পুটিবিলা পালপাড়া গণহত্যা (মহেশখালী, কক্সবাজার)
পুটিবিলা পালপাড়া গণহত্যা (মহেশখালী, কক্সবাজার) সংঘটিত হয় ৬ই মে। এ গণহত্যায় ৩০ জনের অধিক মানুষ শহীদ হন।
মহেশখালী পৌর এলাকার পুটিবিলা পালপাড়ায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ৬ই মে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় গণহত্যা চালায়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এদিন হানাদাররা পুটিবিলা পালপাড়ায় অভিযান চালায়। পুটিবিলা পালপাড়া প্রবেশ পথে মথুরা পালের ভিটার নিকট বিলে গরুকে ঘাস খাওয়ানো অবস্থায় কালু পালকে পাকিস্তানি সৈন্যরা ডাকলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। হানাদারার এ-সময় তাকে গুলি করলে সঙ্গে-সঙ্গে তিনি নিহত হন। দুদিন তার লাশ সেখানে পড়েছিল। হানাদাররা ও তাদের দোসররা পুটিবিলা পালপাড়ায় অভিযান চালিয়ে অনেক বাড়িঘর লুণ্ঠন করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। হানাদারদের গণহত্যায় পুটিবিলা পালপাড়ার শহীদ চাঁদ বদন পালের স্ত্রী বাসনী পাল এবং চাঁদ বদন পালের কন্যা প্রভা রাণী পাল অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
পালপাড়া গণহত্যায় ৩০ জনের অধিক মানুষ শহীদ এবং অনেকে আহত হন। শহীদদের মধ্যে ১৪ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন— পুটিবিলা পালপাড়ার কৃষ্ণ চরণ পাল (পিতা দিগম্বর চন্দ্র পাল), ভুপেন চন্দ্র পাল (পিতা দিগম্বর চন্দ্র পাল), ক্ষিরোদ চন্দ্র পাল (পিতা ষষ্ঠিচরণ পাল), সতীন্দ্র কুমার পাল কালু (পিতা তারেক চন্দ্র পাল), চাঁদ বদন পাল (পিতা ঈশ্বর পাল), বাসনী রানী পাল (স্বামী চাঁদ বদন পাল), প্রভা রাণী পাল (পিতা চাঁদ বদন পাল), সুমন পাল লাতু (পিতা মনমোহন পাল), চন্দন চন্দ্র পাল, ব্রজেন্দ্র মোহন দে, প্রসন্ন কুমার পাল, জগবন্ধু দে, সুরেন্দ্র দে ও নয়ন রাণী পাল। গণহত্যার পর শহীদদের পুটিবিলা পালপাড়া শ্মশানে সমাহিত করা হয়। সেখানে তাঁদের নামফলক বসানো রয়েছে। [জগন্নাথ বড়ুয়া]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড