বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের পিয়োটর কিরিলোভিচ কোসেভয়
পিয়োটর কিরিলোভিচ কোসেভয় (১৯০৪-১৯৭৬) সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বর্ণাঢ্য সৈনিক জীবনের অধিকারী, মার্শাল পদে পদোন্নতিলাভকারী, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে বঙ্গোপসাগরে পাকিস্তানের সমর্থনে মার্কিন ৭ম নৌবহরের বিপরীতে সোভিয়েত ৬ষ্ঠ নৌবহর নিয়ে অবস্থান গ্রহণকারী ও দৃঢ়ভাবে হুমকি মোকাবেলায় সক্ষম ও বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’য় ভূষিত।
পিয়োটর কিরিলোভিচ কোসেভয় ১৯০৪ সালের ২১শে ডিসেম্বর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমানে ইউক্রেন)- এর খেরসন প্রশাসনিক আঞ্চলিক ইউনিটের অন্তর্গত ওলেক্সান্ড্রিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৯ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯২০ সালে তিনি রাশিয়ার রেড আর্মিতে যোগদান করেন। ১৯৩২ সালে তিনি আর্মার্ড কমান্ডারস এডভান্সড ট্রেনিং কোর্স (কেইউকেএস) সম্পন্ন করেন। সেনাবাহিনীতে তিনি বিভিন্ন সময় গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত থেকে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ সৈনিক জীবনে তিনি ১৯৪০ সালে কর্নেল, ১৯৪২ সালে মেজর জেনারেল, ১৯৪৪ সালে লেফটেন্যান্ট জেনারেল, ১৯৫৪ সালে কর্নেল জেনারেল, ১৯৬৪ সালে আর্মি জেনারেল এবং ১৯৬৮ সালে মার্শাল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। বর্ণাঢ্য সৈনিক জীবনে তিনি ২ বার “হিরো অব দ্য সোভিয়েত ইউনিয়ন’, ৫ বার ‘অর্ডার অব লেনিন’, ৩ বার ‘অর্ডার অব দ্য রেড ব্যানার’সহ আরো অনেক পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ১৯৭৬ সালের ৩০শে আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে পিয়োটর কিরিলোভিচ কোসেভয় সোভিয়েত ইউনিয়নের মার্শাল পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে মার্কিন ৭ম নৌবহর বঙ্গোপসাগর অভিমুখে যাত্রা করলে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের ৬ষ্ঠ নৌবহরসহ ভারত মহাসাগরে পৌঁছে যান এবং হুমকি মোকাবেলায় দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০১২ সালের ২৭শে মার্চ পিয়োটর কিরিলোভিচ কোসেভয়-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৬ষ্ঠ খণ্ড