You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.08.24 | পুরুরা গণহত্যা (কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ) - সংগ্রামের নোটবুক

পুরুরা গণহত্যা (কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ)

পুরুরা গণহত্যা (কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ) সংঘটিত হয় ২৪শে আগস্ট। কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার এ গ্রামের অনেক তরুণ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কাজল কুমার দত্ত চৌধুরী (পিতা সুশীল কুমার দত্ত চৌধুরী), আবদুল কাহহার আকন্দ (স্বাধীনতার পরে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এএসপি ও পরে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা), আবু আকন্দ, খালেকুজ্জামান, সৈয়দুজ্জামান, আসাদুজ্জামান রেনু প্রমুখ। পুরুরার পার্শ্ববর্তী করগাঁও-র রাজাকার শামসুদ্দিন ও তার সহযোগীরা এঁদের পাকিস্তান বিরোধিতার প্রতিশোধ নিতে ২৪শে আগস্ট পাকসেনাদের নিয়ে পুরুরা গ্রামে হানা দেয়। এদিন তারা গ্রামের শতাধিক বাড়িঘরে আগুন দেয় এবং এলোপাতাড়িভাবে গুলি চালায়। ফলে, প্রাণভয়ে মানুষ পালাতে শুরু করে। হানাদাররা পলায়নপর নিরীহ গ্রামবাসীদের যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই গুলি করে হত্যা করেছে। তাদের গুলিতে বিভিন্ন বয়সের অন্ততপক্ষে ৫০জন মানুষ প্রাণ হারান। এ গণহত্যায় নিহতদের মধ্যে যাঁদের পরিচয় জানা গেছে, তাঁরা হলেন- শেখর রঞ্জন দত্তচৌধুরী (পিতা সুশীল কুমার দত্তচৌধুরী), তাঁর ছোটভাই তপন কুমার দত্তচৌধুরী (কটিয়াদী কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র), সোনা মিয়া (পিতা সুরুজ আলী, কৃষক), আবদুর রহমান (পিতা মমতাজ মিয়া, ক্ষৌরকার), আফিল উদ্দিন (পিতা ওয়াহেদ আলী, কৃষক), মো. ইবরাহিম (পিতা আউসী মিয়া, কৃষক), মকসুদ আলী (পিতা মালু হোসেন, কৃষক), শামসুদ্দিন (পিতা মফিজ উদ্দিন, কৃষক), মো. ফৈজুদ্দিন (পিতা আজিম উদ্দিন, কাপড় ব্যবসায়ী), তাইজুদ্দিন (পিতা ছাদির উদ্দিন), মমতাজ খন্দকার মন্তু (পিতা দুদু খন্দকার, কৃষক), মো. বেচু মিয়া (কাপড় ব্যবসায়ী), বলু হোসেন (পিতা সৈয়দ আলী), শমসের (পিতা ফচু মিয়া, দিনমজুর), মনাফ মুন্সী (পিতা কাদির মুন্সী), তাহের উদ্দিন (পিতা আবদুল করিম, দিনমজুর), আবদুর রাজ্জাক (পিতা নজু মিয়া) এবং আলী (পিতা মো. ফকু মিয়া)। এদিন হানাদারদের গণহত্যা থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরাও রেহাই পাননি। গ্রামের ফকু মিয়ার পুত্র আলী ছিলেন একজন ধার্মিক এবং পাকুন্দিয়া থানার তারাকান্দি গ্রামের বিশিষ্ট আলেম ও পীর মওলানা আবদুল হালিম হোসাইনীর মুরিদ। তিনি নিজ গ্রামের মেস্তরীবাড়ি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ও খাদেমের দায়িত্ব পালন করতেন। ঘাতকরা তাঁকেও গুলি করে হত্যা করে। [মো. রফিকুল হক আখন্দ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড