You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.18 | পাকুটিয়া গণহত্যা (ঘাটাইল, টাঙ্গাইল) - সংগ্রামের নোটবুক

পাকুটিয়া গণহত্যা (ঘাটাইল, টাঙ্গাইল)

পাকুটিয়া গণহত্যা (ঘাটাইল, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় ১৮ই এপ্রিল। এতে মোট ৮ জন মানুষ শহীদ হন।
ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার উত্তরে এবং মধুপুর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে পাকুটিয়ার অবস্থান। ঘাটাইল-মধুপুর রাস্তায় পাকুটিয়া বাসস্ট্যান্ডের পূর্বে রয়েছে সৎসঙ্গ আশ্রম এবং পশ্চিমে সাধারণ মানুষের বসতি। ১৮ই এপ্রিল পাকবাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকুটিয়া গ্রামে আক্রমণ চালায়। তারা পাকুটিয়া বাসস্ট্যান্ডে এসে দুভাগে বিভক্ত হয়ে একটি গ্রুপ রাস্তার পূর্বপাশে সৎসঙ্গ আশ্রমে এবং অপরটি রাস্তার পশ্চিম পাশে গ্রামের মধ্য প্রবেশ করে। আশ্রমের মন্দিরে প্রার্থনারত ঠাকুর প্যারীমোহন আদিত্য (পিতা মুকুন্দ চন্দ্ৰ আদিত্য) এবং ধর্ম প্রচারের জন্য আসা বামাচরণ পারশব শর্মাকে পাকসেনারা গুলি করে হত্যা করে। বামাচরণ পারশব শর্মা হানাদারদের ভয়ে আশ্রমের মন্দিরে স্থাপিত ঠাকুরের মূর্তির পাশে লুকিয়ে ছিলেন। হানাদাররা সেখানেই তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। আশ্রমের পূর্ব-দক্ষিণ পাশে প্যারীমোহন আদিত্য ও বামাচরণ পারশব শর্মার সৎকার করা হয়।
পাকুটিয়া অঞ্চলের আওয়ামী লীগ কর্মী হাশেম আলী খান (পিতা আমানত আলী খান)-কে হানাদাররা বাড়ি থেকে ধরে কালিহাতী ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এ সংবাদ শুনে তার ভাগ্নে আব্দুল খালেক খান তাকে ফিরিয়ে আনতে ক্যাম্পে যান। কিন্তু মামা ভাগ্নে কেউ ওখান থেকে আর ফিরে আসেননি। বিজয়ের দুদিন আগে পাকসেনারা ঢাকায় প্রত্যাবর্তনকালে পাকুটিয়ার নারায়ণ চন্দ্র পাল (পিতা কালাচাঁদ পাল) রঙ্গ রাণী পাল (স্বামী নারায়ণ চন্দ্র পাল)-এর বাড়িতে তাদের হত্যা করে। এছাড়াও পাকুটিয়া গ্রামের রহমান মৃধা এবং সন্ধানপুর ইউনিয়নের নলমা গ্রামের আনজু ব্রাহ্মণশাসন গেলে হানাদাররা সেখানে রাস্তার ওপরই তাদের দুজনকে হত্যা করে ফেলে রেখে যায় এবং সেখানেই লাশ পচে-গলে যায়। [শফিউদ্দিন তালুকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৫ম খণ্ড