পিয়ারপুর নদীর ঘাট বধ্যভূমি (জামালপুর সদর)
পিয়ারপুর নদীর ঘাট বধ্যভূমি (জামালপুর সদর) জামালপুর সদরে অবস্থিত। পাকসেনারা বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষকে ধরে এনে এখানে হত্যা করে। জামালপুর সদর উপজেলাধীন ইটাইল ইউনিয়নের একটি ছোট গ্রাম পিয়ারপুর। পিয়ারপুর নামটি বহুল পরিচিত, কারণ এখানে একটি রেল স্টেশন রয়েছে। জামালপুর- ময়মনসিংহের প্রায় মাঝামাঝি স্থানে এর অবস্থান। পিয়ারপুর রেলস্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের মতো উত্তর-পূর্বে পিয়ারপুর মহারাজ শশীকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত (বর্তমান উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ)। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ বিদ্যালয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প ছিল। বিদ্যালয়টি তিন রাস্তার মোড়ের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত। এর সামনে দিয়ে পূর্ব-পশ্চিমমুখী রাস্তা রয়েছে। রাস্তার উত্তর পাশ দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ বয়ে গেছে। পিয়ারপুর গ্রামে বহু মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এখানে কোনো রাজাকার ছিল না। অন্য এলাকার রাজাকারআলবদররা এখানকার পাকসেনাদের ক্যাম্পে যাতায়াত করত।
বিদ্যালয় থেকে এক কিলোমিটারের মতো পশ্চিমে রাস্তার দক্ষিণ পার্শ্বে একটি পুরাতন গোরস্থান রয়েছে। গোরস্থানটি পিয়ারপুর গ্রাম সংলগ্ন মির্জাপুর গ্রামের মধ্যে পড়েছে। শশীকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় ও পুরাতন গোরস্থানের প্রায় মাঝামাঝি স্থানের উত্তর পার্শ্বে ছিল নদীর ঘাট। এক সময় এ নদীর ঘাটে বড়বড় নৌকা ভিড়ত। এ ঘাটেই পাকসেনারা বিভন্ন এলাকা থেকে লোকজন ধরে এনে হত্যা করত। বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা বহুদূর সরে গেছে। নদীর ঘাটেরও কোনো নিশানা নেই। যেখানে নদীর ঘাট ছিল, সেখানে এখন জনবসতি। স্থানীয় অধিকাংশ বাসিন্দাও নদীর ঘাটের বধ্যভূমি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়। [আহমদ আজিজ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড