পাথরঘাটা লঞ্চঘাট গণহত্যা (পাথরঘাটা, বরগুনা)
পাথরঘাটা লঞ্চঘাট গণহত্যা (পাথরঘাটা, বরগুনা) সংঘটিত হয় ১৫ই মে। এতে ১০ জন সাধারণ মানুষ হত্যার শিকার হন।
বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় পাথরঘাটা উপজেলাও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত হয়। হানাদার বাহিনী ১৫ই মে পাথরঘাটায় অনুপ্রবেশ করে চরদোয়ানি, কালমেঘা, কাকচিড়া, বাদুরতলাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে অপারেশন চালায়। পাথরঘাটায় স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রধান ব্যক্তি আহের উদ্দিন অত্র অঞ্চলে হত্যা, লুণ্ঠন ও ধ্বংসযজ্ঞ সাধনে পাকহানাদারদের সর্বপ্রকার সহযোগিতা করে।
পাকিস্তানি বাহিনী ১৫ই মে পাথরঘাটায় অনুপ্রবেশের দিন বিকেলে ডহরপুর, বাদুরতলা ও কোবালিয়া গ্রামে তাণ্ডবলীলা চালায় এবং সেখান থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১১ জনকে ধরে নিয়ে বিষখালী নদীর পাড়ে লঞ্চঘাটে আসে। এরপর তারা নদীর পাড়ে এই ১০ জনকে দাঁড় করিয়ে গুলি করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। এ-সময় গণেশ সাহা নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বেঁচে যান। লঞ্চঘাট গণহত্যায় পিতা-পুত্র এবং দুই সহোদরসহ নিহতরা হলেন- পাথরঘাটা পৌরসভার লক্ষ্মণ দাস (পিতা জানুকি দাস), অরুণ দাস (পিতা লক্ষ্মণ দাস), দিলীপ কুমার সাহা (পিতা মহাদেব সাহা), চিত্ররঞ্জন মাস্টার (পিতা কৃষ্ণকান্ত হালদার), ডহরপুরের যাদব চন্দ্র গাইন (পিতা পূর্ণচন্দ্র গাইন), কেশব গাইন (পিতা পূর্ণচন্দ্র গাইন), বিশ্বেশ্বর শিকদার (পিতা কালু শিকদার), রাম গাইন, প্রহ্লাদ মিস্ত্রী ও দেবনাথ বেপারী (পিতা নন্দন কুমার বেপারী, হাড়িটানা)। গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে প্রতিবছর এখানে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়নি। [মো. মাসুদুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড