You dont have javascript enabled! Please enable it!

পারবোয়ালিয়া ও পারনওগাঁ পূর্বপাড়া বধ্যভূমি (নওগাঁ সদর)

পারবোয়ালিয়া ও পারনওগাঁ পূর্বপাড়া বধ্যভূমি (নওগাঁ সদর) নওগাঁ সদর উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে বহু লোককে হত্যা করা হয়েছে। ৩০শে এপ্রিল ৩ জন অবাঙালি সোবহান বিহারী, রসগুল্লি ও সালাউদ্দিন বোয়ালিয়া গ্রামের মির্জা দীন মোহাম্মাদকে ধরে এনে পার নওগাঁ মধ্যপাড়ায় জবাই করে হত্যা করে। দীন মোহাম্মাদের লাশ ৩২ টুকরা অবস্থায় তার পরিবারবর্গ উদ্ধার করে।
৭ই নভেম্বর পাকহানাদার বাহিনী অবাঙালি রাজাকার ও মিলিশিয়া বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি বড় দল নিয়ে নওগাঁ ও সান্তাহার থেকে জয়বাংলা হাট ও পারবোয়ালিয়ায় দ্বিমুখী আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে তারা গ্রামের বেশকিছু সংখ্যক নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। নিহতরা হলো- জগদেব প্রসাদ, ঝাড়ু মণ্ডল, দিলবর রহমান দিলু, মেহের শাহ, আজিবর রহমান, আজবুল সরদার, সামসুল হাটু, কাদির সরদার, আসাদুল, সজীব সাহা, করিম উদ্দিন, দিবর সরদার, ইশরদ মণ্ডল, মেহের আলী সাহা প্রমুখ। হতাহতের খবর পেয়ে কমান্ডার জালাল হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা সঙ্গে-সঙ্গে ঘটনাস্থলে পাকসেনাদের মুখোমুখি হন। এক পর্যায়ে হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ ও প্রতিরোধে টিকতে না পেরে পিছু হটে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত যুদ্ধ স্থায়ী হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে কয়েকজন রাজাকার ও ১ জন মিলিশিয়া পুলিশ নিহত হয়। হানাদার বাহিনী পিছু হটাকালে কিছুসংখ্যক সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে যায়। ধৃতদের বোয়ালিয়ার জয়বাংলা মাঠে নিয়ে হত্যা করে। বোয়ালিয়া গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন মোল্লা ও নীলচাঁদ প্রামাণিকের স্ত্রী ময়না বিবিকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করে। পারনওগাঁ পূর্বপাড়ার মকবুল হোসেন, ওসমান আলী সরদার, আশরাফ আলী, আলাউদ্দিন মণ্ডল ও মজিবর রহমান মণ্ডলকে তারা হত্যা করে। হত্যার পর তাদের লাশ হানাদার বাহিনী পারনওগাঁ পূর্বপাড়ার বধ্যভূমিতে ফেলে দেয়। [আইয়ুব হোসেন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!