পুলিশ লাইন্স অপারেশন (রাজশাহী সদর)
পুলিশ লাইন্স অপারেশন (রাজশাহী সদর) পরিচালিত হয় ২৩শে জুন। এর ফলে বিদেশীরা জানতে পারে যে, বাংলাদেশে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলমান।
মুক্তিযোদ্ধাদের তৎপরতা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করার জন্য ২৪শে জুন বিদেশী সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী আসার খবর ভারতের লালগোলায় অবস্থিত মুক্তিবাহিনীর কাছে পৌঁছে যায়। লালগোলা সাব-সেক্টরের ক্যাপ্টেন বজলুর রশিদ বিদেশী সাংবাদিকদের উপস্থিতির সময় রাজশাহী শহরে ব্যাপক বোমা হামলার সিদ্ধান্ত নেন। উদ্দেশ্য, পরিস্থিতি যে মোটেই স্বাভাবিক নয় তা প্রমাণ করা। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি ১৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি দল গঠন করেন। এ দলের কমান্ডার নিযুক্ত হন আব্দুল গফুর। তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে কোর্ট ও সার্কিট হাউজ এলাকা এবং পাওয়ার হাউজে গ্রেনেড ছুড়ে মারার সিদ্ধান্ত হয়। সে মোতাবেক ২৩শে জুন রাত ১১টার দিকে প্রথম দল রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ৪টি গ্রেনেড চার্জ করে। প্ৰথম দল গ্রেনেড চার্জ করার সঙ্গে-সঙ্গে পদ্মার চরে অবস্থানকারী আর্টিলারি বাহিনী চরাঞ্চল থেকে সার্কিট হাউজের পরিবর্তে পুলিশ লাইন্স লক্ষ করে ব্যাপক শেলিং করে। তৃতীয় দলও সফলভাবে পাওয়ার হাউজে গ্রেনেড চার্জ করে। এভাবে কয়েকস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রেনেড বিস্ফোরণ এবং বিপরীতে পাকসেনাদের চরাঞ্চল থেকে পুলিশ লাইন্সের দিকে শেল নিক্ষেপের ফলে বিদেশী সাংবাদিকদের বুঝতে বাকি থাকে না যে, মুক্তিযুদ্ধ চলছে। মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যও সফল হয়। [মো. মাহবুবর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড