বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোর্খা রাইফেলস্-এর সৈনিক পাতিরাম গুরুং
পাতিরাম গুরুং, মহাবীর চক্র (১৯৪৮-১৯৭১) ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোর্খা রাইফেলস্-এর একজন সৈনিক। তিনি ১৯৪৮ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর নেপালের লমজুং জেলার বরধন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ১৯৬৩ সালে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে নেপালে জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় পাতিরাম গুরুং সেনাবাহিনীর ৫/১ গোর্খা রাইফেলস্-এর রাইফেলম্যান পাতিরাম গুরুং চুয়াডাঙার উথলীতে একটি মেশিনগান গ্রুপের সঙ্গে যুদ্ধরত ছিলেন। ৩০শে নভেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাঁদের অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। তখন তরুণ সৈনিক পাতিরাম গুরুং একাই শত্রুসৈন্যদের দিকে ছুটে গিয়ে তাদের আক্রমণ করেন। আহত হওয়ার পরও গুরুং তাঁর আক্রমণ অব্যাহত রাখেন এবং হাতাহাতি যুদ্ধে লিপ্ত হন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে নিজের জীবনের প্রতি ভ্রূক্ষেপ না করে পাতিরাম গুরুং শত্রুর মেশিনগান ধ্বংস করে নিজেও গুরুতর আহত হন এবং শাহাদত বরণ করেন। এ আক্রমণে রাইফেলম্যান পাতিরাম গুরুং অভূতপূর্ব সাহস ও কর্তব্যনিষ্ঠার উজ্জ্বল নিদর্শন রেখে যান।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রাইফেলম্যান পাতিরাম গুরুংয়ের বীরত্ব ও সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার কর্তৃক তাঁকে ‘মহাবীর চক্র’ (মরণোত্তর) খেতাব প্রদান করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২৪শে মার্চ ২০১৩ শহীদ রাইফেলম্যান – পাতিরাম গুরুং-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড