পাঠানটুলির কাবুলি আস্তানা অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর)
পাঠানটুলির কাবুলি আস্তানা অপারেশন (চট্টগ্রাম মহানগর) পরিচালিত হয় অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে। চট্টগ্রাম শহরের পাঠানটুলি খান সাহেব উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে একটি দোতলা বাড়িতে (ডা. বাতেনের চেম্বার ভবন) কতিপয় কাবুলিওয়ালার বসবাস ছিল। এ বাড়িতে এক সময় পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা তাদের আস্তানা গড়ে তোলে। এখান থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সাহায্যকারীদের সম্পর্কে তথ্যাদি সরবরাহ করা হতো। এক পর্যায়ে স্থানীয় অবাঙালি রাজাকার জামসেদ খান এ আস্তানার সঙ্গে যুক্ত হয়। তার প্রভাবে রাজাকাররা বাঙালিদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন চালাত। তাই মুক্তিযোদ্ধারা এ আস্তানা আক্রমণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
গরীব উল্লাহ এবং মো. শফি মুন্সী নামে দুজন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা এ অপারেশনে অংশ নেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল এগারোটায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁরা কাবুলিদের আস্তানায় দুটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করেন। সঙ্গে- সঙ্গে প্রচণ্ড শব্দে গ্রেনেড দুটি বিস্ফোরিত হয়। এতে আস্তানায় অবস্থানকারী সকলে আহত হয়। পরে পাকবাহিনী এসে এলাকার মানুষদের ওপর অত্যাচার চালায়। তারা কাবুলিদের আস্তানায় পাহারা বসায়। তবে শেষ পর্যন্ত কাবুলিরা ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যায়। কুখ্যাত জামসেদ খানও এলাকাছাড়া হয়। এ অপারেশনের ফলে বিভিন্ন মহল্লা ও পাড়ায় পাকবাহিনীর দোসরদের প্রভাব কমতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের মধ্যে সাহস সঞ্চারিত হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবলও বৃদ্ধি পায়। [সাখাওয়াত হোসেন মজনু]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড