পাথরাইল-নলশোদা গণহত্যা (দেলদুয়ার, টাঙ্গাইল)
পাথরাইল-নলশোদা গণহত্যা (দেলদুয়ার, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় ৩০শে জুলাই। এতে দুগ্রামের ৭ জন সাধারণ মানুষ হত্যার শিকার হন। গ্রামদুটির বাড়িঘর লুটপাট শেষে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
টাঙ্গাইল জেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং দেলদুয়ার উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার উত্তরে দেলদুয়ার উপজেলার অন্তর্গত পাথরাইল ও নলশোদা গ্রাম। গ্রামদুটি হিন্দু অধ্যুষিত এবং পাশাপাশি। জুলাই মাসের শেষদিকে পাকবাহিনী বীরপুশিয়া গ্রামের কুখ্যাত রাজাকার আনছার আলীকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামদুটি রেকি করে যায়। এতে ভয়ে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ পালিয়ে যায়। ঐ রাজাকার তার সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে পাথরাইল বাজারের ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করত। বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জগন্নাথ বসাক (পাথরাইল ইউনিয়ন কাউন্সিলের মেম্বার) এর প্রতিবাদ করায় তিনি ঐ রাজাকারের বিশেষ টার্গেটে পরিণত হন। ৩০শে জুলাই রাজাকার আনছার আলীকে সঙ্গে নিয়ে পাকবাহিনী গ্রামদুটিতে এসে গণহত্যা চালায়। এদিন ভোর ৫টার দিকে করটিয়া সা’দত কলেজ ক্যাম্পাসে স্থাপিত হানাদার ক্যাম্প থেকে পাকবাহিনীর ৪০ জনের একটি গ্রুপ প্রথমে বীরপুশিয়া গ্রামে আসে। সেখান থেকে তারা দুভাগে বিভক্ত হয়ে একটি গ্রুপ পাথরাইল বাজার লুটপাট শেষে বাজারটি পুড়িয়ে দেয়। এরপর তারা পাথরাইল গ্রামে প্রবেশ করে। হানাদারদের অপর গ্রুপটি নলশোদা গ্রামে প্রবেশ করে। দুটি গ্রামের ৭ জন মানুষকে হত্যা শেষে বাড়িঘর লুটপাট করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। সেদিন পাকবাহিনী কর্তৃক গণহত্যায় শহীদ হন— জগন্নাথ বসাক (পিতা জানকীনাথ বসাক, পাথরাইল), ভোলানাথ বসাক (পিতা যদুনাথ বসাক, পাথরাইল), বিশ্বনাথ বসাক বিশা (পিতা সর্বমঙ্গল বসাক, পাথরাইল), দুলাল বসাক (পিতা বিশ্বনাথ বসাক, নলশোদা), বিশ্বনাথ বসাক (নলশোদা), অমিত কুমার বসাক (পিতা বিশ্বনাথ বসাক, নলশোদা) ও ঠাকুর দাস বসাক (নলশোদা)। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড