পারপাড়া গণহত্যা (সরিষাবাড়ী, জামালপুর)
পারপাড়া গণহত্যা (সরিষাবাড়ী, জামালপুর) সংঘটিত হয় ২৬শে জুলাই। ২৫শে জুলাই পারপাড়া প্রতিরোধযুদ্ধ-এর প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা এ গণহত্যা চালায়। এদিন তাদের নির্মম আক্রমণে গ্রামের শতাধিক লোক প্রাণ হারায়।
বেলা সাড়ে ১১টার সময় পাকহানদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকারআলবদররা আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পারপাড়া গ্রামের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুরো গ্রাম হানাদারদের নারকীয় তাণ্ডবে বিরান ভূমিতে পরিণত হয়। তারা গ্রামে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। গুলিতে গ্রামের শতাধিক লোক নিহত হন। তাদের গুলিতে মেধাবী ছাত্র আতাউর রহমান ও তার পরিবারের অন্য ৪ জন নিহত হন। সেদিন শিশু, নারী, যুবক, বৃদ্ধ কেউ রেহাই পায়নি। শুধু হত্যা নয়, তারা পুরো গ্রামে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগও করে। হানাদারদের আক্রমণ থেকে গ্রামের একটি ঘরও অক্ষত থাকেনি। তাদের দেয়া আগুনের লেলিহান শিখায় সমগ্র গ্রাম ভস্মীভূত হয়। পারপাড়া গণহত্যা এবং লুণ্ঠনে রাজাকার, আলবদর ও শান্তি কমিটির সদস্যরা সম্পৃক্ত ছিল। শান্তি কমিটির সদস্য ও শীর্ষ দালাল নূরুল ইসলাম খান, মৌলানা বাহাউদ্দিন, প্রিন্সিপাল আশরাফ ফারুকী, বাদশাহ হাজী, আ. গফুর মাস্টার ও আব্দুস সামাদ মৌলভী পারপাড়া গণহত্যা ও লুণ্ঠনে অংশগ্রহণ করে।
পারপাড়া গণহত্যায় নিহত শতাধিক লোকের মধ্যে ২১ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- মো. হজরত আলী, মো. রস্তম আলী শেখ, মো. যদু আকন্দ, মো. নীল মাহমুদ সরকার, মো. ছলিম উদ্দিন সরকার, মো. আতাউর রহমান, মো. খোকা মিয়া, মো. ভোলা মিয়া, মো. মহর উদ্দিন, মো. নাহের উদ্দিন মণ্ডল, মো. তৈয়ব আলী মণ্ডল, মো. সৈয়দ আলী মণ্ডল, মো. আব্দুস সাত্তার, মো. ইস্তুলা মাঝি, মো. ইন্তু মুসুল্লী, মো. অরবুলা শেখ, খোকা ঘোষ, জিতেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ, মো. কালা চাঁন মিয়া, মো. আব্দুল মণ্ডল ও মো. বদর উদ্দিন মণ্ডল। [এ এইচ এম মাছুদুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড