পিটিআই-পর্যটন রেস্ট হাউস-কলেজ কোয়ার্টার্স বধ্যভূমি (মৌলভীবাজার সদর)
পিটিআই-পর্যটন রেস্ট হাউস-কলেজ কোয়ার্টার্স বধ্যভূমি (মৌলভীবাজার সদর) মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়।
মৌলভীবাজারে পাকবাহিনীর ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার্স ছিল প্রাইমারি টিচার্স টেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই), পার্শ্ববর্তী পর্যটন রেস্ট হাউস ভবন ও মৌলভীবাজার কলেজের স্টাফ কোয়ার্টার্স এলাকায়। এখানে প্রায় ৫০ একর পাহাড়ি ভূমির ওপর পাকসেনারা তাদের ব্রিগেড স্থাপন করে। ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার্সকে তারা বধ্যভূমিতে পরিণত করে।
ছোট-ছোট টিলা নিয়ে গঠিত এলাকাটি তখন ঘন গাছপালা, লতাপাতা ও জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। পিটিআই-এর দুটি ভবনের মাঝখানের খালি স্থানে মাটির নিচে পাকবাহিনী দুকক্ষবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করে। এ ভবনে ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার ইফতেখার রানা থাকত। এখানে নারীদের ধরে এনে নির্যাতন করা হতো। সারা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাধীনতার পক্ষের লোকজনকে ধরে ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার্সে এনে বন্দি করে রাখা হতো। পর্যটন রেস্ট হাউসকে তারা বন্দিশালা হিসেবে ব্যবহার করত। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে তথ্য আদায়ের জন্য বন্দিদের ওপর নির্যাতন চালানো হতো। এসব বন্দির অনেককে পরে গুলি করে হত্যা করে লাশ কুয়ার ভেতরে অথবা পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে ফেলে দিত। এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের সর্বত্র একাত্তরের শহীদদের রক্ত মিশে আছে। পুরো এলাকা তখন বধ্যভূমি ছিল। এ বধ্যভূমিতে বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়। মৌলভীবাজার থেকে পাকহানাদার বাহিনী পালাবার আগের দিন কলেজ স্টাফ কোয়ার্টার্সের পূর্বপাশে বন্দি ১২১ জনকে হত্যা করে। [আবদুল হামিদ মাহবুব]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড