পুরুখ্যা বাহিনী (নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান)
পুরুখ্যা বাহিনী (নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান) বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) ভিত্তিক একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী। ১৯৪৮ সালে বার্মা স্বাধীনতা লাভের পর গঠিত হয় বার্মা মুজাহিদ বাহিনী। বার্মা মুজাহিদ বাহিনী ১৯৪৮ সাল থেকে আরাকানের স্বাধীনতা দাবি করে আসছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ ও বার্মার সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় বার্মা মুজাহিদ বাহিনী, আরাকান মুজাহিদ বাহিনী ইত্যাদি বার্মাভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতা চালায়। এসব সংগঠনের সদস্যরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজ করত। এরা স্থানীয়ভাবে ‘পুরুখ্যা বাহিনী’ নামে পরিচিত ছিল। পুরুখ্যা বাহিনী মূলত রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের পূর্ববর্তী সংস্করণ। এরা মুসলিম জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। পুরুখ্যা বাহিনী পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদরআলশামস বাহিনীকে সহায়তা প্রদান করত। এরা সম্মিলিতভাবে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী নানা অপরাধ করত। পাকিস্তান, সৌদি আরব, লিবিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ পুরুখ্যা বাহিনীর বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনকে অর্থসহায়তা প্রদান করত। মুক্তিযুদ্ধকালে কোথাও-কোথাও পুরুখ্যা বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সরাসরি সংঘর্ষ হয়। [অনির্বাণ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড