You dont have javascript enabled! Please enable it!

পূর্বপাড়া ওয়ারলেস কেন্দ্ৰ গণহত্যা (ইটনা, কিশোরগঞ্জ)

পূর্বপাড়া ওয়ারলেস কেন্দ্ৰ গণহত্যা (ইটনা, কিশোরগঞ্জ) সংঘটিত হয় ২৬শে আগস্ট। এতে অনেক মানুষ শহীদ হন।
২৬শে আগস্ট ছিল ইটনার সাপ্তাহিক বাজারের দিন। বিকেলে পাকিস্তানি সেনাদের একটি দল এসে বাজারে প্রবেশ করে। ইটনার রাজাকার-প্রধান দেওয়ান আব্দুর রহিম তাদের স্বাগত জানায়। বাজারে ঢুকেই পাকস্তানি সৈন্যরা বেপরোয়া লাঠিপেটা শুরু করে। এখানে সাধু নামে একজনকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। এরপর তারা বাজারের পার্শ্ববর্তী ঋষিপাড়া, কামারপাড়া, কুমারপাড়া ও মধ্যগ্রামে হামলা চালায়। এসব জায়গা থেকে হিন্দু- মুসলমান, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেককে ধরে নিয়ে তারা পূর্বপাড়া ওয়ারলেস কেন্দ্রে যায় এবং তাদের ওপর প্রথমে শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে তাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে। এতে অনেকে প্রাণ হারান। পরে মৃতদেহগুলো হাওরে ভাসিয়ে দেয়া হয়। মারাত্মকভাবে আহতদের কেউ-কেউ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে প্রাণে বেঁচে গেলেও সারা জীবনের জন্য তাদের পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়। পূর্বপাড়া ওয়ারলেস কেন্দ্রে নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেন— যোগেন্দ্র ঋষি (পিতা শুধু ঋষি, মধ্যগ্রাম), সুশিলা রানী দাস (স্বামী গুরুচরণ রায়, মধ্যগ্রাম), প্রহ্লাদ চন্দ্র পাল (পিতা প্রকাশ চন্দ্র পাল, মধ্যগ্রাম), যাদব চন্দ্র সাহা (পিতা দীনেশ চন্দ্র সাহা, মধ্যগ্রাম), রফু মিয়া (পিতা রিয়াজ আলী, পূর্বগ্রাম), বাবুল চন্দ্র সাহা (পিতা যাদব চন্দ্র সাহা, মধ্যগ্রাম), লক্ষ্মীকান্ত সাহা (পিতা বিষ্ণুচরণ সাহা, মধ্যগ্রাম), শয়ন লক্ষ্মী সাহা (স্বামী দীনেশ চন্দ্র সাহা, মধ্যগ্রাম), মনোরঞ্জন পাল (পিতা কালাচান পাল, মধ্যগ্রাম), মিছির আলী (উদিয়ারপাড়), অক্ষয় কর্মকার (পিতা গঙ্গাচরণ কর্মকার, মধ্যগ্রাম), মন দয়াল কর্মকার (পিতা নকুল কর্মকার, মধ্যগ্রাম), ইন্দ্রজিৎ কর্মকার (পিতা জগৎ কর্মকার, মধ্যগ্রাম), কার্তিক পাল (পিতা মণীন্দ্র পাল, মধ্যগ্রাম), ধরণী পাল (পিতা ললিত পাল, মধ্যগ্রাম), সাধু (মধ্যগ্রাম) ও ওয়াজ উদ্দিন (উদিয়ারপাড়)। [মো. রওশন আলী রুশো]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!