নূরন্নবী (রাঙ্গুনিয়া), বাদশা আলম (রাঙ্গুনিয়া), তিমির আইচ (রাঙ্গুনিয়া), আবু তাহের (রাঙ্গুনিয়া), হেমন্ত দাশ (রাঙ্গুনিয়া), শংকর সাহা (রাঙ্গুনিয়া), মোরশেদ আলম (রাউজান), পরিমল সাহা (পটিয়া), আবদুল আজিজ (বরিশাল), দুলাল বড়ুয়া, মণীন্দ্র বড়ুয়া, অমর বড়ুয়া, কালাঞ্জয় চাকমা, উদয়শংকর বড়ুয়া প্রমুখ। এঁদের সঙ্গে নিয়ে ক্যাপ্টেন করিমের নেতৃত্বে ১৪ই আগস্ট পোমরা পাওয়ার লাইন অপারেশন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। অপারেশনের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের দিন সমস্ত চট্টগ্রাম শহর অন্ধকার করে দেয়া। কিন্তু বিভিন্ন অসুবিধার কারণে নির্ধারিত সময়ে তা করা সম্ভব হয়নি। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আবার এ অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়। বোয়ালখালীর বামপন্থী নেতা আবুল হাসান ও তার দল, আ হ ম নাসির উদ্দিনের দল, পটিয়ার অধ্যাপক শামসুল ইসলামের দল এবং আরো অনেকের সম্মিলিত শক্তি নিয়ে ক্যাপ্টেন করিম অভিযানের উদ্দ্যোগ নেন। এতসব শক্তি সঞ্চয়ের প্রয়োজন ছিল এজন্য যে, পাকিস্তানি হানাদারদের প্রতি-আক্রমণের সম্ভাবনা ছিল। কারণ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি কল-কারখানায় হানাদারদের ক্যাম্প ছিল। খুব সীমিত বিস্ফোরক নিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকি সহকারে মুক্তিযোদ্ধারা পাওয়ার লাইনের করডেক্সে অগ্নিসংযোগ করে দৌড়ে এসে যখন একটি টিলার ওপর ওঠেন, তখন পাওয়ার লাইনে বিস্ফোরণ ঘটে এবং মুহূর্তের জন্য চারদিকে আলোকিত হয়ে যায়। অভিযান শেষে ক্যাপ্টেন করিম সহযোদ্ধাদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা জগদানন্দ বড়ুয়া (সংগীত শিল্পী) ও মাস্টার জীবনানন্দ বড়ুয়ার বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ অপারেশনের ফলে চট্টগ্রাম শহর ১৭ দিন অন্ধকারে ছিল। [জগন্নাথ বড়ুয়া]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!